নয়াদিল্লি, ভারত – পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক (MoEFCC) তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। একটি নতুন নীতি, যার নাম দেওয়া হয়েছে 'দূষণকারী লাভের নীতি', অনুযায়ী আদানি পাওয়ার এবং জিন্দাল পাওয়ারের মতো বড় বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি হাজার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারবে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে একটি বড় পশ্চাদপসরণ এবং এটি দূষণকে উৎসাহিত করবে, পরিচ্ছন্ন শক্তিকে নয়।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আদানি পাওয়ার এই নতুন কাঠামোর আওতায় আনুমানিক ₹১৬,০০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারবে, যেখানে জিন্দাল পাওয়ার ₹৪,৫০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে সক্ষম হবে। 'দূষণকারী লাভের নীতি'-র বিস্তারিত তথ্য এখনও সম্পূর্ণভাবে প্রকাশিত না হলেও, এই বড় শিল্প সংস্থাগুলির জন্য বিপুল আর্থিক সুবিধা পরিবেশ কর্মী, নীতি বিশেষজ্ঞ এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
মূল উদ্বেগটি হলো, এই নীতি পরিবেশগত মানকে শিথিল করতে পারে এবং দূষণকারীদের আর্থিক বোঝা কমাতে পারে, যা প্রকারান্তরে তাদের লাভ করার সুযোগ দেবে এবং পরিবেশগত ক্ষতির ব্যয় সমাজ ও বাস্তুতন্ত্রের উপর চাপিয়ে দেবে।
পরিবেশবাদী সংস্থাগুলি দ্রুত এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে যে এটি মৌলিক 'দূষণকারী পরিশোধ নীতি'কে (Polluter Pays Principle) ক্ষুণ্ণ করবে, যা বলে যে যারা দূষণ তৈরি করে, তাদেরই মানব স্বাস্থ্য বা পরিবেশের ক্ষতি রোধে তা পরিচালনার খরচ বহন করতে হবে।
মন্ত্রকের ঘনিষ্ঠ সূত্র, যারা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, তারা জানিয়েছেন যে এই নীতির উদ্দেশ্য হতে পারে শিল্প বৃদ্ধি এবং প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি করা, তবে তারা স্বীকার করেছেন যে বড় দূষণকারীদের প্রতি এই আপাত শিথিলতার কারণে জনরোষের সম্ভাবনা রয়েছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক বা আদানি পাওয়ার বা জিন্দাল পাওয়ারের কোনো প্রতিনিধি এখনও এই কথিত নীতি এবং প্রত্যাশিত সঞ্চয় সম্পর্কে কোনো সরকারি বিবৃতি বা স্পষ্টীকরণ জারি করেননি।
এমন এক সময়ে এই ঘটনা ঘটল যখন ভারত তার অনেক বড় শহরে তীব্র বায়ু দূষণের সঙ্গে লড়াই করছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে রয়েছে। 'দূষণকারী লাভের নীতি' দেশে পরিবেশগত শাসন এবং কর্পোরেট জবাবদিহিতা নিয়ে একটি উত্তপ্ত বিতর্কের জন্ম দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই নীতি এবং এর প্রভাব সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।