ডাবগ্রাম, জলপাইগুড়ি: উৎসবের আনন্দ ম্লান করে দিয়ে এক মর্মান্তিক ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে গেছে ডাবগ্রাম। দশমীর দিনে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার আনন্দ আর বাড়ি ফেরা হলো না আয়ুষি ছেত্রী-র। ডাবগ্রাম থেকে দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের বাড়ি সৌরেনি-তে বেড়াতে গিয়েছিল সে। কিন্তু প্রকৃতির রুদ্ররোষে সেদিনই ধসে চাপা পড়ে করুণ মৃত্যু হয় তার।
সৌরেনিতে সেদিন আচমকা ঘটে যাওয়া ধস শুধু আয়ুষির জীবনই কেড়ে নেয়নি, তাদের পুরো বাড়িটিই মাটির নিচে চলে যায়। উৎসবের আবহে এমন ভয়াবহ পরিণতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন আয়ুষির পরিবারের সদস্যরা। চা শ্রমিক রাজেন ছেত্রী-সহ পরিবারের বাকি সদস্যরা এখন নিরুপায় হয়ে ত্রান শিবিরে দিন কাটাচ্ছেন।
শোকাহত পরিবারের পাশে
আজ সিপিআই(এম)-এর পক্ষ থেকে সমন পাঠক এবং দিলীপ সিং-এর নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল ছুটে গিয়েছিল ডাবগ্রামে আয়ুষির শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে। প্রকৃতির এমন বিপর্যয়ে এই প্রান্তিক মানুষগুলোর অসহায়তা চোখে পড়ল। প্রতিনিধিরা জানান, এই মুহূর্তে এই পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো ছাড়া আর কিছুই করার নেই। পরিবেশের রোষানলে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন এই প্রান্তিক মানুষরাই—এটাই নির্মম বাস্তবতা।
আজ আয়ুষি নেই। তার স্মৃতিতে ভারী হয়ে আছে ডাবগ্রামের আকাশ। তবে সেই ভয়াল দিনটির মধ্যে একটি ক্ষীণ আশার আলো ছিল—কোনোরকমে মাটির নীচ থেকে উদ্ধার করা গিয়েছিল আয়ুষির ছোট বোনকে। যদিও সেই ট্র্যাজেডির ক্ষত তার শরীরে, চোখে এখনো রয়ে গেছে। প্রতিনিধি দলটি যখন সেখানে পৌঁছাল, তখন দেখা গেল আয়ুষির ছোট বোন তার বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করছে।
জীবন থেমে থাকে না। এক চরম শোকের মধ্যেও প্রকৃতির নিয়মে জীবনের চাকা ঠিকই গড়িয়ে চলে—ক্লান্ত, ক্ষতবিক্ষত মানুষগুলোও কোনো এক অচেনা শক্তিতে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। আয়ুষির ছোট্ট বোন হয়তো সেই কঠিন বাস্তবতারই প্রতিচ্ছবি।