" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory আলিপুর চিড়িয়াখানার আর্থিক সংকট ও 'নিখোঁজ' প্রাণী: প্রশ্ন উঠছে স্বচ্ছতা নিয়ে Kolkata's Alipore Zoo Under Scrutiny: "Missing" Animals and Financial Irregularities Raise Alarm //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

আলিপুর চিড়িয়াখানার আর্থিক সংকট ও 'নিখোঁজ' প্রাণী: প্রশ্ন উঠছে স্বচ্ছতা নিয়ে Kolkata's Alipore Zoo Under Scrutiny: "Missing" Animals and Financial Irregularities Raise Alarm

 



কলকাতা, ২২ জুলাই, ২০২৫ – কলকাতার বিখ্যাত আলিপুর জুলজিক্যাল গার্ডেন (আলিপুর চিড়িয়াখানা) বর্তমানে আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং প্রাণীর সংখ্যা নিয়ে গুরুতর অসঙ্গতির অভিযোগের মুখোমুখি। সম্প্রতি শত শত প্রাণী 'নিখোঁজ' হওয়ার অভিযোগ এবং আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় রাজ্য বন দফতর একটি আনুষ্ঠানিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

আলিপুর চিড়িয়াখানার বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন, যার মধ্যে ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরের সর্বশেষ তথ্যও রয়েছে, সাধারণত টিকিট বিক্রি, প্রাণী দত্তক প্রকল্প, দোকানের ভাড়া এবং সরকারি অনুদান থেকে আয়ের বিস্তারিত বিবরণ দেয়। খরচের দিক থেকেও কর্মী বেতন, রক্ষণাবেক্ষণ, বিদ্যুৎ বিল এবং উন্নয়নমূলক কাজের একটি চিত্র থাকে। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী এই তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।


'নিখোঁজ' প্রাণীর বিতর্ক


সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয়টি হলো ২০২৩-২৪ এবং ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের মধ্যে চিড়িয়াখানার প্রাণীর সংখ্যায় একটি বড় ধরনের অমিল। স্থানীয় এনজিও 'স্বজন' অভিযোগ করেছে যে, রাতারাতি ৩০০-র বেশি প্রাণী 'উধাও' হয়ে গেছে। যদিও চিড়িয়াখানার অধিকর্তা এটিকে 'গণনার ভুল' বলে আখ্যায়িত করেছেন, তবে এনজিও এবং বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা এই বিশাল অমিলকে উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন, যা সম্ভাব্য অব্যবস্থাপনা বা এমনকি অবৈধ বন্যপ্রাণী ব্যবসার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলিপুর চিড়িয়াখানায় প্রাণীর সংখ্যায় অসঙ্গতি প্রায় ৩০ বছর ধরে চলে আসছে, এবং কিছু বছরের জন্য তো কোনো তথ্যই নেই। এই দীর্ঘদিনের জবাবদিহিতার অভাব চিড়িয়াখানার কার্যকারিতার স্বচ্ছতাকে সরাসরি প্রভাবিত করে এবং প্রাণীদের যত্ন ও সংরক্ষণের সাথে যুক্ত আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করে।


আর্থিক ব্যবস্থাপনার উপর প্রশ্নচিহ্ন


প্রাণীর সংখ্যার এই বিপর্যয় চিড়িয়াখানার সামগ্রিক আর্থিক স্বাস্থ্য এবং শাসনের বিস্তৃত উদ্বেগের সাথে যুক্ত। চিড়িয়াখানার জমিতে রাজ্য সরকারের বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য নিলামের বিতর্কিত প্রচেষ্টা, যা চিড়িয়াখানার গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধারণ করে, তা-ও প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বাধীনতার প্রশ্ন তুলেছে এবং এর বিরুদ্ধে আইনি চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ বন দফতর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাণীর সংখ্যার অমিল নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে, যা চিড়িয়াখানার আর্থিক ও কার্যনির্বাহী প্রতিবেদনের আরও ব্যাপক যাচাই-বাঁচাই করবে বলে আশা করা হচ্ছে।


প্রাণীর কল্যাণে আর্থিক ব্যবস্থাপনার প্রভাব: সরাসরি যোগসূত্র


একটি চিড়িয়াখানার আর্থিক ব্যবস্থাপনা সরাসরি তার প্রাণীর কল্যাণমূলক উদ্যোগের গুণগত মানকে প্রভাবিত করে। পর্যাপ্ত তহবিল প্রয়োজনীয় পশুচিকিৎসা পরিষেবা, প্রজাতির উপযোগী পুষ্টি এবং উপযুক্ত আবাসস্থল বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অব্যবস্থাপনা বা বাহ্যিক আর্থিক চাপের কারণে বাজেট কাটছাঁট হলে প্রাণীর কল্যাণে গুরুতর পরিণতি হতে পারে।

বাজেট কাটছাঁট পশুদের যত্ন এবং বাসস্থান সমৃদ্ধকরণে সরাসরি প্রভাব ফেলে:


  • পশুচিকিৎসা পরিষেবা: তহবিল কমার অর্থ হলো কম স্বাস্থ্য পরীক্ষা, চিকিৎসায় বিলম্ব এবং প্রতিরোধমূলক ওষুধের সীমাবদ্ধতা, যা প্রাণীদের মধ্যে অসুস্থতা বৃদ্ধি বা অজ্ঞাত স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।


  • পুষ্টি: উচ্চ-মানের, প্রজাতির-উপযোগী খাবার কেনা অসম্ভব হয়ে পড়ে। চিড়িয়াখানা সস্তা খাবারের বিকল্প বেছে নিতে বাধ্য হতে পারে, যা প্রাণীর স্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু এবং প্রজনন ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।


  • কর্মী সংখ্যা: আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে প্রায়শই দক্ষ প্রাণী পরিচর্যাকারী, পশুচিকিৎসক এবং সহায়তা কর্মীদের ছাঁটাই বা কাজের সময় কমানো হয়। এর ফলে অবশিষ্ট কর্মীদের কাজের চাপ বাড়ে, যত্নের গুণমান কমে এবং তত্ত্বাবধানের ঝুঁকি বাড়ে।


  • আবাসস্থলের রক্ষণাবেক্ষণ: প্রাণীর বাসস্থানগুলির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ—যেমন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, মেরামত এবং পরিবেশগত উন্নতি—স্থগিত বা উপেক্ষা করা হতে পারে, যা প্রাণীদের জীবনযাত্রার মান হ্রাস করে এবং আঘাত বা রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।


  • সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি: মানসিক এবং আচরণগত উদ্দীপনার জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিগুলি আর্থিক সংকটের সময় প্রায়শই প্রথমে বাদ পড়ে। এর ফলে প্রাণীদের মধ্যে একঘেয়েমি, মানসিক চাপ এবং গতানুগতিক আচরণ (যেমন হাঁটাচলা, আত্ম-ক্ষতি) দেখা দিতে পারে।


  • আবাসস্থলের উন্নয়ন: পরিকল্পিত সংস্কার বা প্রাকৃতিক পরিবেশের আধুনিকীকরণ স্থবির হয়ে যেতে পারে, ফলে প্রাণীরা অপ্রচলিত বা কম উপযুক্ত খাঁচায় আটকা পড়ে যা আধুনিক কল্যাণ মান পূরণ করে না।

আলিপুর চিড়িয়াখানার তদন্ত যত এগোবে, ততটাই দেখা যাবে কীভাবে এই আর্থিক অসঙ্গতি এবং ব্যবস্থাপনাগত সমস্যাগুলি সমাধান করা হয়, বিশেষ করে চিড়িয়াখানার যত্নে থাকা প্রাণীদের কল্যাণের উপর তাদের সম্ভাব্য গভীর প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে। আনুষ্ঠানিক এবং বিস্তারিত আর্থিক প্রতিবেদনের জন্য, জনসাধারণ আলিপুর জুলজিক্যাল গার্ডেনের বার্ষিক প্রতিবেদন দেখতে পারেন, তবে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি উপস্থাপিত তথ্যের আরও যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies