নৈহাটি, ২৪শে জুলাই ২০২৫: দীর্ঘদিনের অভিযোগ এবং কলেজে চলতে থাকা অচলাবস্থার প্রতিবাদে আজ নৈহাটি রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (আর.বি.সি) কলেজের গেটে জোরদার বিক্ষোভ দেখাল এসএফআই (স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া)। কলেজের প্রিন্সিপাল প্রথমদিকে স্মারকলিপি গ্রহণে অনীহা দেখালেও, ছাত্রছাত্রীদের সম্মিলিত প্রতিবাদের মুখে অবশেষে তিনি ডেপুটেশন নিতে বাধ্য হন।
জানা গেছে, এসএফআই নেতৃত্ব কলেজের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে প্রিন্সিপালের সঙ্গে দেখা করতে গেলে প্রথমে তাদের বাধা দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রছাত্রীরা কলেজের সামনেই অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়েন এবং স্লোগান দিতে শুরু করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং ছাত্রদের চাপের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত প্রিন্সিপাল স্মারকলিপি গ্রহণ করতে বাধ্য হন। এসএফআই নেতৃত্ব এরপর ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে কলেজের ভেতরে প্রবেশ করে এবং তাদের অভিযোগগুলি প্রিন্সিপালের কাছে তুলে ধরেন। বাইরে তখনও এসএফআই সদস্যরা ঘেরাও চালিয়ে যায়।
এসএফআই-এর অভিযোগের তির সরাসরি কলেজের গভর্নিং বডির দিকে, যার প্রধান শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের (টিএমসিপি) একজন রাজ্য নেতা। এসএফআই-এর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, এই নেতার ছত্রছায়ায় কলেজে বছরের পর বছর ধরে একটি 'অপরাধ নেটওয়ার্ক' পরিচালিত হচ্ছে। তাদের অভিযোগ, কিছুদিন আগেই এক টোটো চালক খুন হন এবং সেই খুনের সঙ্গে জড়িত টিএমসিপি নেতা এখনও কলেজের স্টাফ হিসেবে কর্মরত।
এছাড়াও, এসএফআই অভিযোগ করেছে যে কলেজের ক্লাব ঘর জোরপূর্বক দখল করে টিএমসিপি অফিস চালানো হচ্ছে। কোটি কোটি টাকার বেআইনি টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছে তারা। অবৈধ ইউনিয়ন রুম, তোলাবাজি এবং কাটমানির আখড়া হিসেবে কলেজ চত্বর ব্যবহৃত হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের। এসএফআই-এর দাবি, কলেজের প্রিন্সিপাল কার্যত টিএমসিপি-র 'কর্মচারী' হিসেবে কাজ করছেন এবং এই সমস্ত অনিয়ম দেখেও নীরব রয়েছেন।
আজকের এই বিক্ষোভের পর প্রিন্সিপাল স্মারকলিপি গ্রহণ করায়, আগামী দিনে কলেজ কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগগুলির বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। এসএফআই জানিয়েছে, তাদের দাবিগুলি পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটতে তারা পিছপা হবে না।