বিশাখাপত্তনম, ১১ নভেম্বর, ২০২৫ — আসন্ন ১৮তম সর্বভারতীয় সম্মেলনের জন্য সেন্টার অফ ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন্স (সিটু) যে শক্তিশালী এবং মর্মস্পর্শী শিল্পকর্মটি প্রকাশ করেছে, তা সঙ্গে সঙ্গে এক আবেগপূর্ণ ও প্রতিবাদী সুর তৈরি করেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশটি ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশাখাপত্তনমে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।
সিটুর এই আনুষ্ঠানিক পোস্টারটি যেন শ্রমজীবী মানুষের কাছে এক স্পষ্ট, অনুরণনময় আহ্বান। এতে দেখা যাচ্ছে এক শক্তিশালী, রক্তলাল হাত—যা শ্রমিক শ্রেণির সম্মিলিত ক্ষমতাকে তুলে ধরে—তাতে ধরা রয়েছে প্রতীকী হাতুড়ি ও কাস্তে। গোটা চিত্রটি অশান্ত, গভীর-নীল ঢেউয়ের মাঝখান থেকে নাটকীয়ভাবে উঠে আসছে। এটি অর্থনৈতিক সঙ্কট, বেসরকারিকরণ এবং ক্রমাগত অবহেলার উত্তাল সমুদ্র থেকে শ্রমজীবীদের উঠে আসার এক শক্তিশালী দৃশ্যগত রূপক।
এটি কেবল একটি সম্মেলন নয়; এটিকে দেখা হচ্ছে এক প্রতিবাদী অবস্থান হিসেবে। বিপ্লবী শ্রমিক ঐক্যের প্রতীক হাতুড়ি ও কাস্তের চিত্রটি প্রতিকূলতার 'ঢেউ'-এর ওপর মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা, শ্রমিক মহলের বর্তমান মানসিকতা সম্পর্কে অনেক কিছু বলে দেয়। পটভূমিতে থাকা দুটি মরিচা পড়া গিয়ার—শিল্পের চাকা—এক বেদনাদায়ক স্মৃতিচিহ্ন। এই শ্রমিকরাই দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখছেন, কিন্তু তাঁদের নিজেদের ভবিষ্যৎ অনিরাপদ জীবনযাত্রা এবং হিমায়িত মজুরির কারণে ক্রমশ স্তব্ধ হয়ে আসছে।
বিশাখাপত্তনম, একটি প্রধান শিল্প ও বন্দর নগরী, এই আন্দোলনকে এক বিশেষ ভৌগোলিক গুরুত্ব এনে দিয়েছে। পাবলিক সম্পত্তি বিক্রির প্রতিরোধ এবং শিল্প ও ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের অধিকারের লড়াইকে কেন্দ্র করে এই শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
সিটু-র অভ্যন্তরীন সূত্র জানাচ্ছে, ১৮তম সর্বভারতীয় সম্মেলন হবে সেই জায়গা যেখানে প্রতিনিধিরা শ্রমিক-বিরোধী নীতির ক্রমবর্ধমান জোয়ার মোকাবিলায় এক অটুট কৌশল তৈরি করবেন। পোস্টারের এই মুষ্টিবদ্ধ হাত প্রতিকূলতার গভীর থেকে উঠে আসার যে ছবি তুলে ধরছে, তা এক প্রবল বার্তা দেয়: সমস্ত বাধা সত্ত্বেও, সংহতি ও সংগ্রামের স্পৃহা অবিচ্ছিন্ন। বছরের শেষলগ্নে, সারা দেশের চোখ থাকবে উপকূলীয় এই শহরের দিকে, যেখানে শ্রমিক শ্রেণী তাদের ঐক্যবদ্ধ গর্জন নিয়ে একসঙ্গে উঠে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই চিত্রটি স্পষ্ট ঘোষণা করে, লড়াই এখনও শেষ হয়নি, এবং দৃঢ়ভাবে রুখে দাঁড়ানোর সময় এসেছে।