পাকিস্তানের আকাশসীমায় বড় ধাক্কা: আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সের কার্যক্রম স্থগিত, অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে দেশটি
কলকাতা, ৬ মে ২০২৫: ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার জেরে পাকিস্তানের আকাশসীমায় বড় ধাক্কা লেগেছে। এয়ার ফ্রান্স, লুফথানসা, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, এতিহাদ এবং ওমান এয়ারের মতো শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সগুলো পাকিস্তানের আকাশসীমায় তাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে একটি সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যার মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই হামলার জন্য পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে দায়ী করেছে। এই ঘটনার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই এয়ারলাইন্সগুলো নিরাপত্তার কারণে পাকিস্তানের আকাশপথ এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পাকিস্তান সাধারণত আকাশসীমা ব্যবহারের জন্য বিমান সংস্থাগুলোর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ফি আদায় করে। জানা গেছে, প্রতিদিন প্রায় ৪০০টি ফ্লাইট পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করত, যা থেকে দেশটি দৈনিক প্রায় ৫০০,০০০ মার্কিন ডলার আয় করত। কিন্তু বর্তমানে এই সংখ্যা ২০-এর নিচে নেমে এসেছে, যা পাকিস্তানের জন্য একটি বড় অর্থনৈতিক ধাক্কা। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পরও একই ধরনের পরিস্থিতিতে পাকিস্তান প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র পাকিস্তানের আর্থিক ক্ষতিই নয়, বরং এটি দেশটির বৈশ্বিক ভাবমূর্তির উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ভারত থেকে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার উদ্দেশে যাওয়া ফ্লাইটগুলো এখন আরও দীর্ঘ পথে যাতায়াত করছে, যার ফলে জ্বালানি খরচ বাড়ছে এবং ফ্লাইটের সময়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পাকিস্তান অবশ্য এই হামলায় তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং একটি নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। তবে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সমর্থনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এদিকে, ভারত সরকার এই ঘটনার জন্য কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে, তারা এখনও কোনও সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত রয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে।