" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory Steel Workers' Conference in Bokaro Addresses Privatization and Labor Challenges //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

Steel Workers' Conference in Bokaro Addresses Privatization and Labor Challenges

 


বোকারো স্টিল সিটি, ঝাড়খণ্ড — ঝাড়খণ্ডের শিল্পহৃদয় বোকারো স্টিল সিটি বর্তমানে ভারতের ইস্পাত শ্রমিকদের এক গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশের কেন্দ্রবিন্দু। ইস্পাত মজদুর মোর্চা (সিআইটিইউ)-এর ১৫তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলন শুরু হয়েছে, যেখানে দেশজুড়ে হাজার হাজার শ্রমিক, ইউনিয়ন নেতা এবং প্রতিনিধিরা একত্রিত হয়েছেন এমন একটি সময়ে, যাকে অনেকেই সরকারি ইস্পাত শিল্পের এবং এর শ্রমিকদের জন্য একটি সন্ধিক্ষণ বলে মনে করছেন।

কমরেড তপন সেনের উদ্বোধনী ভাষণ

কমরেড বাসুদেব আচার্য নগর এবং কমরেড সি.এস. তিওয়ারি মঞ্চে আয়োজিত তিন দিনের এই সম্মেলনটি এক কঠোর ও বাস্তবসম্মত আলোচনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী ভাষণ দেন কমরেড তপন সেন। তিনি বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ইস্পাত শিল্পের শ্রমিকদের সামনে থাকা মূল চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন। তাঁর ভাষণে সরকারি ক্ষেত্রগুলির বেসরকারীকরণ, শ্রমিকের চুক্তিকরণ (contractualization)-এর ক্রমবর্ধমান প্রবণতা, কর্মসংস্থানের অনিশ্চয়তা এবং দীর্ঘকাল ধরে আটকে থাকা মজুরি আলোচনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ পায়।



কমরেড বি.ডি. প্রসাদ খসড়া প্রতিবেদনটি পেশ করে এই চ্যালেঞ্জগুলো আরও বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, "আমাদের অস্তিত্বের মূল ভিত্তিই আজ টলমলে। কয়েক দশক ধরে ইস্পাত শ্রমিকরা এই জাতির শিল্প উন্নতির মেরুদণ্ড হয়ে কাজ করে আসছেন। কিন্তু আজ, আমাদের অধিকার ও নিরাপত্তা, যা আমরা এত কঠোর লড়াইয়ের মাধ্যমে অর্জন করেছি, সেগুলোকে পরিকল্পিতভাবে এমন সব নীতির মাধ্যমে দুর্বল করা হচ্ছে, যা শ্রমিকদের কল্যাণের চেয়ে কর্পোরেট মুনাফাকে বেশি গুরুত্ব দেয়।"

সম্মেলনের শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন ঝাড়খণ্ড সিআইটিইউ-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড বিশ্বজিৎ দে এবং এসডব্লিউএফআই-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড ললিত মোহন মিশ্র।

অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে পরিবর্তন

সম্মেলনে এই বিষয়গুলোর উপর জোর দেওয়া হয়, যা একটি বৃহত্তর জাতীয় প্রবণতাকে প্রতিফলিত করে। সরকারের কৌশলগত বিলগ্নীকরণ নীতি (strategic disinvestment) ইস্পাত ক্ষেত্রসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে বাজারের আওতায় নিয়ে এসেছে। এতে শ্রমিকদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, কারণ তারা আশঙ্কা করছেন যে বেসরকারীকরণ হলে ব্যাপক ছাঁটাই, সুযোগ-সুবিধা হ্রাস এবং দীর্ঘদিনের পেনশন ও অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার অবসান ঘটবে।



প্রতিনিধিরা এই আশঙ্কাগুলো তুলে ধরেছেন, এবং তারা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন কীভাবে চুক্তিভিত্তিক শ্রমের ওপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা কারখানার মধ্যে একটি দ্বি-স্তরীয় ব্যবস্থা তৈরি করেছে। স্থায়ী কর্মীরা যেখানে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা এবং চাকরি নিরাপত্তা ভোগ করেন, সেখানে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকরা প্রায়ই একই কঠোর কাজ করেন কম মজুরিতে এবং পেনশন, স্বাস্থ্যসেবা বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হন। এটি উভয় পক্ষের মধ্যে বিভেদ এবং একটি যৌথ দুর্বলতার অনুভূতি তৈরি করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওড়িশার এক ইস্পাত কারখানার প্রতিনিধি বলেন, "ম্যানেজমেন্ট খরচ কমানোর জন্য এই ব্যবস্থাটির অপব্যবহার করছে। তারা একটি স্থায়ী অনিশ্চয়তার পরিবেশ তৈরি করছে, এবং এই কৌশলটি পুরো শ্রমিক শ্রেণীকে দুর্বল করে দিচ্ছে।"

