কেনিয়ায় সাংবাদিকের মৃত্যু: বাকস্বাধীনতার উপর আঘাত
নাইরোবি, কেনিয়া – সত্যের সন্ধানে নির্ভীক সাংবাদিক আলবার্ট ওজওয়াং-এর হেফাজতে মৃত্যু কেনিয়ার পুলিশের নৃশংসতা ও বাকস্বাধীনতার উপর ক্রমবর্ধমান আক্রমণের আরেকটি প্রমাণ। দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য পরিচিত এই ব্লগারকে গ্রেপ্তারের পর নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়, এবং শেষ পর্যন্ত তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এই ঘটনা কেনিয়ার জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ জাগিয়েছে, যারা রাস্তায় নেমে ন্যায়বিচার ও স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারের দাবিতে প্রতিবাদ করছে।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ দাবি করে যে ওজওয়াং নিজের মাথা সেলের দেয়ালে আঘাত করে মারা গেছেন। এই বানোয়াট ব্যাখ্যা জনগণের ক্রোধকে আরও উসকে দেয়। রাষ্ট্রপতি উইলিয়াম রুটো এই দাবিকে মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করলেও, সরকার এখনও দাগি পুলিশ কর্মকর্তাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং ওজওয়াং-এর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে। পুলিশের প্রধান পরিদর্শক একটি সর্বজনীন ক্ষমা প্রকাশ করেছেন, কিন্তু এই ক্ষমা জনগণের ক্ষোভ শান্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এই ঘটনা কেবল কেনিয়ার পুলিশের নির্মমতা এবং দায়মুক্তির সংস্কৃতিকেই উন্মোচিত করে না, বরং বিশ্বব্যাপী বাকস্বাধীনতার উপর ক্রমবর্ধমান হুমকির একটি অংশ। আফ্রিকা থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে, সত্য বলার জন্য সাংবাদিক ও সক্রিয় কর্মীদের উপর নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। তবুও, কেনিয়ার জনগণ নীরব নয়; তারা রাস্তায় নেমে তাদের কণ্ঠ তুলেছে, যা বাকস্বাধীনতার জন্য একটি শক্তিশালী লড়াইয়ের প্রতীক।
মানবাধিকার সংগঠন এবং বিরোধী নেতারা ওজওয়াং-এর মৃত্যুর স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। এই ঘটনা কেনিয়ার সরকারের জন্য একটি গুরুতর পরীক্ষা, যারা পুলিশ সংস্কার ও জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারে ব্যর্থ হলে আরও বৃহত্তর অস্থিরতার মুখোমুখি হতে পারে। গোটা বিশ্ব থেকেই আলবার্ট ওজওয়াং-এর সংগ্রামের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে এবং বাকস্বাধীনতার জন্য বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ের আহবান জানান হয়েছে।