" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory রেওয়া বিমানবন্দরে দুর্নীতির ছায়া: ৫০০ কোটি টাকার প্রাচীর দ্বিতীয়বার ধসে পড়ায় জনমনে ক্ষোভ //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

রেওয়া বিমানবন্দরে দুর্নীতির ছায়া: ৫০০ কোটি টাকার প্রাচীর দ্বিতীয়বার ধসে পড়ায় জনমনে ক্ষোভ

 



রেওয়া, মধ্যপ্রদেশ: মধ্যপ্রদেশের রেওয়া বিমানবন্দরে একটি ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সীমানা প্রাচীর এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ধসে পড়েছে, যা কেবল একটি নির্মাণগত ত্রুটি নয়, বরং পরিকাঠামো প্রকল্পগুলিতে ব্যাপক দুর্নীতির একটি প্রকট চিত্র তুলে ধরেছে। এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই জনমনে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে এবং প্রশ্ন উঠেছে সরকারি প্রকল্পের অর্থ কিভাবে অপচয় হচ্ছে।

@IndianGems_ নামক একটি এক্স (পূর্বে টুইটার) পোস্টে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি প্রথম তুলে ধরা হয়, যেখানে স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, এই বারবার ধসে পড়ার পেছনে রয়েছে নির্মাণকাজের নিম্নমান এবং তদারকি প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতি। ৫০০ কোটি টাকার মতো বিশাল বিনিয়োগের পরেও যদি একটি কাঠামো বারবার ভেঙে পড়ে, তাহলে তা নির্মাণকাজে ব্যবহৃত উপকরণ, ঠিকাদারের যোগ্যতা এবং প্রকল্প পরিচালনায় স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তোলে।


ভারতের পরিকাঠামো খাতে দুর্নীতির গভীর শিকড়


রেওয়া বিমানবন্দরের এই ঘটনাটি ভারতের পরিকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘদিনের দুর্নীতির সমস্যাকে আবারও সামনে এনেছে। কেপিএমজি (KPMG) দ্বারা ২০১১ সালে পরিচালিত একটি বিশদ সমীক্ষা এই সমস্যার গভীরতা তুলে ধরেছিল। সেই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, ভারতের রিয়েল এস্টেট, টেলিযোগাযোগ এবং সরকারি-পরিচালিত সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পগুলি দুর্নীতির জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল খাত। উদ্বেগজনকভাবে, ওই সমীক্ষা অনুমান করেছিল যে, দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি কর্মকর্তারা দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (GDP) ১.২৬% পর্যন্ত অর্থ আত্মসাৎ করতে পারেন। রেওয়া বিমানবন্দরের ঘটনাটি এই ধরনের দুর্নীতির একটি দুঃখজনক উদাহরণ, যা প্রমাণ করে যে, জনগণের করের অর্থ কিভাবে কিছু অসৎ ব্যক্তির পকেট ভরতে ব্যবহৃত হচ্ছে।


দায়বদ্ধতা ও আইনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন


ভারত সরকার দুর্নীতির মোকাবিলায় বিভিন্ন আইন ও সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ২০১৩ সালের লোকপাল ও লোকায়ুক্ত আইন এবং ২০১১ সালের হুইসেল ব্লোয়ার সুরক্ষা আইন। এই আইনগুলির উদ্দেশ্য হল সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি দমন করা এবং যারা দুর্নীতির তথ্য ফাঁস করে, তাদের সুরক্ষা প্রদান করা। তবে, রেওয়া বিমানবন্দরের মতো ঘটনাগুলি এই আইনগুলির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করে। বিপুল অর্থ ব্যয়ের পরেও একটি প্রকল্পের প্রাথমিক কাঠামো যদি বারবার ব্যর্থ হয়, তাহলে এটি ইঙ্গিত দেয় যে, হয় দুর্নীতি দমনকারী সংস্থাগুলি তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে, অথবা বিদ্যমান আইনগুলিতে এমন ফাঁকফোকর রয়েছে যা অসাধু ব্যক্তিদের সুবিধা দিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হলে কেবলমাত্র আইন প্রণয়ন করাই যথেষ্ট নয়, বরং সেগুলির কঠোর প্রয়োগ এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। ঠিকাদার নির্বাচন থেকে শুরু করে নির্মাণকাজের প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা এবং কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। পাশাপাশি, দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচার এবং কঠোর শাস্তির বিধান নিশ্চিত করাও অপরিহার্য, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অপরাধ করার সাহস না পায়।

রেওয়া বিমানবন্দরের প্রাচীর ধসের ঘটনাটি একটি অ্যালার্ম বাজিয়ে দিয়েছে। এটি কেবল একটি স্থানীয় সমস্যা নয়, বরং এটি সমগ্র দেশের পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রক্রিয়ার দুর্বলতা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে। এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে জনগণের বিশ্বাস আরও ক্ষয়প্রাপ্ত হবে।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies