৫ জুন, ২০২৫, পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরের ABL টাউনশিপ অঞ্চলে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপিত হয়েছে এক উৎসাহপূর্ণ ও সচেতনতামূলক আয়োজনের মাধ্যমে। এই উদযাপনের মূল উদ্যোক্তা ছিল পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ এবং আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বোস বিজ্ঞান কেন্দ্র। এই আয়োজনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় সংগঠন "আসার" এবং দুর্গাপুর সাব ডিভিশন স্পোর্টস এন্ড কালচারাল ক্লাবস সোসাইটি। এ বছরের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল *প্লাস্টিক দূষণের অবসান*, যা বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছে।
এই বিষয়কে সামনে রেখে, স্থানীয় স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এই দিবসকে কেন্দ্র করে একটি বিশেষ পোস্টার প্রদর্শনীর আয়োজন করে। তারা তাদের সৃজনশীলতার মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে রঙিন ও তথ্যবহুল পোস্টার তৈরি করে। এই পোস্টারগুলোতে প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিবেশগত ক্ষতি, সমুদ্র জীববৈচিত্র্যের উপর এর প্রভাব এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য বিকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। ছাত্রছাত্রীদের এই প্রচেষ্টা উপস্থিত সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং পরিবেশ সংরক্ষণে নতুন প্রজন্মের সচেতনতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মাননীয় শ্রী কবি ঘোষ এবং সম্পাদক শ্রী দেবব্রত চৌধুরী। শ্রী কবি ঘোষ তাঁর বক্তব্যে প্লাস্টিক দূষণের বৈশ্বিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “প্লাস্টিক আমাদের পরিবেশের জন্য একটি মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি কেবল মাটি ও জলাশয়কে দূষিত করছে না, বরং জীববৈচিত্র্যের উপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হলো একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো এবং পরিবেশবান্ধব বিকল্প গ্রহণ করা।”
অন্যদিকে, শ্রী দেবব্রত চৌধুরী তাঁর বক্তৃতায় স্থানীয় সম্প্রদায়ের ভূমিকার উপর জোর দেন। তিনি বলেন, “পরিবেশ রক্ষায় ছোট ছোট পদক্ষেপও বড় পরিবর্তন আনতে পারে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে এবং পুনর্ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ পরিবেশ গড়ে তুলতে পারি।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, স্থানীয় সংগঠনগুলোর এই ধরনের উদ্যোগ সমাজে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা সকলেই এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং পরিবেশ সুরক্ষার জন্য নিজেদের দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ হন। আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, এই ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে, যাতে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
এই বিশ্ব পরিবেশ দিবসের আয়োজন শুধুমাত্র প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধিই নয়, বরং সম্প্রদায়ের ঐক্য এবং পরিবেশ রক্ষায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে উঠেছে।