দুর্গাপুর: রক্তে লেখা সংগ্রামের ইতিহাসকে বুকে ধরে, শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দুর্গাপুরে অনুষ্ঠিত হলো সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির দশম সম্মেলন। ঐতিহ্যবাহী বি.টি.আর ভবনের মাটি আবারও সাক্ষী রইল এক নতুন লড়াইয়ের অঙ্গীকারের। এই সম্মেলন নিছক কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, ছিল অতীতের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার এক দৃঢ় শপথ।
শহীদ স্মরণে অঙ্গীকার:
সম্মেলনের শুরুতেই এক আবেগঘন পরিবেশে শহীদদের স্মরণ করা হয়। মহিলারা কেবল মাল্যদান করে থেমে থাকেননি, তাঁরা শহীদ কমরেডদের আত্মত্যাগ ও লড়াইয়ের ইতিহাসকে কুর্নিশ জানিয়ে শপথ নিলেন, তাঁদের দেখানো পথেই এগিয়ে চলবে নারী মুক্তি, গণতন্ত্র ও অধিকার রক্ষার সংগ্রাম। শহীদ স্মরণ এবং শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে এই বার্তা স্পষ্ট হয়ে উঠলো— যে কোনো অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোই হবে আজকের প্রধান অঙ্গীকার।
ঐতিহ্য আর সংকল্পের মেলবন্ধন:
সম্মেলনটি যেন একইসাথে শোক আর শক্তির এক বিরল মিশ্রণ ছিল। একদিকে যেমন শহীদদের স্মরণে মাথা নত করা হয়েছে, অন্যদিকে তেমনই ভবিষ্যতের লড়াইকে আরও জোরদার করার সংকল্প নেওয়া হয়েছে। এই সংকল্প শুধু দুর্গাপুর বা বাংলার নয়, বরং সারা দেশের গণতান্ত্রিক মহিলা আন্দোলনের এক প্রতিচ্ছবি। এই লড়াই শুধু অধিকার আদায়ের নয়, বরং এক ন্যায় ও সমতার সমাজ গঠনের লড়াই।
নতুন কমিটি, নতুন পথচলা:
সম্মেলনে সর্বসম্মতিক্রমে ৩১ সদস্যের একটি নতুন কমিটি গঠিত হয়। আগামী দিনের সংগ্রামের নেতৃত্ব দেবেন এই কমিটি। সম্পাদিকা পদে নির্বাচিত হয়েছেন সংগ্রামী নেত্রী শেফালী মন্ডল এবং সভাপতি পদে সোমা তরফদার। তাঁদের কাঁধে ভর করেই আগামী দিনে আরও শক্তিশালী হবে এই আন্দোলন।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর:
এই সম্মেলন প্রমাণ করে দিল, আজও অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস ও শক্তি এই নারী সমাজের আছে। নারী আন্দোলনের এই ঐতিহ্যমণ্ডিত পথচলা আবারও নতুন করে গতি পেল দুর্গাপুরের এই মাটি থেকে। BTR ভবনের প্রতিটি কোণে ধ্বনিত হলো ঐক্য ও সংগ্রামের সেই পুরনো সুর, যা আগামী দিনেও পথ দেখাবে।