ভারতের সরকারি স্কুলশিক্ষা ব্যবস্থার সংকট
২০১৪ সালের পর থেকে ভারতে সরকারি স্কুলের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে, আর বেসরকারি স্কুলের সংখ্যা বেড়েছে। এই ইন্টারেক্টিভ রিপোর্টের মাধ্যমে আমরা এই সংকটের গভীরতা, কারণ এবং সম্ভাব্য সমাধান অন্বেষণ করব।
উৎস: কেন্দ্রীয় সরকারের লোকসভায় প্রদত্ত তথ্য (২০১৪-১৫ থেকে ২০২৩-২৪)
জাতীয় চিত্র: এক দশকে কী বদলেছে?
-৮৯,৪৪১
বন্ধ হওয়া সরকারি স্কুল
(৮% হ্রাস)
+৪২,৯৪৪
নতুন বেসরকারি স্কুল
(১৪.৯% বৃদ্ধি)
১৪,০০০+
বিদ্যা ভারতীর স্কুল
(RSS-এর শিক্ষা শাখা)
এই পরিবর্তনের কারণ কী?
সরকারি স্কুল বন্ধ হওয়া এবং বেসরকারি খাতের প্রসার একটি জটিল বিষয়, যার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান কয়েকটি হলো:
-
✓
বেসরকারি স্কুলের প্রতি ঝোঁক: উন্নত পরিকাঠামো এবং ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষার ধারণার কারণে অনেক অভিভাবক বেসরকারি স্কুলকে বেছে নিচ্ছেন।
-
✓
নীতিগত সিদ্ধান্ত: সরকার কম ছাত্রযুক্ত স্কুলগুলিকে একত্রিত বা বন্ধ করে দিচ্ছে এবং শিক্ষাব্যবস্থায় বেসরকারীকরণকে উৎসাহিত করছে বলে অভিযোগ।
-
✓
নগরায়ন: গ্রাম থেকে শহরে মানুষের চলে আসার ফলে গ্রামীণ স্কুলগুলিতে ছাত্রসংখ্যা কমছে, যা সেগুলি বন্ধের অন্যতম কারণ।
রাজ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ
এই প্রবণতা সব রাজ্যে সমান নয়। নীচের বোতামে ক্লিক করে দেখুন কোন রাজ্যগুলিতে সরকারি স্কুল সবচেয়ে বেশি বন্ধ হয়েছে এবং কোথায় বেসরকারি স্কুলের বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি।
ফোকাস: পশ্চিমবঙ্গ
৬,৩৬৬
এক-শিক্ষক স্কুল
(১০০+ ছাত্রছাত্রী থাকা সত্ত্বেও)
১.১ লক্ষ
শিক্ষক পদ শূন্য
(UNESCO রিপোর্ট অনুযায়ী)
যদিও পশ্চিমবঙ্গে স্কুল বন্ধের নির্দিষ্ট সংখ্যা কেন্দ্রীয় রিপোর্টে উল্লেখ নেই, তবে বিপুল সংখ্যক এক-শিক্ষক স্কুল এবং শিক্ষক পদের শূন্যতা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার গুরুতর দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়।
অন্যান্য মূল সমস্যা
উত্তরণের পথ: দাবি ও সমাধান
এই সংকট মোকাবিলায়, স্কুল টিচার্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (STFI) সহ বিভিন্ন সংগঠন সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট দাবি জানিয়েছে। এগুলি বাস্তবায়িত হলে পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব।
বাজেট বৃদ্ধি
শিক্ষাক্ষেত্রে জিডিপি-র ৬% এবং জাতীয় বাজেটের ১০% বরাদ্দ করতে হবে।
স্বচ্ছ নিয়োগ
সমস্ত শূন্যপদ পূরণ এবং স্বচ্ছতার সাথে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।
মিড-ডে মিলের উন্নতি
অনিয়ম বন্ধ করে খাবারের মান ও কর্মীদের বেতন নিশ্চিত করতে হবে।
নীতি পর্যালোচনা
NEP 2020 বাতিল করে শিক্ষাবিদদের সাথে আলোচনা করে নতুন নীতি প্রণয়ন করতে হবে।
স্কুলছুট রোধ
ড্রপ-আউট শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে স্কুলে ফিরিয়ে আনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
সরকারি স্কুল রক্ষা
শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ করে সরকারি স্কুল ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে।