১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
সিঙ্গাপুর, ১৫ ফেব্রুয়ারি:আজ থেকে ঠিক ১১০ বছর আগে, ১৯১৫ সালের এই দিনে সিঙ্গাপুরের আলেকজান্দ্রা ব্যারাকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল ভারতীয় সৈন্যদের একটি দল। ইতিহাসে এটি "১৯১৫ সিঙ্গাপুর বিদ্রোহ" বা "৫ম লাইট ইনফ্যান্ট্রির বিদ্রোহ" নামে পরিচিত। বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই বিদ্রোহ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে একটি অনন্য অধ্যায় তৈরি করে ।
বিদ্রোহের কারণ:
বিদ্রোহের মূল কারণ ছিল ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর প্রতি ভারতীয় সৈন্যদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ। সৈন্যরা গুজব শুনেছিল যে তাদের হংকংয়ে না পাঠিয়ে অটোমান সাম্রাজ্যের (তুরস্ক) বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামানো হবে, যা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ছিল । এছাড়া, গদর পার্টির প্রভাবে প্ররোচিত হয়েছিল সৈন্যরা। এই দলটি ক্যালিফোর্নিয়া থেকে প্রকাশিত পত্রিকার মাধ্যমে ভারতীয়দের ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করত ।
১৯১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টায় সিপাহি ইসমাইল খান প্রথম গুলি ছুড়েন। বিদ্রোহীরা ট্যাংলিন ব্যারাকে আটক জার্মান যুদ্ধবন্দীদের মুক্ত করে এবং ব্রিটিশ অফিসার ও বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। প্রাথমিকভাবে বিদ্রোহীরা সিঙ্গাপুরের নিয়ন্ত্রণ নিলেও ফরাসি, জাপানি ও রুশ জাহাজের সহায়তায় ব্রিটিশরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ।
দমন ও প্রতিক্রিয়া:
বিদ্রোহ দমনের পর ২০৫ জনের বেশি সৈন্যকে সামরিক আদালতে বিচার করা হয়।其中 ৪৭ জনকে ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, ৬৪ জনকে আজীবন আন্দামানে নির্বাসন এবং বাকিদের কারাদণ্ড দেওয়া হয় । ব্রিটিশ সরকার স্থানীয় জনগণের মধ্যে বিদ্রোহের প্রভাব কমাতে গণমৃত্যুদণ্ডের মতো কঠোর পদক্ষেপ নেয় ।
এই বিদ্রোহ ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে নতুন প্রেরণা যুগিয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৪২ সালে সুভাষ চন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠনে এই ঘটনার প্রভাব লক্ষ্য করা যায় ।