পুঞ্চে পাকিস্তানি সেনার কাপুরুষোচিত আক্রমন নিরস্ত্র মানুষদের উপর গোলাবর্ষণে নিহত ১২, আহত একাধিক
পুঞ্চ, জম্মু ও কাশ্মীর, ৭ মে ২০২৫: জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে। এই হামলায় অন্তত ১২ জন নিরীহ বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং একাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানি সেনা ৬ ও ৭ মে রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) ও আন্তর্জাতিক সীমান্তের ওপার থেকে এলোপাথাড়ি গোলাবর্ষণ শুরু করে, যার ফলে বহু বাড়িঘর, দোকানপাট এবং একটি গুরুদুয়ারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পাকিস্তানের এই হামলার পর পুঞ্চ, কুপওয়ারা, বারামুল্লা, রাজৌরি এবং কৃষ্ণা ঘাটি সেক্টরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। শিরোমণি আকালি দলের প্রধান সুখবীর সিং বাদল জানিয়েছেন, পাকিস্তানি গোলাবর্ষণে একটি গুরুদুয়ারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তিনজন শিখ নিহত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা ভয়ে ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন। ভারতীয় সুরক্ষা বাহিনীও পাল্টা জবাব দিয়েছে এবং সীমান্তে উত্তেজনা চরমে উঠেছে।
এই ঘটনার পটভূমিতে ভারতের 'অপারেশন সিন্দুর' উল্লেখযোগ্য। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী সম্প্রতি পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে জইশ-ই-মোহাম্মদ, লস্কর-ই-তৈবা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের নয়টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে নির্ভুল হামলা চালিয়েছে। এই অভিযান পাহালগামে ৫-৬ মে সংঘটিত এক সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে পরিচালিত হয়, যেখানে ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এই অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সামাজিক যোগাশ্রয় মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, পুঞ্চে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বাড়িঘর, আগুনে পুড়ছে যানবাহন এবং ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে এলাকা। একজন ব্যবহারকারী শিল্পা সাহু তার এক্স পোস্টে লিখেছেন, "এটা যুদ্ধ নয়, এটা কাপুরুষতা। পাকিস্তানি সেনা নিরীহ নারী ও শিশুদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। আমাদের ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়ানোর সময় এসেছে।"
এদিকে, জম্মু, সাম্বা, কাঠুয়া, রাজৌরি এবং পুঞ্চ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয় ৭ মে'র সব পরীক্ষা স্থগিত করেছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা দীর্ঘদিনের, তবে সাম্প্রতিক পাহালগাম হামলা এবং তার পরবর্তী ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ১৯৪৭ সাল থেকে কাশ্মীর নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত চলে আসছে, এবং এই ঘটনা সেই দ্বন্দ্বের নতুন অধ্যায় যোগ করেছে।