কেরালা হাইকোর্টের রায়: ২০০৪ পরে মৃত হিন্দু পরিবারের কন্যাদের পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকার
৮ জুলাই, ২০২৫: কেরালা হাইকোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ে ঘোষণা করেছে যে, ১৯৭৫ সালের কেরালা জয়েন্ট হিন্দু ফ্যামিলি সিস্টেম (অ্যাবোলিশন) আইনের ৩ এবং ৪ ধারা ২০০৫ সালের হিন্দু সকসেশন (সংশোধন) আইনের ৬ ধারার সঙ্গে বিরোধী, ফলে এই ধারাগুলো আর কার্যকর নয়। এই রায়ের ফলে ২০০৪ সালের ২০ ডিসেম্বরের পর মৃত হিন্দু পিতার কন্যাদের পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকার পাওয়া সম্ভব হয়েছে। এই রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ১৯৭৫ সালের আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি পৈতৃক সম্পত্তিতে জন্মের অধিকার দাবি করতে পারবে না, এবং ৪ ধারা অনুযায়ী হিন্দু অবিভক্ত পরিবার কেরালায় পার্টিশন হিসেবে বিবেচিত হয়ে টেনেন্সি-ইন-কমন-এ রূপান্তরিত হয়। তবে এই বিধিনিষেদগুলোর কারণে হিন্দু কন্যাদের ২০০৫ সালের সংশোধনী আইন অনুযায়ী সমান কো-পারসিনারি অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ছিল। কোর্টের এই রায় কেরালায় একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে, যেখানে ১৯৭৫ সালের রাজ্য আইন ২০০৫ সালের কেন্দ্রীয় আইনের সুবিধা থেকে কন্যাদের বঞ্চিত করছিল। রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০০৫ সালের সংশোধনী আইনের কার্যকাল শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কেরালার কন্যাদের পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অংশ পাওয়ার অধিকার প্রদান করা হয়েছে, তবে এটি ২০০৪ সালের ২০ ডিসেম্বরের আগে সম্পন্ন কোনো পার্টিশনের উপর প্রভাব ফেলবে না। এই মামলায় একটি পার্টিশন স্যুট থেকে উদ্ভূত প্রশ্নের সমাধান করা হয়েছে, যেখানে কন্যারা তাদের বাবার পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকারের দাবি করেছিলেন। কোর্টের এই রায় ২০২০ সালের সুপ্রিম কোর্টের ভিনীতা শর্মা বনাম রাকেশ শর্মা রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেখানে কন্যাদের জন্ম থেকেই কো-পারসিনারি অধিকার স্বীকৃত হয়। এটি কেরালা হাইকোর্টের পূর্ববর্তী কিছু রায়ের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করে, যেমন চেল্লাম্মা কামলাম্মা বনাম নারায়ণ পিল্লাই (১৯৯৩)। কোর্টের মতে, ২০০৫ সালের সংশোধনী আইনের মাধ্যমে পার্লামেন্ট পুরো বিষয়টির উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে, ফলে রাজ্যের আইন যেহেতু কেন্দ্রীয় আইনের সঙ্গে বিরোধী, তা কার্যকর থাকতে পারে না। এই রায় জোর দেয় যে, পিতা পুরো পৈতৃক সম্পত্তি একজন উত্তরাধিকারীকে দান করতে পারবেন না, কারণ আইন অনুযায়ী সকল বৈধ উত্তরাধিকারী, সহ কন্যাদের মধ্যে সমান ভাগ বণ্টন করা বাধ্যতামূলক।