যুদ্ধ উন্মাদনা এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার বার্তা নিয়ে আজ বামপন্থী দলগুলির উদ্যোগে এক বিশাল শান্তি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি বিকেল ৪টায় ধর্মতলা লেনিন মূর্তি থেকে শুরু হয়ে শিয়ালদহের দিকে অগ্রসর হয়।
বামেদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই মিছিলের মূল উদ্দেশ্য হল সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দেওয়া এবং যে কোনও প্রকার সন্ত্রাস ও বিভাজন সৃষ্টিকারী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। মিছিলে বিভিন্ন বামপন্থী দলের কর্মী-সমর্থক এবং সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
মিছিলের শুরুতে বামপন্থী নেতৃত্ব বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যুদ্ধংদেহী মনোভাব এবং সন্ত্রাসবাদের উত্থানে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন, দেশের শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখার জন্য সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের একজোট হওয়া প্রয়োজন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের যে কোনও অপচেষ্টার বিরুদ্ধেও তাঁরা কঠোর বার্তা দেন।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন বহন করেন, যেখানে শান্তি, সম্প্রীতি ও ঐক্যের কথা লেখা ছিল। এছাড়াও, সন্ত্রাসবাদ এবং যুদ্ধবিরোধী স্লোগানও দেন তাঁরা। মিছিলের পথে সাধারণ মানুষেরও ব্যাপক সমর্থন দেখা যায়।
বামপন্থী দলগুলোর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বিশাল মিছিলটি প্রথম দিকে পাকিস্তান মদদপুষ্ঠ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এবং দেশের সম্প্রীতি বজায় রাখার বার্তা নিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। তবে, একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিকের ধারণ করা ভিডিও ঘিরে মুহূর্তেই ছন্দপতন ঘটে। ভিডিওতে এক মহিলা বিক্ষোভকারীকে পাকিস্তানের সমর্থনে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এই দৃশ্য প্রচারিত হওয়ার পরই মিছিলের মূল বার্তাটি প্রশ্নের মুখে পড়ে।
ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে সিপিআই(এম) দ্রুত ঐ বিতর্কিত বিক্ষোভকারীকে শনাক্ত করার জন্য তদন্ত শুরু করে। কারণ ঐ মহিলার বক্তব্য বামপন্থী দলগুলোর মূল অবস্থানের সম্পূর্ণ বিপরীত ছিল। কিন্তু তদন্তে যা উঠে আসে, তা আরও বিস্ময়কর।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ঐ মহিলা আসলে বামপন্থী দলের কর্মী নন। বরং তার রাজনৈতিক affiliation রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সাথে রয়েছে। এখানেই শেষ নয়, তিনি जिस টেলিভিশন চ্যানেলে ঐ বিতর্কিত মন্তব্য করছিলেন, সেই 'রাষ্ট্রীয় টিভি'র মালিকানাও তার নিজের।
এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরই বিভিন্ন মহলে ধিক্কারের ঝড় উঠেছে। সংবাদমাধ্যম এবং সাধারণ মানুষ, উভয়ই এই ঘটনায় বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। একটি বামপন্থী মিছিলে পাকিস্তানপন্থী স্লোগান এবং সেই স্লোগান প্রদানকারীর সাথে আরএসএস-এর যোগসাজশ – এই বিষয়টি রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।