" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory মৃণাল সেন: হৃদয়ের গভীরে এক দ্রোহের প্রতিধ্বনি জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য: আজও প্রাসঙ্গিক, আজও বিপ্লবী //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

মৃণাল সেন: হৃদয়ের গভীরে এক দ্রোহের প্রতিধ্বনি জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য: আজও প্রাসঙ্গিক, আজও বিপ্লবী

 

জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য: মৃণাল সেন আজও প্রাসঙ্গিক, আজও বিপ্লবী




দুর্গাপুর, ১৪ই মে, ২০২৫: আজ, ১৪ই মে, কিংবদন্তী চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃণাল সেনের ১০২তম জন্মদিন। যদিও তিনি আজ আমাদের মাঝে শারীরিকভাবে উপস্থিত নেই, তাঁর সৃষ্টি, তাঁর ভাবনা, আজও ভারতীয় সিনেমার আকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো বিদ্যমান। মৃণাল সেন শুধু একজন পরিচালক ছিলেন না, তিনি ছিলেন সমাজের বিবেক, যাঁর ক্যামেরা সমাজের গভীরে প্রোথিত অন্যায় ও বৈষম্যকে তুলে ধরতে কখনও দ্বিধা করেনি।

ফরিদপুরে জন্ম নেওয়া এই স্বপ্নদ্রষ্টা ষাটের দশক থেকে শুরু করে দীর্ঘকাল ধরে বাংলা এবং ভারতীয় চলচ্চিত্রে এক স্বতন্ত্র ধারা তৈরি করেছিলেন। তথাকথিত বাণিজ্যিক সাফল্যের পেছনে না ছুটে, তিনি বেছে নিয়েছিলেন সাধারণ মানুষের জীবন, তাদের দৈনন্দিন সংগ্রাম, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সমাজের অসংগতিকে সেলুলয়েডের ফিতায় জীবন্ত করে তোলার কঠিন পথ। তাঁর পরিচালিত ‘ভুবন সোম’ (১৯৬৯) ভারতীয় সমান্তরাল সিনেমার এক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বহু নবীন নির্মাতাকে সামাজিক প্রেক্ষাপটভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণে উৎসাহিত করেছিল।



মৃণাল সেনের কাজের বৈশিষ্ট্য ছিল তাঁর নিরীক্ষাধর্মী দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি কাহিনি বলার গতানুগতিক রীতি ভেঙেছেন বারবার। ‘কলকাতা ৭১’, ‘পদাতিক’, ‘একদিন প্রতিদিন’, ‘আকালের সন্ধানে’, ‘খারিজ’-এর মতো ছবিগুলিতে তিনি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবন ও যন্ত্রণা অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে তুলে ধরেছেন। ‘খারিজ’ কান চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার এবং ‘আকালের সন্ধানে’ বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে রুপোর ভালুক জয় করে আন্তর্জাতিক মহলেও তাঁর প্রতিভার সাক্ষ্য বহন করে।

আজকের দিনে, যখন সমাজ বিভিন্ন ধরনের অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, মৃণাল সেনের চলচ্চিত্রগুলি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। তাঁর ছবিতে দেখানো দারিদ্র্য, শোষণ, রাজনৈতিক দুর্নীতি এবং মানুষের বেঁচে থাকার অদম্য স্পৃহা আজও আমাদের চারপাশের বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। তিনি শিখিয়ে গেছেন, সিনেমা শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি সমাজ পরিবর্তনের শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে।



মৃণাল সেন ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তবে তাঁর রেখে যাওয়া কাজের বিশাল ভান্ডার আজও নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে। তাঁর চলচ্চিত্রগুলি বিভিন্ন ফিল্ম সোসাইটি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত প্রদর্শিত হয়, যেখানে দর্শক ও শিক্ষার্থীরা তাঁর কাজের গভীরতা ও তাৎপর্য উপলব্ধি করেন।

আজ তাঁর জন্মদিনে, আমরা সেই বিপ্লবী চলচ্চিত্র নির্মাতার প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। মৃণাল সেন তাঁর কাজের মাধ্যমে আজও আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন – একজন নির্ভীক শিল্পী হিসেবে, একজন সমাজ সচেতন মানুষ হিসেবে, যিনি সিনেমার পর্দায় গেঁথে দিয়ে গেছেন আমাদের সময়ের দলিল। তাঁর দেখানো পথ আগামী দিনেও চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সমাজ ও মানুষের কথা বলতে সাহস যোগাবে, এই আশা রাখি।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies