" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন ভলতেয়ার বা ফ্রঁসোয়া-মারি আরুয়ে //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন ভলতেয়ার বা ফ্রঁসোয়া-মারি আরুয়ে

প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন ভলতেয়ার বা ফ্রঁসোয়া-মারি আরুয়ে


ভলতেয়ার বা ফ্রঁসোয়া-মারি আরুয়ে (জন্ম : ২১শে নভেম্বর, ১৬৯৪ – মৃত্যু : ৩০শে মে, ১৭৭৮), যিনি ছদ্মনাম ভলতেয়ার (Voltaire) নামেই বেশি পরিচিত, ফরাসি আলোকময় যুগের একজন লেখক, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক। তাঁর বাকচাতুর্য (wit) ও দার্শনিক ছলাকলা (philosophical sport) সুবিদিত। তিনি নাগরিক স্বাধীনতার স্বপক্ষে, বিশেষত ধর্মের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের অধিকারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তিনি ফ্রান্সের কঠোর সেন্সর আইন উপেক্ষা করে সামাজিক সংস্কারের অন্যতম প্রবক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। খ্রিস্টান গির্জা ও তৎকালীন ফরাসি সামাজিক আচার ছিল তাঁর ব্যঙ্গবিদ্রুপের লক্ষ্য। 

ভলতেয়ারের জন্ম ফ্রান্সের প্যারিস শহরে। তাঁর বাবা ফ্রঁসোয়া আরুয়ে (১৬৫০ - ১৭২২) ছিলেন নোটারি ও সরকারের ট্রেজারি দপ্তরের এক সাধারণ কর্মকর্তা। মা মারি মার্গ্যরিত দোমার (১৬৬০ - ১৭০১) ছিলেন ফ্রান্সের পোয়াতু প্রদেশের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে। ভলতেয়ার তাঁদের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। ১৬৯৪ সালের ২১শে নভেম্বর তাঁর জন্ম হয়। ১৭০৪ থেকে ১৭১১ সাল পর্যন্ত ভলতেয়ার কোলেজ লুই-ল্য-গ্রঁ নামক বিদ্যালয়ে জেসুইট পাদ্রিদের কাছে পড়াশনা করেন। এখানেই লাতিন ও গ্রিক ভাষা শেখেন। পরবর্তী জীবনে ভলতেয়ার ইতালীয়, স্পেনীয় ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেছিলেন।


ভলতেয়ার নামে সমধিক পরিচিত হলেও তাঁর মূল নাম ফ্রঁসোয়া মারি আরুয়ে। জন্ম ২১ নভেম্বর ১৬৯৪ সালে আর মৃত্যু ১৭৭৮ সালের ৩০ মে। ভলতেয়ার তাঁর ছদ্মনাম। এ নামেই তিনি বেশি পরিচিত। তিনি ছিলেন ফরাসি আলোকময় যুগের একজন লেখক, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক।

স্বৈরাচারী রাজা ষোড়শ লুইয়ের দুঃশাসনে তিনি ফ্রান্সের কঠোর সেন্সর আইন উপেক্ষা করে সামাজিক সংস্কারের অন্যতম প্রবক্তা রূপে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। খ্রিস্টান গির্জা ও তৎকালীন ফরাসি সামাজিক আচার ছিল তাঁর ব্যঙ্গবিদ্রুপের লক্ষ্য। নাগরিকদের পক্ষে দাঁড়িয়ে তিনি অভিজাত শাসকচক্রের কঠোর সমালোচনা করেন।

জগৎস্বীকৃত ফরাসি সৌরভের মতোই প্রসিদ্ধ ফরাসি চিন্তা ও দর্শন। ইউরোপ কেন্দ্রিক দার্শনিক চিন্তাভাবনা, যা পশ্চিমা বিশ্বের মানসজগৎ গঠন করেছে, তাতে মূল অংশ ফরাসি, জার্মান ও ইংরেজদের। যদিও ইউরোপের আদি চিন্তাধারার বিকাশ হয়েছে প্রাচীন গ্রিক ও রোমে। তবে আধুনিক ইউরোপীয় চিন্তা ও দর্শনের সূতিকাগার ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও ব্রিটেন।

ফরাসি চিন্তাজগতে আলোদায়ী অসংখ্য দিকপালের নাম উল্লেখ করা যায়। এদের মধ্যে রুশো, দেকার্ত, রম্যাঁ রোলাঁ, ভলতেয়ার, সার্ত্র অন্যতম। ফরাসি জ্ঞানদীপ্তি আধুনিক জীবনবোধ ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার উন্মেষ ঘটায় সেদেশে, যার প্রত্যক্ষ অভিঘাতে ১৭৮৯ সালে সাম্য, মৈত্রী, স্বাধীনতার অম্লান আদর্শে সম্পন্ন হয় ঐতিহাসিক ফরাসি বিপ্লব। নির্মম বাস্তিল দূর্গ আর জীবন-সংহারী গিলোটিনের ভয় উপেক্ষা করে বিপ্লবী ফরাসি জনতা স্বৈরাচারী রাজা ষোড়শ লুইকে ক্ষমতাচ্যুত করে।

ফরাসি বিপ্লব ইউরোপ এবং নতুন বিশ্বের ওপর একটি বড় প্রভাব ফেলে মানব ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তনের নির্ণায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। এটি সামন্তবাদের অবসান ঘটায় এবং পৃথকভাবে সংজ্ঞায়িত ব্যক্তিগত মুক্তির ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের অগ্রগতির পথ প্রশস্ত করেছিল। এনেছিল গণমানুষের অধিকারের সুবাতাস। ফরাসি বিপ্লব বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়েছিল ভলতেয়ারের চিন্তা ও দর্শনের দ্বারা।

ভলতেয়ারের উদ্দেশ্য ছিল গির্জার ভণ্ডামি, মুর্খতাকে জনসন্মুখে তুলে ধরা। 
স্বৈরাচার, গির্জা তথা খ্রিস্টধর্মকে ভলতেয়ার ফ্রান্সের সার্বিক বিকাশে বাধা হিসাবে দেখতেন এবং সে কারণেই তাঁর রচনাবলী স্বদেশে নির্মমভাবে সমালোচিত হয়েছিল। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল গীর্জার ভণ্ডামি, মুর্খতাকে জনসন্মুখে তুলে ধরা। তিনি মানুষের অজ্ঞতা, মূর্খতা, প্রতারণা, অন্যায়-অবিচার, উৎপীড়নকারীকে ঘৃণা করতেন। মুসলিম ও ইহুদি ধর্ম নিয়েও তাঁর নেতিবাচক মন্তব্য রয়েছে। বিদ্রুপধর্মী লেখা ‘রিজেন্ট’-এর জন্য ভলতেয়ার বাস্তিলের কারাগারে বন্দী হন।

আঠারো শতাব্দীতে ভলতেয়ারকে ফ্রান্সের বিশিষ্টজনরা হোমার ও ভার্জিলের সমকক্ষ বলে প্রশংসা করেন। তবে ফ্রান্সের সমাজ ও রাজ পরিবারের সঙ্গে ঝামেলার কারণে ১৭২০ সালে ইংল্যান্ডে চলে যান ভলতেয়ার।

সেখানে তিনি নির্বাসন যাপন করেন। ইংল্যান্ডে ভলতেয়ার ছিলেন অখ্যাত ও অপরিচিত কবি। তাই নানা কৌশলে অভিজাত মহলের সুনজরে আসার চেষ্টা করেন তিনি। তিনি রানী ক্যারোলিনকে উদ্দেশ্য করে একটি কবিতা লেখেন। তাই ব্রিটিশ রাজ পরিবারের পক্ষ থেকে দুইশ পাউন্ড ভাতাও পেতেন।

ভলতেয়ারের সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে দুই হাজার বই ও ২০ হাজার চিঠি। সম্প্রতি তাঁর ১৪টি লেখা নতুন করে আবিষ্কৃত হয়েছে। তাঁর বিখ্যাত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো, দ্য এইজ অব লুই, এসে অন দ্য কাস্টমস এ্যান্ড দ্য স্পিরিট অব দ্য নেশনস, জাডিগ ইত্যাদি।

ফরাসি জাতির চিন্তার জগতে তাঁর প্রভাব যেমন আছে, তেমনি আছে তাঁর নিন্দা ও সমালোচনা। ফরাসি উদারনৈতিক, মুক্তমনা, ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তার সৌরভ ছড়াচ্ছেন তিনি আজও।

তথ্যসূত্র ও ছবি : উইকিপিডিয়া

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies