কম খরচে পুরুলিয়া ভ্রমণ ...
************************
আজ আমি আপনাদের শুধু কম খরচে পুরুলিয়া ভ্রমনের হদিস দিতেই এই পোস্ট দিচ্ছি .....
আরো হাজারো রকম উপায়ে পুরুলিয়া যাওয়া - আসা ,বেড়ানো যাবে আমি সে ব্যাপারে যাচ্ছি না ....
আপনারা হাওড়া - মেদিনীপুর লোকাল ধরে মেদিনীপুর স্টেশনে ১১:৩০ এর মধ্যে চলে আসুন, বাকিটা আমার দ্বায়িত্ব......
সম্ভবতঃ হাওড়া - মেদিনীপুর লোকাল ভাড়া ৩৫ টাকা।
সপ্তাহের যে কোনও দিন আসতে পারেন.....
আপনি যদি ১১:৩০ এ মেদিনীপুর পৌঁছাবেন হিসেব করে লোকাল ট্রেন ধরেন ,তাহলে সম্ভবতঃ আপনি মেদিনীপুর স্টেশনে ৩ বা ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে নামবেন ....
তিন বা চার প্ল্যাটফর্ম দুটোর অর্ধেকটা একসাথে মিশে থাকে.... তাই আপনি চেষ্টা করুন সুবিধাজনক দিকে নামতে। হুড়োহুড়ি করার দরকার নেই, ওই হাওড়া লোকাল এর সাথে কানেক্টিভ মেমু লোকাল (যেটি আদ্রা যাবে ) এক নম্বরে দাঁড়িয়ে থাকবে। আপনাকে না নিয়ে ,এগারোটা চল্লিশের আগে যাবে না।
এক্ষেত্রে আর একটি বিভ্রান্তি এড়ানোর কথা আমি আপনাদের আগে ভাগেই জানিয়ে রাখছি.....08679 এই মেমু লোকাল টি আগে ডেমু লোকাল নামে পরিচিত ছিল,টেকনিক্যাল কারণে ।এবং তা আদ্রা পর্যন্ত যায় বলেই অনেকেই জানে ...... এবং আপনি নেট সার্চ করলে দেখবেন এর সাথে আদ্রা থেকে পুরুলিয়া যাবার কানেক্টিভ ট্রেন আছে......
অর্থাৎ আপনি গ্যাট হয়ে ওই ট্রেনের ওই সিটেই বসে থাকুন দেখবেন এক সময় পুরুলিয়া পৌঁছে গেছেন।
আসলে ওই মেমুটির অন্তিম গন্তব্য বরাভুম স্টেশন,যা পুরুলিয়া পেরিয়ে।
আবার আসার দিন সকালেও ওই ট্রেন ধরে পুরুলিয়া থেকে ১১:১০ এ ডাইরেক্ট আপনি মেদিনীপুর পৌঁছাতে পারবেন ...... শুধু তাই নয়,আবার ওই একইরকম ভাবে তিন অথবা চার অথবা সাড়ে তিন নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে বারোটার ১১:৫০ এর লোকাল ধরে হাওড়া ফিরতে পারবেন।
বেশ !
এখন আপনি নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন কিভাবে ১০০ টাকারও কমে মোটামুটি ৩৫০ কিমি ট্রেন যাত্রা করে পুরুলিয়া পৌঁছে যাবেন।
তবে একটা ব্যাপার .....এভাবে পৌঁছাতে যেহেতু আপনার বিকেল চারটে বেজে যাবে তাই রাত টা আপনাকে পুরুলিয়ায় থাকতে হবে।
ক্ষতি কি ??
রাতে সাহেব বাঁধ টা ঘুরুন ,পুরুলিয়ার মার্কেটে সস্তায় দু একটা সুতি ছাপা শাড়ি কিনুন ...... তাতে অনেকেই খুশি হবে। রাতে ছৌ নাচ,মুরগি লড়াই দেখার সুযোগ অনেক সময় হয়ে যায়,হোটেল ম্যানেজাররা খোঁজ রাখেন ....
জিজ্ঞেস করতেই পারেন !!
ভাবছেন ,থাকবো কোথায় ?
আমি আজ সস্তায় থাকার সন্ধানই কেবল দেবো .... চিন্তা নেই!
ছবিতে হোটেলের ফোন নম্বর পেয়েও যাবেন......
এখন দুটো ঠিকানা দিচ্ছি যেখানে রাতটা সস্তায় পুরুলিয়া তে কাটাতে পারবেন .....
১) তাম্বুলি গেস্ট হাউস
২) রাজস্থানি ব্রাম্ভণ অতিথি নিবাস ।
দুটোই পুরুলিয়া স্টেশন থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ..... টো টো কে বলুন টো টো করে পৌঁছে দেবে,দশ টাকা পার হেড নেবে।
আগে বুক করে যাবেন ..... তাম্বুলি গেস্ট হাউস সহজলভ্য,তবে স্বাচ্ছন্দ্য একটু কম ..... তাতে কি !
ম্যানেজার জিতেন দত্ত ( 9732605934) ভালো লোক। বেসিক নিডস ফুলফিল হবে। কমোড আছে, শাওয়ার আছে ..... রুম পরিচ্ছন্ন।
খাবার বাইরে খেয়ে ঢুকবেন,অথবা নিয়ে ঢুকবেন। ডবল বেড ৩০০ টাকা।
সিঙ্গেল ২০০ পার নাইট।
এক দুজন অ্যাডজাস্ট করে দেয়।
একটু এক্সট্রা দিতে হয়।
ব্রাহ্মণ গেস্ট হাউস পেতে কষ্ট হয়,কিন্তু বেটার। নিরামিষ খাবার টা ওখানে পাবেন।
পরের সকালে আরামে উঠুন, ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করুন.... বাসে অযোধ্যা হিল টপ যান। বাস পাবেন,স্ট্যান্ড থেকে।
ভাড়া দরদাম করে নেবেন,দু হাজারে হবে। গাড়ি অনুযায়ী কম বেশি। একটু ধৈর্য্য থাকলে বাসে সুন্দর হিল টপ পৌঁছে যাবেন,অনেক কম খরচে। কলকাতা থেকেও ডাইরেক্ট বাস অযোধ্যা হিলটপ যাচ্ছে, ভায়া পুরুলিয়া।
হিলটপে পৌঁছে সোনার বাংলা রেস্তোরাঁয় মাছ,মাংস,ডিম ,সব্জি দিয়ে ন্যায্য দামে লাঞ্চ করবেন ..... গরমাগরম ,টাটকা পাবেন , ম্যাক্সিমাম একশো ... দেড়শ টাকায় মাছ / চিকেন ভাত পাবেন ...... রুটি চাইলেও গরম ফুলো ফুলো.....ভাত চাইলেও উবু জলন্ত!!
দু নম্বরী, ধড়িবাজী এরা করতে অভ্যস্ত নয় !!!
অনেক হোটেলের ছবি দিচ্ছি .... তাতেই ফোন নম্বর পাবেন ..... বুক করে যাবেন,আর যদি মনে করেন বুক করে যাবো না .... তাতেও হাজার টাকার মধ্যে রাতের ঠিকানা পাবেন .....চাঁদনী রাতে তাঁকে (?) নিয়ে গল্প করবেন ......
একবার চেষ্টা করবেন ওই স্টেডিয়ামের কাছে গিয়ে যদি পারেন তো একটু গরম ঘুগনি,চপ খেয়ে আসবেন .... ওখানে চা টাও দারুন করে....... আর রান্না করার সুযোগ পেলে কালো খাসি (বিকেলেও কাটে) খেয়ে দেখবেন .....
লাইফ জিল্লা লালা !!
চিকেন,মছলি সব কুছ মিলেগা .....
খুব খুশি হলে আমার আবার হিন্দি ,ইংলিশ ছাড়া, বাংলাটা ঠিক আসে না !!!
যদি গাড়ি করে যান , তাহলে এই রুট টা ফলো করবেন .......
পুরুলিয়া --- চাষ মোড়(১৭ কিমি)--- জয়পুর ----- দেউলঘাটা ----- মূরুগুমা ড্যাম ---- পাখি পাহাড় ------ অযোধ্যা হিল টপ ---- মার্বেল লেক ----- বামনী ফলস ------ বাঘমুন্ডি ----- চড়িদা গ্রাম -------- লহরিয়া শিব মন্দির ----- লোয়ার ড্যাম ------ আপার ড্যাম ----- ভায়া হিল টপ , সির্কাবাদ ----- পুরুলিয়া।
পুরুলিয়া বেড়ানোর আদর্শ আবহাওয়া , উপযুক্ত সময়..... হোটেলে রাশ কম ..... তাই সাত পাঁচ ভেবে সময় নষ্ট না করে পাঁচ - সাত হাজার পকেটে নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন আমার কথা অনুযায়ী।
তবে একটা কথা না বোললে আমার প্যাট দুখাছে .....
বোইলবো??
পুরুল্যা ব্যাড়াতে গেলে ভুটভুটি সব থাকতে ল্যা ভাল ..... !
ভুটভুটিটার সামনে , টানকিটার উপ্রে লুলুটাকে ,প্যাছন্টায় মিয়াটাকে চামচিকা প্যাটানে ....নাইলে নটরাজ ইস্টাইলে বসাইলিয়ে জ্যাতে পারলে সোব থিকে সুন্দর হোথ !!!!
কিন্তুক আমি জানি তরা ইটা নাই পারবি .......
ত্যদের মূয়েই ফুটানি !!!!!
চ্যাস্টা ট কর্ ..........





