১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
নতুন দিল্লি: মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য বড় স্বস্তি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০২৫-২৬ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘোষণা করেছেন যে, নতুন কর ব্যবস্থায় বার্ষিক ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে কোনো আয়কর দিতে হবে না। এটি দেশের কর কাঠামোতে একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তন বলে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রধান পয়েন্ট:
- করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধি: নতুন কর ব্যবস্থায় করমুক্ত আয়ের সীমা ৭ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ লাখ টাকা করা হয়েছে।
- উচ্চ আয়ের জন্য মার্জিনাল রিলিফ: ১২ লাখ টাকার সামান্য বেশি আয়কারীর জন্য মার্জিনাল রিলিফ দেওয়া হবে, যাতে করের বোঝা খুব বেশি না বাড়ে।
- নতুন কর স্ল্যাব: উচ্চ আয়ের ক্ষেত্রে করের স্ল্যাব পুনর্গঠন করে আরও সাশ্রয়ী করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য:
অর্থমন্ত্রী বলেন, "এই সিদ্ধান্ত মধ্যবিত্তদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াবে এবং ভোগব্যয় বৃদ্ধি পাবে। এটি ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে এবং ২০৪৭ সালের 'বিকশিত ভারত' লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে।"
পরিবারের উপর প্রভাব:
- সঞ্চয়ে বৃদ্ধি: বার্ষিক ১২ লাখ টাকা আয়কারী একজন ব্যক্তি আগের তুলনায় প্রায় ₹৬০,০০০ সঞ্চয় করতে পারবেন।
- বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি: বাড়ি কেনা, গাড়ি এবং অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে ব্যয়ের প্রবণতা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শিল্প ও বিশেষজ্ঞদের প্রতিক্রিয়া:
- শিল্প মহল এই ঘোষণাকে "অতুলনীয়" বলে অভিহিত করেছে এবং মনে করছে এটি অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
- কর বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে এই পরিবর্তন আন্তর্জাতিক করব্যবস্থার সঙ্গে ভারতের কর কাঠামোকে আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ করবে।
সমালোচনা ও চ্যালেঞ্জ:
- রাজস্ব ঘাটতির শঙ্কা: অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, করমুক্ত সীমা বাড়ানোর ফলে সরকারের রাজস্ব ঘাটতির ঝুঁকি থাকতে পারে।
- আয়ের বৈষম্য: সমালোচকদের মতে, নিম্ন আয়ের গোষ্ঠীর জন্য এই সিদ্ধান্ত খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না।
বাজেটের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা:
- ডিজিটাল পরিকাঠামোর জন্য ₹১৫,০০০ কোটি বরাদ্দ।
- নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০% শক্তি নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য।
- স্টার্টআপ ও MSME-গুলির জন্য বিশেষ প্রণোদনা।
উপসংহার:
১২ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়কর ছাড়ের এই ঘোষণা মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এক বড় স্বস্তি। এটি দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এবং "মিশন বিকশিত ভারত ২০৪৭"-এর লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে, এই সিদ্ধান্তের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব মূল্যায়ন করা হবে আগামী দিনগুলোতে।
সংবাদসূত্র: পিটিআই, আনন্দবাজার, টাইমস অফ ইন্ডিয়া