১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
নতুন দিল্লি: ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশে ১০০ গিগাওয়াট (gW) পরমাণু শক্তি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অর্থমন্ত্রী নীরমালা সীতারামন শনিবার ২০২৫-২৬ সালের বাজেট পেশ করতে গিয়ে 'বিকশিত ভারত' মিশনের অংশ হিসেবে এই পরিকল্পনার কথা জানান। এছাড়া, পরমাণু শক্তি প্রকল্পের গতি বাড়াতে পারমাণবিক শক্তি আইন এবং পরমাণু ক্ষয়ক্ষতি দায় আইন-এ সংশোধনী আনারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
১০০ গিগাওয়াট পরমাণু শক্তির রোডম্যাপ:
- ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতের শক্তি চাহিদার একটি বড় অংশ পরমাণু শক্তি থেকে মেটানোর লক্ষ্যে ১০০ গিগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা তৈরি করা হবে।
- এই লক্ষ্য পূরণে দেশজুড়ে নতুন পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, বিদ্যমান প্রকল্পের আধুনিকীকরণ এবং প্রযুক্তিগত গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়ানো হবে।
- সীতারামন বলেন, "পরমাণু শক্তি ভারতের জন্য ক্লিন এনার্জির ভিত্তি হবে। এটি কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সাহায্য করবে।"
আইন সংশোধন: বেসরকারি বিনিয়োগের পথ খুলল
- পারমাণবিক শক্তি আইন (১৯৬২): এই আইন সংশোধন করে বেসরকারি খাত ও বৈদেশিক কোম্পানিগুলিকে পরমাণু শক্তি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হবে। প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রে নমনীয়তা আনা হচ্ছে।
- পরমাণু ক্ষয়ক্ষতি দায় আইন (২০১০): দায়বদ্ধতার সীমা পুনর্বিবেচনা করা হবে, যাতে বিদেশি সরবরাহকারীরা ভারতীয় পরমাণু প্রকল্পে অংশ নিতে উৎসাহিত হয়।
বাজেটে বরাদ্দ ও কৌশল:
- ২০২৫-২৬ সালের বাজেটে পরমাণু শক্তি খাতের জন্য ₹২২,৫০০ কোটি বরাদ্দের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
- এই তহবিল গবেষণা, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং জনগণের মধ্যে পরমাণু শক্তির নিরাপদ ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা প্রচারে ব্যবহার করা হবে।
- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর "মিশন বিকশিত ভারত ২০৪৭"-এর সঙ্গে এই পরিকল্পনা যুক্ত করে বলা হয়েছে, "এটি ভারতকে বিশ্বের পরমাণু শক্তি নেতৃত্বের সারিতে নিয়ে যাবে।"
শিল্প বিশেষজ্ঞরা এই ঘোষণাকে "ঐতিহাসিক" আখ্যা দিয়েছেন। তাদের মতে, আইনি সংস্কার ও বেসরকারি অংশগ্রহণে ভারতের পরমাণু শক্তি উৎপাদন ৫ গুণ বাড়তে পারে।
- পরিবেশবাদীরা নিরাপত্তা প্রোটোকল জোরদার করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে সরকার আশ্বাস দিয়েছে, "সব প্রকল্পই আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মান মেনে চলবে।"
এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভারত শুধু শক্তি স্বয়ংসম্পূর্ণতা নয়, বৈশ্বিক পরমাণু প্রযুক্তি বাজারে একটি প্রধান খেলোয়াড় হিসেবেও আবির্ভূত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী দুই দশকে এই খাতে ৫ লক্ষেরও বেশি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
-