মার্কসবাদ: দার্শনিক ও রাজনৈতিক জড়তার বিরুদ্ধে সংগ্রাম
মোহাম্মদ ওমিদওয়ার
মার্কসবাদ কেবল একগুঁয়ে "জড় ধারণা" নয়, বরং এটি কর্মপন্থার দিশারী, এমনই মত প্রকাশ করেছিলেন এঙ্গেলস ১৮৮৬ সালে তার চিঠিতে। তিনি সেসময় জার্মান সমাজতান্ত্রিকদের সেক্টারিয়ান কার্যকলাপের সমালোচনা করেন, যারা মার্কসবাদকে কর্মের গাইডলাইন না ভেবে স্থির, পরিবর্তনশীলতাহীন ধারণা হিসেবে গ্রহণ করেছিল।
ভূমিকা
মার্কসবাদ সম্পর্কে প্রখ্যাত দার্শনিক ও বিপ্লবী নেতা এহসান তাবারি তার লেখায় বলেছেন, “মার্কসবাদ কোনো স্থির ও অপরিবর্তনীয় ধারণার সমষ্টি নয়, এটি একটি বিজ্ঞান। এটি একটি বিকাশমান দার্শনিক ব্যবস্থা যা সাম্প্রতিককালে বিপ্লবী আন্দোলন এবং বিজ্ঞানসমূহের মাধ্যমে সমৃদ্ধ হয়েছে।"
জড়তার বিরুদ্ধে মার্কসবাদ
মার্কস, এঙ্গেলস ও লেনিন সর্বদা জড়তাকে (ডগমাটিজম) মার্কসবাদী চিন্তার শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাদের মতে, মার্কসবাদ কখনো স্থির মতবাদ নয়, বরং বাস্তব অবস্থার ভিত্তিতে পরিবর্তনশীল এক কর্মপন্থা। লেনিন তার বিখ্যাত রচনায় উল্লেখ করেন, “তত্ত্ব হলো কর্মের পথপ্রদর্শক, শুধুমাত্র ধারণাগুলোর মুখস্থ বা পুনরাবৃত্তি মার্কসবাদ নয়।”
পরিবর্তনশীল বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্য
মার্কসবাদ সাম্প্রতিক ও পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিকাশ লাভ করে। মার্কস তার বিখ্যাত গ্রন্থ "ক্যাপিটাল"-এ পুঁজিবাদের অন্তর্নিহিত বৈপরীত্য ও শোষণের ভিত্তি বিশ্লেষণ করেছেন। তার মতে, পুঁজিবাদের এই বৈপরীত্যই একদিন তার পতনের কারণ হবে। তবে মার্কস এবং এঙ্গেলস সুনির্দিষ্ট সোসালিস্ট কাঠামো নির্ধারণ করেননি, বরং পারি কমিউনের অভিজ্ঞতা থেকে দিশা দিয়েছিলেন।
দার্শনিক জড়তার ঐতিহাসিক শিকড়
"ডগমা" শব্দটির উৎপত্তি প্রাচীন গ্রিক ভাষা থেকে, যার অর্থ “অপরিবর্তনশীল বিশ্বাস।” দার্শনিক জড়তার মূল ভিত্তি হলো এমন এক ধারা যা কোনো ধারণাকে চূড়ান্ত সত্য হিসেবে গ্রহণ করে এবং তাতে সন্দেহ করার সুযোগ রাখে না।
উপসংহার
মার্কসবাদ কোনো স্থির মতবাদ নয়, এটি এক বিপ্লবী কর্মপন্থা যা পরিবর্তনশীল সমাজব্যবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে চলে। দার্শনিক জড়তার বিপরীতে এটি সত্যিকারের বিপ্লবী ধারণা, যা নতুন সমাজ গড়ার জন্য শ্রমিক শ্রেণির সংগ্রামে দিশা দেখায়।
বিস্তারিত পড়ুন তুদেহ পার্টির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে।