এভারেস্ট তুমি কার ? পর্ব -৬
লেখা - দেবাশীষ ঘোষ
সম্পাদনা-শংকর পাল
অন্যান্যদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত দূ্ঃখজনক ঘটনা হলেও ২০১৬ সালে মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে গৌতম ঘোষের নিখোঁজ - মৃত্যু ও পরবর্তীতে —
* ছবি ডিলিট ও তদন্তের ফরেন্সিক রিপোর্ট না পাওয়া ।
* গৌতম ঘোষের ক্যামেরায় অন্য অভিযাত্রীর মেমোরি কার্ড ।
* গৌতমের পরিবার ছবি দেখার আগেই অন্য কারো হাত ধরে ইলেকট্রনিক্স সংবাদ মাধ্যমে ছবি পৌঁছানো এবং প্রচারিত হওয়া ।
* এজেন্সির চুড়ান্ত উদাসীনতা ও গাফিলতি ।
* শেরপাদের চুড়ান্ত গাফলতি ও অমানবিক মানসিকতা।
* এজেন্সি ও টিম লিডারের রিভাইসড রিপোর্ট ।
* গৌতম ঘোষের শেরপা বীরবাহাদূর (বিষ্ণু) গুরুঙ্গের রহস্যজনক আত্মগোপন ।
* সংযোগাধিকারিক "(Liaison officer) রামপ্রসাদ ভূসুয়াল " এর কর্তব্য ও দায়িত্বের প্রতি অবহেলা।
* গৌতম ঘোষের পোস্টমর্টেম রিপোর্টে মৃত্যুর কারন " আনডিটারমাইন্ড " শব্দের ব্যবহার ।
** [ বিগত কয়েক বছর ধরে নেপালে অবস্থিত মাউন্ট এভারেস্ট সহ বিভিন্ন শৃঙ্গ অভিযানে অধিকাংশ মৃত ভারতীয় পর্বতারোহীদের মৃত্যুর কারন হিসেবে " আনডিটারমাইন্ড " শব্দের ব্যবহার , আর এর মধ্যেই বিরাট রহস্য / যড়যন্ত্র আছে বলে আমার বিশ্বাস । ]
ঠিক কি কারণে পশ্চিমবঙ্গের পর্বতারোহণের নিয়ামক সংস্থা ও পর্বতারোহীদের একাংশ উক্ত ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি না জানিয়ে অদ্ভুত ভাবে নিরব ভূমিকা পালন করেন এবং উক্ত ঘটনার মিথ্যা ব্যাখ্যার মধ্যে দিয়ে আসল অভিযুক্তদের আড়াল করতে ব্যস্ত হয়ে পরেন , যা আমাদের কাছে আজও অজ্ঞাত ।
সেই সমস্ত কর্তাব্যক্তিদের কাছে করজোড়ে প্রার্থণা করি ২০১৬ সালে মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানের রহস্যজনক ঘটনাসমূহের নিরপেক্ষ তদন্ত করতে সংশ্লিষ্ট সরকারি (কেন্দ্র ও রাজ্য ) দপ্তরে আবেদন / অনুরোধ / দাবি জানিয়ে প্রতিকারের জন্য উদ্দ্যোগ গ্রহণ করুন , আগামী প্রজন্মের পর্বতারোহীদের এধরনের ষড়যন্ত্র , রহস্যজনক ঘটনা থেকে রক্ষা করার স্বার্থে ।
এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে চলেছি আমরা আর অবশ্যই ভারতীয় পর্বতপ্রেমী মানুষেরা ।
তারপরও উত্তর অধরা । এটা বুঝতে কারো অসুবিধা নেই যে সঠিক নিরপেক্ষ তদন্ত হলে অনেক রহস্য বেরিয়ে আসবে , প্রকাশ পাবে মুখ ও মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা আসল মুখ । তবুও আমরা হাল ছাড়িনি আর ছাড়ার কোনো প্রশ্নই নেই।
তবে নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি যে , পথ যতই দুরত্বের বা যতই কঠিন হোক না কেন , "সময়" ই ঠিক নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে । আর তার জন্য রাজপথ থেকে রাজপ্রাসাদে সমস্ত জায়গাতেই সত্য জানতে আমরা আমাদের সাধ্যকে অতিক্রম করে চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
আমরা দীর্ঘ প্রায় ছয় বছর ধরে গৌতম ঘোষের পরিবার এই সমস্ত বিষয়টি নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের ও গৌতম ঘোষের মৃত্যুর সহ অন্যান্য ঘটনার সত্য প্রকাশের আবেদন নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রার্থনা করে চলেছি ।
শুধুমাত্র আগামী প্রজন্মের পর্বতারোহীদের মঙ্গলার্থে ...
সবাই আন্তরিক ভাবে সত্য প্রকাশে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলেও , সেইভাবে আমাদের কাছে কোন আশানুরূপ ফল পাইনি । শুধুমাত্র আমাদের পরিবার নয় ---2016 মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে গৌতম ঘোষ সহ আরো দুই জনের (3 জন ) মৃত্যু সত্য ঘটনা প্রকাশে সারা বিশ্বের পর্বতারোহণের সাথে যুক্ত মানুষেরা তাকিয়ে আছে .......
আমরা জানি আমাদের লড়াই বা শতকোটি চেষ্টাতেও গৌতম ঘোষ আর আমাদের মধ্যে ফিরে আসবে না ।
আমাদের চেষ্টা বা লড়াই আগামী প্রজন্মের জন্য ------- আর কোন গৌতম কে যেন এই ভাবে হারিয়ে যেতে না ।
২০১৬ সালে মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে একটা টিমে তিন তিনটে মৃত্যু একজন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা ..... পশ্চিমবঙ্গের পর্বতারোহণের ইতিহাসে প্রথম আর এ বিষয়ে একাংশ পর্বতারোহী নীরব , পশ্চিমবঙ্গের পর্বতারোহণের নিয়ামক সংস্থার কর্মকর্তারা নীরব ,
এত নীরাবতা র মাঝেও একাংশ পর্বতারোহী ও পর্বতপ্রেমীদের প্রতিবাদ ।
প্রতিবাদের ঝড় রাজপথ দাপিয়ে চলার পরও ওনাদের মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ওনারা সুযোগ সুবিধার আশায় মেরুদন্ড বন্ধক রেখে চলেছেন।উপরন্তু প্রভাবশালীদের বিশেষ সুবিধা দিতে নতুন নতুন নামে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ না করে নিজের সুযোগ সুবিধা আদায় করার নতুন ট্রেন্ড ।
আগামী দিনে যদি গৌতম, সুভাষ, পরেশ দের মতো আপনাদের পরিবারের কেউ না ফিরতে পারে ,সেই দিন আপনারা টেলিভিশন চ্যানেলে বসে বলতে পারবেন তো ওরাও তো মানুষ ওদেরও লিমিট আছে , হ্যা বন্ধু এই লিমিটের জন্য গৌতমের শেরপা বীর বাহাদুর গুরুং ( বিষ্ণু) আজও আত্মগোপন করে থাকার সাহস দেখাতে পারে ।
আমাদের পশ্চিমবঙ্গ সরকার , পশ্চিমবঙ্গের পর্বতারোহণের নিয়ামক সংস্থা WBMASF মাধ্যমে সমস্ত অভিযাত্রীদের উৎসাহ দিতে আর্থিক অনুদান দিয়েছিলেন । সেই সুত্রে এখানে অভিযানে WBMASF অংশীদার । ভালো মন্দ সমস্ত কিছুতেই WBMASF জানতেই পারে । জানা উচিৎ । জানা দায়িত্ব। জানা কর্তব্য। WBMASF পক্ষ থেকে এজেন্সি ও নেপাল ট্রুরিজম দপ্তরের কাছে ঘটনার বিবরণ জানতে চাওয়া কি উচিৎ ছিল না ?
তার বদলে কর্মকর্তারা নীরব !
ভারত সরকারের বিদেশ দফতরের পক্ষ থেকে বারংবার নেপাল সরকার কাছে অভিযানের অভিযোগ সম্পক্ষিত সমস্ত রিপোর্ট চেয়ে চিঠি পাঠান । অত্যন্ত দুঃখজনক । উক্ত বিষয়ে নেপাল সরকার একদম নীরব।কেন নেপাল সরকার তার দায় এড়িয়ে গেল? গৌতমের শেরপা বীর বাহাদুর গুরুং ( বিষ্ণু )এখনো আত্মগোপন করে আছে এর দায় কি নেপাল সরকার ও এজেন্সি এড়িয়ে যেতে পারে ??????
সবার নীরবতা ই প্রমান করে ২০১৬ সালে মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে তিন তিনটে মৃত্যর মধ্যে ভয়ঙ্কর এক রহস্য লুকিয়ে আছে ?
তাইতো আমরা আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী- বিদেশ দপ্তর -স্বরাষ্ট্র দপ্তর , রাজ্যপাল -- সমস্ত দপ্তরে CBI তদন্ত চেয়ে আবেদন করেছি।উপরোক্ত সমস্ত দপ্তর গুলো থেকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। (পরবর্তী তদন্তের স্বার্থে সমস্ত বিষয়ে জানানো গেল না )
Minister of Personnel, Public Grievances and Pensions ( Department of Personnel and Training ) দপ্তরে পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে 15/07/2021 পর্বতারোহী গৌতম ঘোষের মৃত্যু ও পরবর্তী ঘটনাসমূহের জন্য CBI তদন্তের অনুরোধ করেছেন।
এখানেও সেই নীরবতা বিরাজমান !!!!!
আমরা কোন প্রলোভনে সামনে মেরুদন্ড বিকিয়ে দেইনি।গৌতম ঘোষের সরকারি চাকরি নিতে অস্বীকার করেছি ছবি ডিলিট ও এডিট তদন্তের সঠিক উত্তর না পাওয়ার কারণে.........
আমাদের সীমাকে অতিক্রম করেও আমরা জানতে চাইবো ঠিক কি ঘটেছিল ২১ই মে ২০১৬ মাউন্ট এভারেস্টের শৃঙ্গে ......
অপেক্ষায় রইলাম সময়ের ।




