দার্জিলিং হিমালয়ান রেলপথ, যাকে স্নেহের সঙ্গে টয় ট্রেন বলা হয়, দার্জিলিংয়ের মিষ্টি পাহাড়ের মধ্য দিয়ে ঘুরে বেড়ায়, মনোরম দৃশ্য এবং মোহনীয়, ঝর্ঝরে শব্দ সরবরাহ করে। এই ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানটি পর্যটকদের জন্য একটি ঐতিহ্যবাহী চমক একটি রূপকথাময় পালনের প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু মনোরম চালচিত্রের নিচে একটি তিক্ত সত্য লুকিয়ে আছে: যারা দার্জিলিংকে তাদের বাড়ি বলে, তাদের জন্য এই প্রতীকী ট্রেন ক্রমবর্ধিতভাবে মহার্ঘ হয়ে উঠেছে।
টিকিটের দাম, একসময় স্থানীয়দের জন্য সাশ্রয় থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে যা আকাশচুম্বী। স্টীম ইঞ্জিনে প্রথম শ্রেণীর যাত্রায় এখন প্রায় ১,৬০০ টাকা খরচ হয়, এটি অনেক বাসিন্দার জন্য অতিরিক্ত অর্থ, যাদের দৈনিক মজুরি সংসার চলে । ডিজেল ইঞ্জিনের যাত্রা কিছুটা সস্তা, কিন্তু সাধারণ পরিবারের হাতের নাগালের বাইরে। এই মূল্য বৃদ্ধি কার্যকরভাবে টয় ট্রেনটিকে পাবলিক পরিবহনের বিকল্প থেকে পর্যটন আকর্ষণে পরিণত করেছে, এর ফলে শহরের সবচেয়ে নির্ভর যোগ্য পরিবহন আজ কার্যত ধরা ছোয়ার বাইরে।
"আমার দাদা-নানি বাজারে যেতে, আত্মীয়দের দেখতে এই ট্রেনে যেতেন," দার্জিলিংয়ের দোকানদার সোনাম লামু মনে করেন। "এখন, একটি ছোট্ট ট্রিপও আমাদের সাধ্যের বাইরে। এটা পাহাড় নিজেই আমাদের জন্য অপৌঁছনীয় হয়ে গেছে।"
ফলাফল মারাত্মক। ছাত্রদের জন্য, দূরবর্তী স্কুলে পৌঁছানোর জন্য ট্রেনটি একসময় নির্ভরযোগ্য উপায় ছিল। এখন, খরচের বাধার সাথে, শিক্ষা আরও কঠিন পথে পরিণত হয়। চাষীরা একসময় যারা তাদের ফসল সমতলে বাজারে পরিবহনের জন্য ট্রেন ব্যবহার করতেন, এখন যা একেবারেই বন্ধ এর ফলে , তাদের জীবিকা আরও সংকুচিত হয়েছে ।
চিত্র পরিষ্কার পর্যটকরা যখন ট্রেনের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হন, স্থানীয়রা এটিকে তাদের নিজের স্থানচ্যুতির প্রতীক হিসেবে দেখছে । পর্যটকদের আকর্ষণ করে এমনই চমক- ঝিমঝিম গাড়ি, ধীর গতি- সেই যুগের স্মৃতিরূপ, যখন ট্রেনটি সম্প্রদায়ের সেবা করত। এখন মুনাফার চাদরে বন্দী ধীরে ধীরে এই রেলপথ কে ক্রমশ গ্রাস করছে ব্যবসাহয়ের লোলুপ দৃষ্টি যা পাহারবাসীদের মধ্যে আর ক্ষোভ তৈরি করছে ।