ঐতিহ্যকে সম্মান, ভবিষ্যৎকে গঠন

সম্মেলন মঞ্চের নামকরণ দুই শ্রমিক আন্দোলনের কিংবদন্তি কমরেড বাসুদেব আচার্য এবং কমরেড সি.এস. তিওয়ারির নামে করা হয়েছে। এটি কেবল একটি প্রতীকী সম্মান নয়, বরং অঞ্চলের শ্রমিক আন্দোলনের ঐতিহাসিক সংগ্রামগুলোর এক শক্তিশালী স্মারক। তাদের সংগ্রামী ইউনিয়নবাদ এবং শ্রমিক-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের ঐতিহ্য প্রতিনিধিদের জন্য একটি পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করছে, যারা ভবিষ্যতের পথ নির্ধারণ করতে চাইছেন।



আগামী দিনগুলোতে সম্মেলন মঞ্চে তীব্র বিতর্ক ও আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রতিনিধিরা দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করবেন, যা মজুরি ও পেনশন চুক্তি দ্রুত নিষ্পত্তির পাশাপাশি ইস্পাত শিল্পের বেসরকারীকরণ পুরোপুরি বন্ধ করার দাবি অন্তর্ভুক্ত করবে। এই প্রস্তাবগুলো একটি নতুন "দাবিপত্র"-এর ভিত্তি তৈরি করবে, যা ম্যানেজমেন্ট এবং সরকারের কাছে পেশ করা হবে।

সেন্টার অফ ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়নস (CITU) এবং এর অনুমোদিত ফেডারেশনগুলির শীর্ষ নেতারা এই আলোচনায় দিকনির্দেশনা দিতে এবং সমর্থন জোগাতে উপস্থিত রয়েছেন। তাদের উপস্থিতি কেবল ইস্পাত মজদুর মোর্চার জন্য নয়, বরং ভারতের বৃহত্তর শ্রমিক আন্দোলনের জন্যও এই সম্মেলনের গুরুত্বকে তুলে ধরে। অন্যান্য শিল্প, যেমন খনি ও ইঞ্জিনিয়ারিং, থেকেও প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে, যা এই সম্মেলনকে সাধারণ হুমকির বিরুদ্ধে শ্রমিক শ্রেণীর বৃহত্তর সংহতির মঞ্চে পরিণত করবে।

শ্রমিকদের কণ্ঠস্বর

মাঠ পর্যায়ের শ্রমিকদের জন্য, এই সম্মেলন আশার আলো নিয়ে এসেছে। অনেকেই তাদের অধিকারের উপর কর্পোরেট-চালিত আক্রমণ বলে যা মনে করেন, তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার সংকল্প প্রকাশ করেছেন।

বোকারো স্টিল প্ল্যান্টের একজন তরুণ শ্রমিক বলেন, "এটা শুধু আমাদের চাকরি নিয়ে নয়; এটা আমাদের জীবন এবং আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়েও।" তিনি আরও বলেন, "আমাদের দেখাতে হবে যে আমরা পিছু হটব না। আমাদের পূর্বসূরিরা আমাদের জন্য যা জিতে এনেছেন, তা রক্ষা করতে আমরা লড়াই করতে প্রস্তুত।"



ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের এই অনুভূতি প্রবল। অংশগ্রহণকারীরা বিশ্বাস করেন যে তাদের কঠোর-অর্জিত অধিকারগুলো রক্ষা করার একমাত্র পথ হলো ঐক্য। তারা আশা করেন যে গৃহীত প্রস্তাবগুলো কেবল বিবৃতি নয়, বরং আগামী মাসগুলোতে ব্যাপক আন্দোলন ও প্রতিরোধের একটি নীলনকশা হবে।

সম্মেলনটি একটি বিশাল জনসভার মাধ্যমে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে, যা কর্মক্ষেত্রে ন্যায়বিচার, সমতা এবং মর্যাদার জন্য শ্রমিকদের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সংকল্পের একটি প্রকাশ্য প্রদর্শন। ইস্পাত মজদুর মোর্চার জন্য, এই ইভেন্টটি কেবল একটি সভা নয়; এটি একটি ইচ্ছার ঘোষণা—সরকারি ক্ষেত্র এবং এর প্রতিটি শ্রমিকের অধিকার রক্ষার একটি প্রতিশ্রুতি।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies