" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory বিস্মৃতির অতলে ইতিহাস, নাকি সম্প্রীতি নষ্টের নীরব প্রক্রিয়া? ৬ই ডিসেম্বর এবং ভারতের বিপন্ন বিবেক //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

বিস্মৃতির অতলে ইতিহাস, নাকি সম্প্রীতি নষ্টের নীরব প্রক্রিয়া? ৬ই ডিসেম্বর এবং ভারতের বিপন্ন বিবেক

 


 

কলকাতা: ৬ই ডিসেম্বর—ক্যালেন্ডারের পাতায় এই তারিখটি কেবল একটি দিন নয়, বরং স্বাধীন ভারতের ইতিহাসের বুকে এক দগদগে ক্ষত। সাধারণ মানুষের যে প্রতিক্রিয়া উঠে এসেছে, তা কেবল একটি ঘটনার স্মৃতিচারণ নয়; বরং তা আমাদের সমাজের বর্তমান অবস্থার এক নিদারুণ প্রতিচ্ছবি। একদিকে ইতিহাসের প্রতি বর্তমান প্রজন্মের উদাসীনতা, অন্যদিকে প্রবীণদের বুকে জমে থাকা দীর্ঘশ্বাস—এই দুইয়ের মাঝখানে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন জাগে, দেশে সম্প্রীতি নষ্ট করার প্রক্রিয়াটি কি তবে চূড়ান্ত সফলতার দিকে এগোচ্ছে?


ভিডিওতে এক তরুণ নির্দ্বিধায় জানিয়ে দিলেন, "আমার একদম আইডিয়া নেই।" আরেকজনের উত্তর, "কালো ইতিহাস।" এই বিস্মৃতিই সম্ভবত ভয়ের সবথেকে বড় কারণ। একটি জাতি যখন তার ইতিহাসের সবথেকে বড় আঘাতের দিনটিকে ভুলতে বসে, তখন বুঝতে হবে—ইতিহাস মুছে ফেলার বা বিকৃত করার 'প্রক্রিয়া' কতটা গভীরে শিকড় গেড়েছে।


অথচ, যাঁরা সেই দিনটিকে মনে রেখেছেন, তাঁদের কন্ঠে ঝরে পড়েছে তীব্র যন্ত্রণা। ভিডিওতে এক প্রবীণ নাগরিকের কথায় উঠে এল সেই অমোঘ সত্য—"সেদিন কেবল একটি মসজিদ বা ইমারত ভাঙা হয়নি, ভাঙা হয়েছিল ভারতের ভাবমূর্তি (Idea of India)।" ধর্মনিরপেক্ষতা এবং ভাইচারা—যে দুটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে আমাদের এই বিশাল গণতন্ত্র, ৬ই ডিসেম্বর ছিল সেই স্তম্ভের ওপরই এক মারণ আঘাত।

ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! যেদিন ভারতের সংবিধানের রূপকার, সাম্য ও মৈত্রীর প্রতীক ডঃ বি আর আম্বেদকরের মহাপ্রয়াণ দিবস, ঠিক সেই দিনটিকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল এমন এক ধ্বংসলীলার জন্য—যা সংবিধানের মূল আত্মাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। ভিডিওতে এক নাগরিক ক্ষোভের সাথে মনে করিয়ে দিলেন, "দীর্ঘ ৪৫০ বছরের ইতিহাসকে জোর করে ভেঙে দিয়ে সেখানে গায়ের জোরে দখলদারি কায়েম করা হয়েছিল।"

সাধারণ মানুষের এই বয়ানগুলো বুঝিয়ে দেয়, সম্প্রীতি নষ্ট করার প্রক্রিয়াটি একদিনের নয়। এটি দীর্ঘদিনের লালিত এক রাজনৈতিক ও সামাজিক এজেন্ডা। যখন কোনো তরুণ জানেন না বাবরি ধ্বংসের ইতিহাস, তখন বুঝতে হয় শিক্ষা ও চেতনার জায়গায় এক শূন্যতা তৈরি করা হয়েছে। আর যখন কোনো বৃদ্ধ বলেন, "এটি ফ্যাসিবাদের শুরু," তখন বোঝা যায়, সেই শূন্যস্থান পূরণ করা হয়েছে বিভেদ আর ঘৃণার রাজনীতি দিয়ে।


আজকের এই প্রতিবেদন কেবল খবরের কাগজের জন্য নয়, এটি আমাদের বিবেকের কাছে এক প্রশ্ন। ইট-পাথরের স্থাপত্য হয়তো আবার গড়ে তোলা যায়, কিন্তু ভেঙে যাওয়া বিশ্বাস আর টুকরো হয়ে যাওয়া সামাজিক সম্প্রীতি কি আর জোড়া লাগানো সম্ভব? ৬ই ডিসেম্বরের ধুলো হয়তো বাতাসে মিলিয়ে গেছে, কিন্তু সেই ধুলো কি আমাদের চোখের দৃষ্টি ঝাপসা করে দেয়নি? আমরা কি তবে এক বিস্মৃত এবং বিভক্ত ভারতের দিকেই এগিয়ে চলেছি?

উত্তর খুঁজছে সময়, উত্তর খুঁজছে ভারত।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies