" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory কেরালার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভি.এস. অচ্যুতানন্দনকে শেষ শ্রদ্ধা: এক যুগের অবসান এবং কমিউনিস্ট সংস্কৃতির অনন্য প্রতিচ্ছবি Public Mourning for V.S. Achuthanandan: A Century of Influence Ends in Kerala //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

কেরালার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভি.এস. অচ্যুতানন্দনকে শেষ শ্রদ্ধা: এক যুগের অবসান এবং কমিউনিস্ট সংস্কৃতির অনন্য প্রতিচ্ছবি Public Mourning for V.S. Achuthanandan: A Century of Influence Ends in Kerala

 


তিরুবনন্তপুরম, ২১ জুলাই ২০২৫: কেরালার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রবীণ সিপিআই(এম) নেতা ভি.এস. অচ্যুতানন্দন, যিনি ১০১ বছর বয়সে আজ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন, তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে লক্ষাধিক মানুষের ঢল নেমেছে। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর এক মাস ধরে আইসিইউতে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে তিনি হার মানলেন। তাঁর শতায়ু জীবন ছিল সংগ্রাম, আপোষহীন নীতি এবং জনমুখী কাজের এক জীবন্ত দলিল। শারীরিক অসুস্থতা এবং বয়সের ভারে নুব্জ হলেও তাঁর প্রভাব কেরালাবাসীর মনে ছিল অটুট, যা আজকের এই বিশাল জনসমাগমে পুনরায় প্রমাণিত হলো।

এক দীর্ঘ এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক জীবন

১৯২৪ সালের ২০শে অক্টোবর আলাপুঝার এক সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণকারী অচ্যুতানন্দন, যিনি 'ভিএস' নামেই পরিচিত ছিলেন, কৈশোরেই কমিউনিস্ট আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯৪০ সালে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হওয়ার পর থেকে তাঁর আট দশকের রাজনৈতিক জীবন ছিল অসংখ্য উত্থান-পতনের সাক্ষী। ১৯৪৬ সালের ঐতিহাসিক পুন্নাপ্রা-ভায়ালার বিদ্রোহ থেকে শুরু করে কেরালায় কৃষক ও শ্রমিক আন্দোলনের ভিত্তিস্থাপনে তাঁর অবদান ছিল অপরিসীম। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।



২০০৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি কেরালার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।1 ৮২ বছর বয়সে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে তিনি ভারতের অন্যতম প্রবীণ মুখ্যমন্ত্রীর খেতাব অর্জন করেন। তাঁর আমলে কেরালায় বেশ কিছু যুগান্তকারী সংস্কারমূলক কাজ হয়েছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল মুন্নার ভূমি পুনরুদ্ধার অভিযান, যেখানে অবৈধভাবে দখল করা হাজার হাজার একর জমি পুনরুদ্ধার করা হয়। সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ-এর ২০১০ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, তাঁর এই দৃঢ় পদক্ষেপের ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ভূমির সহজলভ্যতা ১৫% বৃদ্ধি পেয়েছিল, যা ছিল তাঁর জনমুখী নীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। দুর্নীতি দমন, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং মহিলাদের অধিকারের প্রশ্নে তিনি ছিলেন আপোষহীন, এমনকি নিজের দলের অভ্যন্তরেও তিনি প্রয়োজনে সমালোচনামূলক অবস্থান নিতে দ্বিধা করেননি।

কেরালার অনন্য কমিউনিস্ট সংস্কৃতি

তাঁর প্রয়াণে কেরালার রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে এক কিংবদন্তীর অবসান ঘটলো। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের নেতৃত্বে রাজ্যের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ মানুষ তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সমবেত হয়েছিলেন। ভিএস-এর মরদেহ তিরুবনন্তপুরমের একেজি সেন্টার এবং সচিবালয়ের দরবার হলে জনসাধারণের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য রাখা হয়েছিল। এরপর আলপুঝায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় ও দলীয় মর্যাদায়। এই বিশাল জনজোয়ার এবং রাষ্ট্রীয় সম্মান কেরালার এক স্বতন্ত্র কমিউনিস্ট সংস্কৃতির পরিচায়ক। বিশ্বজুড়ে যেখানে কমিউনিস্ট আদর্শের প্রতি মানুষের আকর্ষণ কমছে এবং ভোটার সংখ্যাও হ্রাস পাচ্ছে, সেখানে কেরালায় কমিউনিস্ট নেতাদের প্রয়াণকে ঘিরে এমন বিশাল শোকযাত্রা এক ভিন্ন বার্তা বহন করে। ২০২৩ সালের পলিটিক্যাল সায়েন্স রিভিউ-এর একটি নিবন্ধে বিশ্বজুড়ে কমিউনিস্ট ভোটার বেস হ্রাসের কথা উল্লেখ করা হলেও, কেরালা যেন এই প্রবণতার ব্যতিক্রম। ভিএস অচ্যুতানন্দনের প্রতি এই অগাধ শ্রদ্ধা প্রমাণ করে যে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক এবং জনমুখী কাজের মধ্য দিয়ে একজন নেতা কীভাবে সময়ের সীমা পেরিয়ে অমর হয়ে থাকতে পারেন।



ভিএস অচ্যুতানন্দন শুধু একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন কেরালার রাজনৈতিক চেতনার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁর জীবন ও কর্ম কেরালাবাসীর জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। তাঁর প্রয়াণ সিপিআই(এম) এবং সমগ্র কেরালা রাজ্যের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies