" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory দুর্গাপুরের আকাশে জ্ঞানের পূর্ণিমা, শিল্পের অমৃতধারা: টেগোর কলেজের স্বপ্নযাত্রা, Tagore College: A Fusion of Knowledge and Creativity //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

দুর্গাপুরের আকাশে জ্ঞানের পূর্ণিমা, শিল্পের অমৃতধারা: টেগোর কলেজের স্বপ্নযাত্রা, Tagore College: A Fusion of Knowledge and Creativity

 




দুর্গাপুর, ৬ই মে, ২০২৫: দুর্গাপুরের শ্যামল প্রান্তরে, অজয় আর দামোদরের কলতান যেখানে মিশেছে, সেখানে গতকাল রচিত হলো এক নতুন ইতিহাস। টেগোর কলেজ অফ সায়েন্স অ্যান্ড কালচারের 'গীতীয় বিশ্বভারতী'র শুভ উদ্বোধন শুধু কয়েকটি ইটের গাঁথুনি বা কিছু শিক্ষকের সমাগম ছিল না; এ ছিল এক গভীর আবেগ, এক দীর্ঘ লালিত স্বপ্ন, যা অবশেষে আলোর মুখ দেখল। 'শিশু তীর্থ' চিলড্রেন্স আকাদমির মঞ্চ যেন সেদিন এক পবিত্র মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল, যেখানে বিজ্ঞান আর শিল্পের আত্মা একাকার হয়ে এক নতুন জ্ঞানলোকের সৃষ্টি করলো।



ভারতের বুকে দ্বিতীয় এবং সামাজিক উদ্যোগে প্রথম এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দুর্গাপুরের বুকে এক নতুন পরিচয় বহন করে আনলো। এতদিন ধরে এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা হয়তো দূর শহরের পানে চেয়ে থাকত উন্নত শিক্ষার আশায়। আজ, টেগোর কলেজের হাত ধরে সেই স্বপ্ন তাদের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছে। অনুষ্ঠানে যখন জনগানের সম্মিলিত সুর ধ্বনিত হলো, তখন মনে হলো যেন এই মাটি, এই আকাশ, এই বাতাস—সকলেই এই নতুন যাত্রাকে স্বাগত জানাচ্ছে। প্রতিটি পঙ্‌ক্তি যেন এক নতুন প্রতিজ্ঞা, এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি।



এই মহৎ উদ্যোগের পিছনে যাঁর অবদান অনস্বীকার্য, তিনি দুর্গাপুরের প্রাক্তন সাংসদ জীবন রায়। বর্ষীয়ান এই নেতা সেদিন শুধু একজন অতিথি ছিলেন না, ছিলেন এক স্নেহময় অভিভাবকের মতো। তাঁর প্রতিটি কথায় ঝরে পড়ছিল এই অঞ্চলের প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং এখানকার ছেলেমেয়েদের উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ার আন্তরিক আকাঙ্ক্ষা। যখন তিনি টেগোর কলেজের এই অভিনব সমন্বিত শিক্ষাপদ্ধতির প্রশংসা করছিলেন, তখন তাঁর চোখেমুখে চিকচিক করছিল এক আশার আলো। মনে হচ্ছিল, যেন তিনি তাঁর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ নিতে দেখছেন।



অনুষ্ঠানে যখন কলেজের প্রস্তাবিত পাঠ্যক্রমের বিস্তারিত আলোচনা করা হলো, তখন উপস্থিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চোখেমুখে দেখা গেল এক নতুন উদ্দীপনা। বিবিএ, বিসিএ, বিএসসি-র মতো প্রথাগত কোর্সের পাশাপাশি সঙ্গীত, নৃত্য, চিত্রকলা ও ভাস্কর্যের মতো বিষয়গুলির অন্তর্ভুক্তি যেন এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলো। এতদিন বিজ্ঞান আর কলা বিভাগকে আলাদা চোখে দেখা হতো, কিন্তু টেগোর কলেজ সেই বিভেদ ঘুচিয়ে এক নতুন শিক্ষাদর্শের জন্ম দিল—যেখানে জ্ঞান শুধু মস্তিষ্কের খোরাক নয়, হৃদয়েরও nourishment। তৃতীয় পর্যায়ে পর্যটন, কম্পিউটার গ্রাফিক্স, সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগের মতো কোর্সগুলি যেন সময়ের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার নিয়ে এলো।



এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য এক ঝাঁক নিবেদিতপ্রাণ মানুষ একত্রিত হয়েছেন—কলেজের পরিচালনা কমিটি। মি. কাজল দাস, জনাব এস.এন. জাজোদিয়া, জনাব সমর সেন এবং আরও অনেকে—প্রত্যেকের নামের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে শিক্ষা ও সমাজের প্রতি গভীর দায়বদ্ধতা। মিসেস শুভময়ী চ্যাটার্জির মতো অভিজ্ঞ সেক্রেটারি এবং মিঃ জীবন রায়ের মতো দূরদর্শী প্রতিষ্ঠাতা—এই সম্মিলিত প্রয়াস যেন এক শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করলো, যার উপর টেগোর কলেজের ভবিষ্যৎ মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।




বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সংস্কৃতি কর্মীদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানটিকে আরও গৌরবময় করে তুলেছিল। তাঁদের মূল্যবান বক্তব্য এবং শিল্পীদের হৃদয়স্পর্শী পরিবেশনা যেন সকলের মনকে এক গভীর আনন্দে ভরিয়ে দিয়েছিল। সংগীতের মূর্ছনা আর নৃত্যের ছন্দ যেন সেই আবেগকে আরও তীব্র করে তুলছিল, যা প্রতিটি দর্শকের অন্তরে প্রবাহিত হচ্ছিল। আগত অতিথিরা যখন টেগোর কলেজের এই ব্যতিক্রমী শিক্ষাদর্শনের প্রশংসা করছিলেন, তখন মনে হচ্ছিল যেন দুর্গাপুরের বুকে এক নতুন যুগের সূচনা হলো।





প্রাক্তন সাংসদ জীবন রায়ের আশীর্বাদ এবং টেগোর কলেজের এই জ্ঞান ও শিল্পমুখী পদক্ষেপ দুর্গাপুরের শিক্ষা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে এক নতুন বিপ্লব ঘটাবে। এই কলেজ শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি আন্দোলন—একটি নতুন সমাজ গড়ার অঙ্গীকার, যেখানে প্রতিটি শিক্ষার্থী তাদের নিজস্ব প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাবে এবং জ্ঞান ও শিল্পের আলোয় আলোকিত হবে তাদের জীবন। দুর্গাপুরের আকাশে আজ যে পূর্ণিমা উঠেছে, তা শুধু জ্ঞানের আলো নয়, শিল্পের অমৃতধারায় স্নাত এক নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies