দুর্গাপুর: এক বছর পেরিয়ে গেল, কিন্তু বিচার এখনও অধরা। গতকাল, তিলোত্তমার মৃত্যুর ৩৬৫ দিন পূর্ণ হলো। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুর্গাপুরেও এক গণআন্দোলন রূপ নিয়েছে। দুর্গাপুরের বিভিন্ন স্থানে তিলোত্তমার বিচারহীনতার প্রতিবাদে কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে সিপিআই(এম) দুর্গাপুর ইস্পাত এরিয়া ১ কমিটির উদ্যোগে একটি প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয় দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের কাছে। 'শোক নয়, দ্রোহ'—এই বার্তা নিয়ে তারা বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন।
প্রতিবাদ সভার শুরুতে তিলোত্তমার স্মৃতির প্রতি নীরবতা পালন করা হয়। সেখানে বহু সাধারণ মানুষ, ছাত্র-ছাত্রী এবং নতুন প্রজন্মের যুবকেরা উপস্থিত ছিলেন। লহরীর সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়, যা প্রতিবাদের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তোলে। এরপর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মীরা গান, কবিতা ও নাটকের মাধ্যমে তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শিল্পায়ন নাট্য গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে শুভেন্দু ব্যানার্জি একটি আবেগঘন একাঙ্ক নাটক উপস্থাপন করেন, যা উপস্থিত সকলের মনে গভীর দাগ কাটে।
সভায় প্রাক্তন বিধায়ক সন্তোষ দেব রায় এবং প্রাক্তন মহানাগরিক রথীন রায় উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা উভয়েই এই আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। সন্তোষ দেব রায় বলেন, "তিলোত্তমার বিচারের দাবি থামবে না। বাংলার মেয়ের বিচার চাইবে জনতা।" অন্যদিকে রথীন রায় বলেন, "তিলোত্তমার বিচার শুধু একার নয়। তিলোত্তমা থেকে তামান্না, এই তালিকায় আরও অনেক নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। রাজনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যমেই এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি মিলতে পারে।"
সিপিআই(এম) দুর্গাপুর ইস্পাত এরিয়া ১ সম্পাদক পূজন চক্রবর্তী বলেন, "যতদিন বিচার না মিলছে, ততদিন এই লড়াই থামবে না। রাজপথ দখল করেই আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরব।" তিনি আরও বলেন, "তিলোত্তমার জন্য রাজপথ ছাড়ি নাই, আগামীতেও ছাড়ব না।"
এই প্রতিবাদ সভার একটি বিশেষ দিক ছিল 'সিক্স ডাইমেনশন' শিল্পী সংগঠনের উদ্যোগ। তাঁরা ক্যানভাসে তুলির টানে প্রতিবাদের রূপ ফুটিয়ে তোলেন, যা এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলের মতে, দুর্গাপুরের অন্যান্য প্রতিবাদের মধ্যে এই সাংস্কৃতিক প্রতিবাদটি এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।