জীবনযুদ্ধে লড়াইয়ে সাফল্য প্রীতিকণা গোস্বামী। দারিদ্রতার জেরে একটা সময় হাতে তুলে নিয়েছিলেন ছুঁচ-সুতো। সেই ছুঁচ-সুতো আজ তাঁকে এনে দিল পদ্মশ্রী পুরস্কার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা প্রীতিকণা গোস্বামী। দারিদ্রতার বিরুদ্ধে এগিয়ে এসেছিলেন তিনি।তাঁর সঙ্গে সাহস জুগিয়েছিলেন আরও অনেক মেয়েকে। সাদামাটা গ্রাম বাংলার এক মেয়ে হিসেবেই শুরু করেছিলেন জীবন। কিন্তু সংসারে ঝড় নামে বাবার অকাল মৃত্যুর পর। তখন সদ্য ম্যাট্রিক পাস করেছেন তিনি। কিভাবে সংসার চলবে সে কথা ভেবেই রাতের ঘুম উড়েছিল তাঁর।
সেই সময় এক বান্ধবীকে তিনি দেখেছিলেন শাড়িতে সেলাইয়ের কাজ করতে। নিজের ইচ্ছেতেই সেই শাড়ি হাতে তুলে নেন প্রীতিকণা। করেন সেলাই। তাঁর সেলাই দেখে তাজ্জব হয়ে যান বান্ধবী। এরপরে সেই বান্ধবী তাকে প্রস্তাব দেন কলকাতা গিয়ে কাঁথা স্টিচের কাজ আনতে। কিন্তু শাড়ি আনতে গেলে লাগতো ৫০ টাকা। তার হাতে সে সময় ছিল ৩০ টাকা। অবশেষে মালিকান প্রস্তাব দেন দোকানে বসে কাজ দেখাতে। তাঁর কাজ দেখে মুগ্ধ হন মালিকান।
এরপর ১৫ বছর ধরে চলে সেলাইয়ের কাজ। বিয়ে হয় সন্তানের মাও হয় কিন্তু বন্ধ করেননি সেলাইয়ের কাজ। মোড় ঘোরে ১৯৯০ সালে। ক্রাফট কাউন্সিল অব ওয়েস্ট বেঙ্গলের তত্কালীন চেয়ারপার্সন প্রীতিকণাকে একটি ওর্য়াকশপ খোলার পরামর্শ দেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যন্ত গ্রামের মহিলার তাঁরা কাছে কাঁথা স্টিচে কাজ শিখে স্বনির্ভর হতে শুরু করেন। আর ফিরে তাকাতে হয়নি প্রীতিকণাকে। ২০০১ সালে সূচি শিল্পের কাজের জন্য জাতীয় পুরস্কার পান তিনি।
রাষ্ট্রপতি কালামের কাছ থেকে পুরস্কার নেন প্রীতিকণা গোস্বামী।তাঁর কাজকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দিয়েছেন এনআইএফটি পাশ ফ্যাশন ডিজাইনার মেয়ে মহুয়া লাহিড়ি। এবার তিনি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর থেকে নেবেন পদ্মশ্রী পুরস্কার।


