সিবিআই-এর অনুসন্ধান:
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে এক প্রশিক্ষণার্থী ডাক্তারের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সিবিআই-এর তদন্ত এখন এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। তদন্তে বেশ কিছু সন্দেহজনক প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা থেকে মনে করা হচ্ছে যে হাসপাতালের প্রাক্তন কর্মকর্তা ও পুলিশের পক্ষ থেকে প্রমাণ নষ্ট করা এবং বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। সিবিআই প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকা খতিয়ে দেখছে। তাদের বিরুদ্ধে অপরাধকে ছোট করে দেখানো, প্রমাণ নষ্ট করা এবং এফআইআর নথিভুক্ত করতে বিলম্ব করার অভিযোগ রয়েছে। ফরেনসিক বিশ্লেষণ, যার মধ্যে ডিএনএ পরীক্ষাও অন্তর্ভুক্ত, একজন আটক সিভিক ভলান্টিয়ারকে এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত করেছে। তবে, একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের বিষয়ে এখনও কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সিবিআই সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্রমাণ জব্দ করে বিশ্লেষণ করছে এবং কলেজের আর্থিক অনিয়ম নিয়েও তদন্ত করছে।1 সিবিআই-এর দাবি, প্রমাণ নষ্ট করা বা ধামাচাপা দেওয়ার পেছনে আরও কেউ জড়িত ছিল কিনা তা জানতে আরও তদন্ত প্রয়োজন।
মিডিয়ার অভিযোগ এবং পরিবারের দাবি:
এই মামলার সরকারি অনুসন্ধান এবং ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগের মধ্যে একটি বড়ো পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। ভুক্তভোগীর বাবা-মা সিবিআই-এর তদন্তকে অপর্যাপ্ত বলে অভিযোগ করেছেন এবং এখন দাবি করছেন যে সংস্থাটি মামলা থেকে সরে যেতে চাইছে। পরিবারের অভিযোগ, এই অপরাধে একাধিক ব্যক্তি জড়িত ছিল এবং তারা একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্র ও অপরাধের দৃশ্যকে ভুলভাবে পরিচালনা করার অভিযোগ তুলেছেন।2 এই অভিযোগগুলো সিবিআই-এর অবস্থানের সম্পূর্ণ বিপরীত। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদ এবং জনগণের তীব্র প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে এই বিষয়গুলোও ব্যাপকভাবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।3
সরকারি বিবৃতি:
সিবিআই সোশ্যাল মিডিয়ার ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে স্পষ্টীকরণ জারি করেছে এবং কিছু প্রচারিত নথি ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করেছে।
সুপ্রিম কোর্টের কার্যক্রম:
সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার ওপর নজর রাখছে। তারা সিবিআই-এর দেওয়া স্ট্যাটাস রিপোর্ট পর্যালোচনা করেছে এবং এর ফলাফলকে "গভীরভাবে বিরক্তিকর" বলে বর্ণনা করেছে, যদিও তদন্তের অখণ্ডতা বজায় রাখতে বিস্তারিত তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি।
সারসংক্ষেপ:
সিবিআই তদন্তে প্রক্রিয়াজনিত ত্রুটি এবং সম্ভাব্য প্রমাণ নষ্ট করার ঘটনা খুঁজে পেয়েছে, তবে তারা বলছে যে একজন প্রধান অভিযুক্তের বিরুদ্ধেই ফরেনসিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, ভুক্তভোগীর পরিবার এবং গণমাধ্যমের একটি বড়ো অংশ তদন্তের ব্যাপ্তি, সত্যতা এবং উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা অব্যাহত রেখেছে।
ঘটনার পরের দিন সকালে আর জি কর-এ কারা উপস্থিত ছিলেন?
আপনার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার পরের দিন সকালে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন:
ভুক্তভোগীর চারজন ডাক্তার সহকর্মী, যারা আগের রাতে তার সাথে ডিউটিতে ছিলেন। তারা একসঙ্গে রাতের খাবার খেয়েছিলেন এবং একটি অলিম্পিক ইভেন্ট দেখেছিলেন, তারপর তারা নিজেদের ডিউটি রুমে চলে যান। এদের মধ্যে দুজনের হাতের ছাপ সেমিনার রুমে পাওয়া গিয়েছিল।
একজন স্নাতকোত্তর প্রশিক্ষণার্থী ডাক্তার, যিনি সকাল ৭:৩০ থেকে ৯:৩০-এর মধ্যে লাশটি আবিষ্কার করেন এবং তার সহকর্মী ও সিনিয়র ডাক্তারদের খবর দেন।
হাসপাতালের কর্মী, যেমন নার্স এবং অন্যান্য ডাক্তাররা যারা সকালে হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন।
সিনিয়র ডাক্তার এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, যারা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন।
কলকাতা পুলিশ এবং ফরেনসিক দল, যারা প্রথমে ঘটনাস্থল সুরক্ষিত করতে উপস্থিত ছিল।
পরবর্তী সময়ে সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে আরও জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা, হাসপাতাল প্রশাসন এবং শেষ পর্যন্ত সিবিআই কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। তবে, ঘটনার ঠিক পরের মুহূর্তে, যেখানে অপরাধের দৃশ্য ছিল, সেখানে মূলত মূল হাসপাতাল কর্মী, তাৎক্ষণিক প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় পুলিশ ও ফরেনসিক দলের সদস্যরাই উপস্থিত ছিলেন। কারা ঘটনাস্থলে প্রবেশ করতে পেরেছিল, এই বিষয়টি পরবর্তীতে মিডিয়া রিপোর্ট এবং তদন্তের একটি প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে।