নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টের আমেরিকার বিদেশি সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (USAID) বড় ধরনের অস্থিরতার সম্মুখীন হয়েছে। সংস্থার ওয়েবসাইট বন্ধ, এক্স অ্যাকাউন্ট স্থগিত এবং সদর দপ্তর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কর্মীদের বাড়িতে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের নবগঠিত "ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি"র প্রধান ইলন মাস্ক USAID-কে “অপরাধমূলক সংস্থা” বলে অভিহিত করেছেন এবং ঘোষণা করেছেন, “আমরা এই সংস্থাকে বন্ধ করে দিচ্ছি।” এর কিছুক্ষণ পরেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ঘোষণা করেন যে, তিনি USAID-এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন এবং সংস্থার কার্যক্রম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তরের ইঙ্গিত দেন।
গণমাধ্যমের উপর প্রভাব
এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পরপরই বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম সংস্থা, যারা মার্কিন সহায়তায় নির্ভরশীল, তাদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা এবং অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সহায়তাকারী এনজিও এবং ছোট ছোট সংবাদমাধ্যম, যারা কঠোর পরিবেশে কাজ করে।
Reporters Without Borders (RSF)-এর মার্কিন নির্বাহী পরিচালক ক্লেটন উইমার্স বলেছেন:
“এই সহায়তা স্থগিতের ফলে গণমাধ্যম, স্বচ্ছতা এবং গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার প্রকল্পগুলো স্থগিত হয়েছে। এটি স্বতন্ত্র সাংবাদিকতাকে আরও বিপদে ফেলে দিচ্ছে এবং স্বৈরশাসকদের হাতে সুযোগ করে দিচ্ছে।”
ইউক্রেনের গণমাধ্যমে প্রভাব
ইউক্রেনে USAID-ই প্রধান দাতা। এখানে ৯০% সংবাদমাধ্যম আন্তর্জাতিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল। অনেক স্থানীয় গণমাধ্যম ইতোমধ্যেই তাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছে এবং বিকল্প সমাধানের সন্ধান করছে।
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ
বিশ্বজুড়ে মিডিয়া সংস্থাগুলো অর্থায়ন সংকটের মুখোমুখি। বিশেষ করে ইউক্রেনের মতো যুদ্ধ-প্রভাবিত দেশে, যেখানে দাতা সহায়তা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।
এই সহায়তা স্থগিতের সময়কাল সরকারীভাবে ৯০ দিন উল্লেখ করা হয়েছে, তবে অনেকেই আশঙ্কা করছেন এটি দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে।
RSF-এর আহ্বান
RSF আন্তর্জাতিক জনসাধারণ এবং ব্যক্তিগত দাতাদের প্রতি আবেদন জানিয়েছে যেন তারা স্বাধীন গণমাধ্যমের টিকে থাকার জন্য সহায়তায় এগিয়ে আসে।
মার্কিন সহায়তা স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যম স্বাধীনতার উপর বড় আঘাত হেনেছে। দ্রুত বিকল্প অর্থায়ন না পেলে অনেক গণমাধ্যম তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে।

