লেখা : শোভন বুলান
এমন ঘি-টি কোথাও গেলে পাবে না কো তুমি। গরম ভাতের ধোঁয়া-জড়িয়ে ওঠা গন্ধটা যেন সেকথাই বলে দিল আমায়।
'ওখানে খুব বৃষ্টি হচ্ছে এখন। শিলিগুড়ি ভেসে গেছে। সাবধানে যেও'। দার্জিলিং মেলের ঠান্ডা কম্পার্টমেন্টে বসে। ট্রেন ছাড়তে তখনও কিছু দেরি আছে। শ্রেয়সীর টেক্সট এলো। একটু যে চিন্তা হচ্ছিল না, তা নয়। তবে উঁকি দিয়েই সে পগারপার। পরদিন সকাল সাড়ে ৮ নাগাদ ট্রেন যখন নিউ জলপাইগুড়ি ঢুকলো, আকাশ ঝকঝকে। বৃষ্টির ছিটেফোঁটা নেই। বাইরে অপেক্ষায় নভোজিত-সঞ্চিতা। শুরু মিশন মিম, জুন, '২২।
বাকি সব রাস্তা বন্ধ। রোহিনী ধরেই তাই এগনো। কী অসাধারণ সেই সফর। দু'দিকে ঘনসবুজ, ওপরে নীল-সাদা আকাশ। আর সামনে হিমালয়। উদার। দরাজ। ভালবাসার। ভোলার নয়।
পথে একজায়গায় সামান্য সময়। বাকি শরীরকে বিশ্রামে রেখে স্টমাককে কিঞ্চিৎ কাজের দায়িত্ব দেওয়া আর কী। সেসব চুকেবুকে গেলে ফের ছুট। পথিমধ্যে ছবি তোলা এদিক ওদিক।
মিমে ঢোকার আগের সাতকিলোমিটার রাস্তা এককথায় জঘন্য। অবশ্য রাস্তা আর ছিলই বা কতটুকু কোথায়! পুরোটাই রোলারকোস্টার জার্নি যাকে বলে। সেসব পেরিয়ে একসময় পৌঁছলাম তাকতো হোমস্টে। ফুলে সাজানো মিষ্টি এক বাসাঘর। পথের ক্লান্তি ভুলে ভালবেসে ফেললাম এই চা-গ্রামকে।
বিকেলে গ্রামের রাস্তা, চাবাগানের ঢাল ধরে বেশ খানিক্ষণ ওঠানামা করে ফেরা। সন্ধ্যায় চা-পকোড়া সহযোগে আড্ডা। ৯টা নাগাদ রাতের খাওয়া। একটু হাঁটাহাঁটি। তারপর ঘুম।
গাড়ি না, পরদিন হোঁটেই বেরনো। কিন্তু রাস্তা একজায়গায় এতটাই খাড়াই, থমকে যেতে হল। তখনই এক গাড়িচালক জানালেন তিনি ওপরের দিকে যাচ্ছেন। তাঁর গাড়িতেই উঠে বসলাম অতএব।
ওপরের দিকে Little Forest Homestay আর Hill View Home Stay। প্রথমটি এককথায় লা-জওয়াব। যেমন ঘরের ব্যবস্থা, তেমনই স্বাছন্দের আয়োজন।
এই গ্রামটি এককথা অসাধারণ। হেঁটেই ঘুরে দেখা যায়। অজস্র পাখির ডাক আর প্রকৃতির নিজস্ব নৈশব্দ মিলেমিশে এক সার্থক যুগলবন্দি পাওয়া যাবে এখানে। আকাশ পরিস্কার থাকলে নিরাশ করবেন না কাঞ্চনজঙ্ঘাও। গ্রামের মানুষ সদালাপী। মিশুকে। ইচ্ছে আর আগ্রহ থাকলে তাঁদের সঙ্গেও কাটানো যেতে পারে সময়। ভালো লাগবে বেশ।
আপাতত এটুকুই। পরে না হয় মিমের সঙ্গে দেখা করা যাবে আবার!
Takto Homestay
76799 24690
Little Forest Homestay
6294081876
7865822591
