সিঙ্গুর, হুগলি: বেঙ্গালুরু থেকে নার্সিংয়ের পড়াশোনা শেষ করে সম্প্রতি বাড়ি ফিরেছিলেন নন্দীগ্রামের বাসিন্দা দীপালি জানা। একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে কাজ শুরু করার মাত্র তিন দিনের মাথায় তাঁর রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে হুগলির সিঙ্গুর। পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগ, এটি আত্মহত্যা নয়, বরং এটি একটি পরিকল্পিত খুন। পরিবারের অনুমতি ছাড়াই তড়িঘড়ি দেহ সরিয়ে নেওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গতরাতে। সিঙ্গুরের শিবম সেবাসদন নার্সিংহোমে নাইট ডিউটিতে ছিলেন দীপালি। গভীর রাতে তাঁর বাবা সুকুমার জানার কাছে হাসপাতাল থেকে একটি ফোন যায়, জানানো হয় যে তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে আজ সকালে নার্সিংহোমে ছুটে আসেন পরিবারের লোকজন। কিন্তু তাঁরা এসে দেখেন, পুলিশের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই দীপালি জানার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে, পরিবারের কোনো অনুমতি ছাড়াই। দীর্ঘক্ষণ ধরে মেয়ের দেহের অবস্থান জানতে পারেননি তাঁরা। এমনকি একবারের জন্যও দেহ দেখতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পরিবারের। এই ঘটনায় প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছে পরিবার।
অন্যদিকে, এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান বামপন্থী সংগঠনের কর্মীরা। ডিওয়াইএফআই-এর জেলা সম্পাদক ও সভাপতি সহ একাধিক নেতৃত্ব উপস্থিত হন। এছাড়াও ছিলেন সিপিআই(এম)-এর রাজ্য কমিটির সদস্য কমরেড তীর্থঙ্কর রায়। তাঁরা অবিলম্বে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের দাবি জানান। এই ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও উঠেছে। বামপন্থী সংগঠনের কর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন এবং তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
এই ঘটনায় দ্বিতীয় কোনো 'অভয়া কাণ্ড'র পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সেই বিষয়ে সরব হয়েছেন বামপন্থী নেতৃবৃন্দ। তাঁরা বলছেন, যদি তদন্তে কোনো ধরনের গাফিলতি দেখা যায়, তবে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। ঘটনাটি আত্মহত্যা না খুন, এবং পুলিশের এই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ কেন, এই প্রশ্নগুলোই এখন সবার মুখে মুখে ঘুরছে।