দুর্গাপুর, ১লা আগস্ট, ২০২৫: দুর্গাপুরের বুকে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে, যেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় শহর জুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং পুলিশে একটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছে।
সিপিআই(এম) দুর্গাপুর পূর্ব - ২ এরিয়া কমিটির দায়ের করা অভিযোগ অনুযায়ী, গতকাল, ৩১শে জুলাই, ২০২৫ তারিখে এই ঘটনাটি ঘটে। জেঁমুয়া গ্রামের একদল গ্রামবাসী, যাদের অধিকাংশই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য, তারা চাষের কাজের জন্য গামন ব্রিজ মোড় থেকে গরু কিনে নিজেদের গ্রাম হাট আশুরিয়ার দিকে ফিরছিলেন। তারা ডিপিএল কলোনি এলাকায় পৌঁছালে একদল দুষ্কৃতী তাদের পথ আটকায় এবং হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
সিপিআই(এম)-এর নথি অনুযায়ী, হামলাকারী দলের নেতৃত্বে ছিলেন পারিজাত গাঙ্গুলী, যিনি ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা (বিজেপি)-র সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ। আক্রান্তদের মারধর করা হয়, তাদের হাত বেঁধে ফেলা হয় এবং প্রকাশ্যে তাদের উপর অত্যাচার চালানো হয়। দুষ্কৃতীরা তাদের কেনা গরু এবং টাকা-পয়সা লুঠ করে বলেও অভিযোগ। ঘটনাটি দিনের আলোয় ঘটেছে বলে জানানো হয়েছে।
সিপিআই(এম) দুর্গাপুর পূর্ব - ২ এরিয়া কমিটির সম্পাদক এবং সিপিআই(এম) পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য সিদ্ধার্থ বোস জানিয়েছেন, এই পুরো ঘটনাটিকে দল "দুর্গাপুরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার একটি জঘন্য প্রচেষ্টা" হিসেবে দেখছে। তিনি গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলিতে ঘটে যাওয়া অনুরূপ ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন, যেখানে "বিজেপি-র সঙ্গে যুক্ত বাহুবলীরা রাজনৈতিক লাভের জন্য সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।"
সিপিআই(এম) প্রশাসনের কাছে হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করার এবং আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে, যাতে আক্রান্তরা ন্যায়বিচার পান এবং আইন-শৃঙ্খলা বজায় থাকে। বোস শহরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার উপর জোর দিয়েছেন এবং হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, দোষীদের গ্রেফতার না করা হলে শহর জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে।
যদিও তৃণমূল কংগ্রেসও এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বলে খবর, তবে পুলিশের কথিত নিষ্ক্রিয়তা এবং ব্যর্থতা নিয়ে তাদের নীরবতা নিয়ে কানাঘুষা চলছে।
আজ সিপিআই(এম) আক্রান্তদের নিয়ে নিউ টাউন থানায় এসে তাদের অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে নথিভুক্ত করেছে। তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং এই "বর্বর কাজের" বিরুদ্ধে শহরব্যাপী আন্দোলন শুরু করার অঙ্গীকার করেছে। এই ঘটনা দুর্গাপুরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং ভবিষ্যতের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, এবং দ্রুত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।