২০২৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভালোবাসার দিনে, দূর্গাপুরের শহর কে এক অনন্য উপহার দিলো পশ্চিম বর্ধমান জেলা ফিজিক্যাল কালচার অ্যাসোসিয়েশন। এই দিনে আয়োজিত হলো "তুসার কান্তি সরকার স্মৃতি ক্লাসিক মেন'স বডি বিল্ডিং অ্যান্ড মেন'স ও উইমেন'স ফিজিক চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫"। এই মেগা ইভেন্টটি জংশন মল, সিটি সেন্টার, দূর্গাপুরে অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শহরবাসী শুধু ভালোবাসার দিনই উদযাপন করেনি, বরং ফুলওয়ামা ঘটনার বর্ষপূর্তিতেও শ্রদ্ধা জানিয়েছে।এই কর্মসূচি ঘিরে উন্মাদনা চোখে পড়েছে বহু তরুণ তরুণী দীর্ঘসময় ধরে এই ইভেন্ট দেখতে ভিড় করেছিল।
ইভেন্টের সূচনা ও উদ্দেশ্য
এই চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন করা হয়েছিল তুসার কান্তি সরকারের স্মৃতিকে সম্মান জানানোর জন্য। তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, যার অবদান এই অঞ্চলের ক্রীড়া ও শারীরিক সংস্কৃতিতে অপরিসীম। এই ইভেন্টের মাধ্যমে তার স্মৃতিকে অম্লান রাখার পাশাপাশি, তরুণ প্রজন্মকে শারীরিক সক্ষমতা ও স্বাস্থ্য সচেতনতা সম্পর্কে উদ্বুদ্ধ করা ছিল অন্যতম লক্ষ্য।
পশ্চিম বর্ধমান বডিবিল্ডিং সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত রায় বলেন মূলত ৪ জেলা থেকে প্রতিযোগীরা এসেছেন, বর্তমানে আর্থিক সংগতির প্রশ্নে আরো বেশি সংখ্যক প্রতিযোগীরা যুক্ত হলে এই বিভাগ আরো শক্তিশালী হবে। শহরের স্কুল গুলির সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে যাতে পড়ুয়ারা দের শারীরিক সুস্থতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে। বর্তমানে ডিজিটাল যুগে পড়ুয়াদের মাঠমুখী করানোর ক্ষেত্রে একাধিক কর্মসূচি নিতে হবে। তিনি জোর দেন এই ধরণের ইভেন্ট শুধু সুস্থতা আনবে না মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক সীমা দত্ত চ্যাটার্জি বলেন, "আজকের দিনটি শুধু ভালোবাসার নয়, দেশের বীর সন্তানদের স্মরণ করারও দিন। আমরা তাদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। ফুলওয়ামা ঘটনার বর্ষপূর্তিতে আমরা তাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করছি এবং তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।"
প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার
এই চ্যাম্পিয়নশিপে পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার প্রতিযোগীরা অংশ নিয়েছেন। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিল তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা। প্রথম স্থানাধিকারীকে ৪,০০০ টাকা, দ্বিতীয় স্থানাধিকারীকে ৩,০০০ টাকা এবং তৃতীয় স্থানাধিকারীকে ২,০০০ টাকা পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়াও, চ্যাম্পিয়ন অফ চ্যাম্পিয়নস এবং বেস্ট পোজারকেও বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের শারীরিক সক্ষমতা, শক্তি এবং সৌন্দর্য্য বিচার করা হয়। এই ইভেন্টটি শুধু প্রতিযোগিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল একটি উৎসবের মতো, যেখানে শহরবাসী একত্রিত হয়ে শারীরিক সংস্কৃতি ও স্বাস্থ্য সচেতনতা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।
ফুলওয়ামা ঘটনার বর্ষপূর্তি
এই ইভেন্টের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল ফুলওয়ামা ঘটনার বর্ষপূর্তি। এই দিনে শহরবাসী দেশের বীর সন্তানদের স্মরণ করে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। ফুলওয়ামা ঘটনা ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যেখানে দেশের বীর সন্তানরা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। এই দিনে তাদের স্মরণ করা এবং তাদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানানো ছিল এই ইভেন্টের অন্যতম উদ্দেশ্য।
সমাপ্তি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এই আয়োজনের মাধ্যমে শহরবাসী এক অনন্য অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন এবং দেশের বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। পশ্চিম বর্ধমান জেলা ফিজিক্যাল কালচার অ্যাসোসিয়েশন এই ধরনের আয়োজন অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। সংস্থার নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিরা বলেছেন যে, ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে এই ধরনের ইভেন্ট আয়োজন করা হবে, যাতে আরও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করতে পারেন এবং শারীরিক সংস্কৃতি ও স্বাস্থ্য সচেতনতা সম্পর্কে জানতে পারেন।
ভালোবাসার দিনে আয়োজিত এই চ্যাম্পিয়নশিপ শুধু একটি প্রতিযোগিতাই ছিল না, বরং এটি ছিল একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসব। এই ইভেন্টের মাধ্যমে শহরবাসী একত্রিত হয়ে শারীরিক সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং দেশের বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ পেয়েছেন। পশ্চিম বর্ধমান জেলা ফিজিক্যাল কালচার অ্যাসোসিয়েশন এই ধরনের আয়োজন অব্যাহত রাখার আশা ব্যক্ত করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে এই ধরনের ইভেন্ট আয়োজন করার পরিকল্পনা করেছে।