সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের গ্রামাঞ্চলে আরেক বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। বিদেশি মদদপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর দখলদারির পর থেকে দেশটিতে একের পর এক বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদদের টার্গেট করে হত্যার ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনাটিও সেই ধারাবাহিকতায় নতুন সংযোজন।
লেবাননের আল-মায়াদিন টেলিভিশন নেটওয়ার্কের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সূত্রের বরাতে দামেস্কের রিফ দামেস্ক উপশহরের মাআরাবা গ্রামে ড. হাসান আল-ইব্রাহিমের মৃতদেহ পাওয়া যায়। তিনি সিরিয়ার হায়ার ইনস্টিটিউট অব সায়েন্টিফিক রিসার্চে শিক্ষকতা করতেন।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, ড. ইব্রাহিমকে তার কর্মস্থল থেকে পাঁচ দিন আগে অপহরণ করা হয়েছিল। পরে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। কিছু সূত্র দাবি করেছে, তিনি মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
ড. ইব্রাহিম সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় তারতুস প্রদেশের শেখ বদর জেলার একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দেশের বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের একজন সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন।
গত ডিসেম্বরে দামেস্কে আরেক বিশিষ্ট সিরিয়ান বিজ্ঞানী ড. হামদি ইসমাইল নাদি নিহত হন। উন্নত রসায়ন ও ফার্মাসিউটিক্যালসে বিশেষজ্ঞ ড. নাদি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাসায়নিক গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। তাকে তার বাসায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
এই হত্যাকাণ্ড স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক ও শিক্ষাবিদ সম্প্রদায়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
এই ঘটনাগুলো ঘটেছে হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) জঙ্গি গোষ্ঠীর সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখলের পর। গত ডিসেম্বরে তীব্র ইসরায়েলি বিমান হামলার মধ্যেই জঙ্গিরা দেশটির বিভিন্ন এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।
বুদ্ধিজীবী ও বিজ্ঞানীদের টার্গেট করে হামলার এই সিরিজ মানবাধিকার সংগঠন ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। অনেকেই এটিকে সিরিয়ার বুদ্ধিবৃত্তিক ও বৈজ্ঞানিক অবকাঠামোকে ধ্বংস করার একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।
সংকট যত গভীর হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই সহিংসতা মোকাবিলা এবং বেসামরিক নাগরিক, বিশেষ করে শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতিতে অবদান রাখা ব্যক্তিদের জীবন রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।