" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory জাকিয়া জাফরি আর নেই – কিন্তু তাঁর গল্প অসম্পূর্ণ ইহসান জাফরিকে ছাড়া //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

জাকিয়া জাফরি আর নেই – কিন্তু তাঁর গল্প অসম্পূর্ণ ইহসান জাফরিকে ছাড়া

 





জাকিয়া জাফরি, প্রয়াত কংগ্রেস সাংসদ ইহসান জাফরির স্ত্রী, প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যু এক দীর্ঘ সংগ্রামের সমাপ্তি হলেও তাঁর জীবন কাহিনী ইহসান জাফরি ছাড়া সম্পূর্ণ নয়। ইহসান শুধু একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না; তিনি ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী, লেখক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতীক।

ইহসান জাফরি কে ছিলেন?

ইহসান জাফরি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং লেখক, যিনি বরাবরই শোষিত-বঞ্চিতদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। আহমেদাবাদের আরসি হাই স্কুলে পড়াশোনা করার সময় থেকেই তিনি উর্দু ভাষায় একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করতেন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন। কমিউনিজম দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ১৯৪৯ সালে গ্রেপ্তার হন।

মুক্তি পাওয়ার পর তিনি প্রগ্রেসিভ এডিটর্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হন এবং একইসঙ্গে আইনজীবী হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন। আহমেদাবাদের গরিব ও নিপীড়িত মানুষের জন্য তিনি কাজ করে যান।



সংগ্রামী জীবন ও সংকল্প

১৯৬৯ সালে আহমেদাবাদে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলে জাফরির বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তিনি এবং তাঁর পরিবার একটি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেন। কিন্তু তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতি তাঁর বিশ্বাস ধরে রাখেন। তিনি তাঁর বাড়ি নতুন করে গড়ে তোলেন এবং গুলবার্গ সোসাইটি নামে একটি আবাসন প্রকল্প শুরু করেন।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রচারের জন্য তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৭২ সালে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন এবং আহমেদাবাদ শাখার সভাপতি হন। ১৯৭৭ সালে তিনি আহমেদাবাদ থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। এ সময় কংগ্রেস খুবই অপ্রিয় ছিল।

রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি উর্দু সাহিত্য এবং জনকল্যাণমূলক কাজে মনোনিবেশ করেন।



গুলবার্গ সোসাইটি হত্যাকাণ্ড – এক মর্মান্তিক পরিণতি

২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গায় ইহসান জাফরির জীবন নির্মমভাবে শেষ হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০০২ সালে গুলবার্গ সোসাইটিতে প্রায় ২০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু বিশাল এক উন্মত্ত জনতা তাদের ঘিরে ফেলে।

জাফরি বারবার পুলিশ এবং রাজনৈতিক নেতাদের ফোন করেন সাহায্যের জন্য। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তাঁর আর্তি উপেক্ষিত হয়। শেষ পর্যন্ত জনতা সোসাইটিতে প্রবেশ করে এবং জাফরিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

বিতর্ক ও ন্যায়ের অভাব

অনেক সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ সময়মতো পদক্ষেপ নেয়নি। তৎকালীন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সঞ্জীব ভাট দাবি করেছিলেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বারবার আক্রমণের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। মোদি দাবি করেন, তিনি ঘটনাটি সম্পর্কে সন্ধ্যার আগে কিছু জানতেন না।

২০১৬ সালে একটি বিশেষ আদালত রায় দেয় যে জাফরির গুলি চালানোই জনতাকে উত্তেজিত করেছিল। এই রায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। প্রবীণ সাংবাদিক কুলদীপ নায়ার মন্তব্য করেন, “জাফরির সাহায্যের জন্য আর্তি এখনও আমার কানে বাজে। এটি ন্যায়ের পরিহাস।”



ভুলে যাওয়া এক দেশপ্রেমিক

ইহসান জাফরি, যিনি ইন্দুলাল যজ্ঞিকের আদর্শের উত্তরসূরি, আজ প্রায় বিস্মৃত। এমনকি তাঁর নিজ সম্প্রদায়, বোহরা সম্প্রদায়, ২০০২ সালের ঘটনা থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে।

জাকিয়া জাফরির মৃত্যু এক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটালেও তাঁর সংগ্রাম নিশ্চিত করে যে ইহসান জাফরির গল্প এবং তাঁর আদর্শ আমাদের মনে চিরকাল বেঁচে থাকবে।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies