নয়াদিল্লি, ১ জুলাই, ২০২৫:
আজ ভারতের জাতীয় ডাক্তার দিবস। এই দিনে দেশ গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে মহান চিকিৎসক, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও জনসেবক ড. বিধান চন্দ্র রায়কে। তাঁর অসামান্য চিকিৎসা দক্ষতা ও রাষ্ট্রনেতারূপী বর্ণাঢ্য জীবনের অন্যতম এক অনবদ্য ঘটনা হলো—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির সঙ্গে তাঁর ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় একটি সাবমেরিন দুর্ঘটনায় পিঠে চোট পান কেনেডি, যার যন্ত্রণা তাকে আজীবন ভোগাতে থাকে। সেই ব্যথার উপশমের আশায় প্রেসিডেন্ট কেনেডি নিজেই অনুরোধ জানান ড. রায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য। হোয়াইট হাউসে তখনকার প্রেসিডেন্টের চিকিৎসক দলও এই সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন।
ড. রায় শুধু একজন রাজনীতিক ছিলেন না, ছিলেন দেশবরেণ্য চিকিৎসকও। তিনি প্রেসিডেন্টের শারীরিক পরীক্ষা করে ওষুধ ও চিকিৎসার পথনির্দেশ দেন, যার ফলে কেনেডির পিঠের ব্যথা অনেকটাই সেরে যায়। এই অভিজ্ঞতার পর কেনেডি নিজ হাতে ড. রায়কে চিঠি লিখে কৃতজ্ঞতা জানান এবং বলেন, “রায়ের মতো বয়সে আমিও যেন এতটাই কর্মক্ষম থাকি।”
কিন্তু শুধু চিকিৎসা নয়, এই সফরে ড. রায় তাঁর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের পরিচয় দেন। তিনি বাংলার নগর উন্নয়ন, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ও অর্থনৈতিক সহায়তা নিয়ে আমেরিকার নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। তাঁর উদ্যোগেই রাষ্ট্রপুঞ্জ ও আমেরিকার কাছ থেকে পশ্চিমবঙ্গের জন্য আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি আদায় হয়।
আজ যখন সারা ভারতবর্ষ ডাক্তারদের সম্মান জানাচ্ছে, তখন ড. বিধান চন্দ্র রায়ের মতো একজন চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ ও দূরদর্শী রাষ্ট্রনেতার স্মৃতি আমাদের গর্বিত করে তোলে। তিনি ছিলেন সেই বিরল মানুষ, যিনি রোগীর চিকিৎসাও করেছেন, আবার রাজ্যের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও একহাতে সাজিয়েছেন।