" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory "দ্য ক্লাস স্ট্রাগল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার": একটি অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ Welfare Under Capitalism: Class Conflict and Social Policy //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

"দ্য ক্লাস স্ট্রাগল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার": একটি অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ Welfare Under Capitalism: Class Conflict and Social Policy

 



ডেভিড ম্যাথিউসের "দ্য ক্লাস স্ট্রাগল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার: সোশ্যাল পলিসি আন্ডার ক্যাপিটালিজম" গ্রন্থটি কল্যাণ রাষ্ট্রের একটি অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ উপস্থাপন করে, যা মার্ক্সবাদী রাজনৈতিক অর্থনীতির কাঠামোর উপর ভিত্তি করে নির্মিত। প্রচলিত অর্থনৈতিক তত্ত্বের বিপরীতে, ম্যাথিউস দেখান যে কল্যাণ রাষ্ট্র নিছক জনকল্যাণমূলক ব্যবস্থা নয়, বরং পুঁজিবাদী অর্থনীতির অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব এবং শ্রেণী সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

১. পুঁজি সঞ্চয়ন ও শ্রমশক্তির পুনরুৎপাদন:

ম্যাথিউসের বিশ্লেষণের কেন্দ্রে রয়েছে পুঁজিবাদী অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি—পুঁজি সঞ্চয়ন। তিনি যুক্তি দেন যে কল্যাণ রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভূমিকা প্রাথমিকভাবে শ্রমশক্তির পুনরুৎপাদন নিশ্চিত করা। একটি সুস্থ, শিক্ষিত এবং সামাজিকভাবে স্থিতিশীল শ্রমশক্তি পুঁজিবাদের নিরবচ্ছিন্ন বিকাশের জন্য অপরিহার্য। সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষাখাতে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ প্রকারান্তরে ভবিষ্যতের শ্রমিক শ্রেণীকে তৈরি করে এবং তাদের উৎপাদনশীলতা বজায় রাখে।

তবে, ম্যাথিউস এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বান্দ্বিকতা তুলে ধরেন। এই বিনিয়োগ একদিকে যেমন পুঁজিবাদের স্বার্থে প্রয়োজন, তেমনি অন্যদিকে শ্রমিক শ্রেণীর দীর্ঘ সংগ্রামের ফলস্বরূপ অর্জিত হয়েছে। কল্যাণমূলক নীতিগুলো শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে এবং সামাজিক অস্থিরতা কমিয়ে আনে, যা শেষ পর্যন্ত পুঁজিবাদের স্থিতিশীলতায় সহায়ক হয়।

২. সামাজিক ব্যয় ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি:

প্রচলিত নব্য-উদারবাদী অর্থনীতি প্রায়শই সামাজিক ব্যয়কে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে বাধা হিসেবে দেখে। তাদের যুক্তি হলো, রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ বাজারকে বিকৃত করে এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগকে দমিয়ে রাখে। ম্যাথিউস এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেন। তিনি দেখান যে একটি সুগঠিত কল্যাণ রাষ্ট্র দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সহায়ক হতে পারে। উন্নত স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা একটি দক্ষ কর্মীবাহিনী তৈরি করে, যা উদ্ভাবন এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে। সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা অর্থনৈতিক মন্দার সময় চাহিদা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং সামগ্রিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করে।

তবে, ম্যাথিউস সতর্ক করেন যে পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় সামাজিক ব্যয়ের সীমা টানা হয় পুঁজির মুনাফার আকাঙ্ক্ষা দ্বারা। রাষ্ট্রীয় ব্যয় যদি পুঁজির সঞ্চয়নের হারকে হুমকির মুখে ফেলে, তবে কল্যাণমূলক নীতিগুলোতে কাটছাঁট করা হতে পারে। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বিভিন্ন উন্নত দেশে austerity policies-এর প্রয়োগ এর একটি উদাহরণ।

৩. শ্রেণী সংগ্রাম ও সম্পদ বিতরণ:

ম্যাথিউসের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো সম্পদ বিতরণের প্রশ্ন। পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে সম্পদ মূলত মুষ্টিমেয় পুঁজিপতির হাতে কেন্দ্রীভূত হয়, যা ব্যাপক inequality সৃষ্টি করে। কল্যাণ রাষ্ট্র কিছু পুনর্বন্টনমূলক ব্যবস্থার (যেমন—প্রগতিশীল কর ব্যবস্থা, সামাজিক ভাতা) মাধ্যমে এই বৈষম্য কিছুটা কমানোর চেষ্টা করে।

কিন্তু ম্যাথিউস মনে করেন, পুঁজিবাদী কাঠামোর মধ্যে এই পুনর্বন্টন সীমিত থাকে। রাষ্ট্রীয় নীতি প্রায়শই এমনভাবে প্রণয়ন করা হয় যাতে পুঁজিপতি শ্রেণীর মৌলিক স্বার্থ অক্ষুণ্ণ থাকে। শ্রেণী সংগ্রামই হলো সম্পদ বিতরণের ক্ষেত্রে সত্যিকারের পরিবর্তন আনার প্রধান চালিকাশক্তি। শ্রমিক শ্রেণীর সম্মিলিত আন্দোলন এবং রাজনৈতিক চাপই রাষ্ট্রকে আরও বেশি পুনর্বন্টনমূলক নীতি গ্রহণে বাধ্য করতে পারে।

৪. বাজারের ব্যর্থতা ও রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ:

ম্যাথিউস দেখান যে পুঁজিবাদী বাজার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যর্থ হতে বাধ্য (market failure)। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং আবাসন—এইসব অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বাজারের উপর ছেড়ে দিলে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ বঞ্চিত হতে পারে। কল্যাণ রাষ্ট্র এই ব্যর্থতাগুলো মোকাবিলা করার জন্য হস্তক্ষেপ করে এবং একটি ন্যূনতম স্তরের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে।

তবে, রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের ধরণ এবং পরিধি নির্ভর করে শ্রেণী শক্তির ভারসাম্যের উপর। পুঁজিপতি শ্রেণীর শক্তিশালী প্রভাব রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপকে সীমিত করতে পারে বা এমনভাবে পরিচালিত করতে পারে যাতে তাদের স্বার্থও রক্ষা হয়।

৫. ভবিষ্যতের জন্য অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি:

ম্যাথিউস একটি সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে কল্যাণ রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কল্পনা করেন। তিনি মনে করেন, মুনাফার পরিবর্তে জনগণের প্রয়োজনকে প্রাধান্য দেওয়া একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় কল্যাণ আর charity বা নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা থাকবে না, বরং তা সমাজের মৌলিক ভিত্তি হবে। পারস্পরিক সাহায্য এবং গোষ্ঠীভিত্তিক উদ্যোগ একটি বিকেন্দ্রীভূত এবং আরও গণতান্ত্রিক কল্যাণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে।

উপসংহার:

ডেভিড ম্যাথিউসের "দ্য ক্লাস স্ট্রাগল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার" কল্যাণ রাষ্ট্রের একটি গভীর অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ প্রদান করে, যা মার্ক্সবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব এবং শ্রেণী সংগ্রামের আলোকে সামাজিক নীতিকে বুঝতে সাহায্য করে। বইটি দেখায় যে কল্যাণ রাষ্ট্র নিছক অর্থনৈতিক নীতি নয়, বরং এটি একটি রাজনৈতিক এবং সামাজিক লড়াইয়ের ক্ষেত্র, যেখানে শ্রেণী স্বার্থ এবং ক্ষমতার সম্পর্ক অর্থনীতির গতিপথ নির্ধারণ করে। এটি প্রচলিত অর্থনৈতিক চিন্তাধারাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং একটি আরও ন্যায়সঙ্গত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies