" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory শিলিগুড়ির ভক্তিনগরে 'প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে'র আড়ালে নারী পাচার: এক বিভীষিকাময় সত্যের উন্মোচন Under the Guise of a 'Training Center,' a Horrific Human Trafficking Ring Uncovered in Siliguri's Bhaktinagar //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

শিলিগুড়ির ভক্তিনগরে 'প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে'র আড়ালে নারী পাচার: এক বিভীষিকাময় সত্যের উন্মোচন Under the Guise of a 'Training Center,' a Horrific Human Trafficking Ring Uncovered in Siliguri's Bhaktinagar

 



শিলিগুড়ি, ২৪ জুলাই: উত্তরবঙ্গের সবুজ চা বাগান আর শান্ত গ্রামগুলির আড়ালে যে এক ভয়াল চিত্র লুকিয়ে ছিল, তা সম্প্রতি শিলিগুড়ির ভক্তিনগরে উন্মোচিত হয়েছে। একটি তথাকথিত 'প্রশিক্ষণ কেন্দ্র'-এর মুখোশের আড়ালে চলছিল নারী পাচারের এক অমানবিক ব্যবসা। গত সোমবার গভীর রাতে নিউ জলপাইগুড়ি (NJP) স্টেশন থেকে ৫৬ জন অসহায় তরুণীকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, যখন তারা পাচারকারীদের লোভনীয় ফাঁদে পা দিয়ে এক অজানা ভবিষ্যতের দিকে যাত্রা করছিল।

এই ঘটনা কেবল একটি খবর নয়, এটি উত্তরবঙ্গের হতদরিদ্র পরিবারগুলির বুকে বয়ে চলা দীর্ঘশ্বাস, একরাশ স্বপ্নভঙ্গের আর্তনাদ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই পাচার চক্র চা শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকার চরম আর্থিক সংকটকে কাজে লাগাতো। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারের মতো পিছিয়ে পড়া জেলাগুলির ১৮ থেকে ৩১ বছর বয়সী মেয়েদের টার্গেট করা হতো। তাদের সামনে তুলে ধরা হতো বেঙ্গালুরুর ঝলমলে কর্পোরেট জগতের স্বপ্ন – ভালো বেতনে মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরির হাতছানি। কিন্তু সেই স্বপ্ন ছিল এক বিভীষিকার প্রলোভন।

সোমবার রাতে নিউ জলপাইগুড়ি-পাটনা ক্যাপিটাল এক্সপ্রেসে যখন এই ৫৬ জন তরুণীকে পাচার করা হচ্ছিল, রেলকর্মীদের তীক্ষ্ণ নজর সেই অমানবিকতার পর্দা ফাঁস করে। এত বড় সংখ্যক তরুণী একসাথে, টিকিট বা কোনো বৈধ নথি ছাড়া, এবং তাদের হাতে কোচ ও বার্থ নম্বর স্ট্যাম্প করা দেখে সন্দেহ জাগে। পাচারকারীরা, যাদের মধ্যে এক পুরুষ ও এক মহিলা ছিল, চাকরির প্রতিশ্রুতি বা বিহারে পাঠানোর কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ দেখাতে পারেনি। এই পাচারের মূল হোতা, চন্দ্রিমা করকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার 'প্রশিক্ষণ কেন্দ্র' আসলে ছিল নারী পাচারের এক সুপরিকল্পিত জাল, যা সরকারি অনুমতির ভুয়ো কাগজ দেখিয়ে এই ঘৃণ্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল।

এই ঘটনা শুধু আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্ন নয়, এটি সমাজের বিবেকের উপর এক চাবুক। বামপন্থী দলগুলি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, যখন রাজ্যের সরকার উন্নয়নের গান গাইছে, তখনই রাজ্যের গভীর আর্থিক সংকটকে কাজে লাগিয়ে নারীদের সম্ভ্রম নিয়ে ব্যবসা চলছে। তাদের অভিযোগ, শুধু সরকারি অনুদান বা ভাতা দিয়ে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। কর্মসংস্থানহীনতা, দারিদ্র্য এবং মৌলিক অধিকারের অভাবই এই ধরনের অপরাধের জন্ম দিচ্ছে। বাম নেতৃত্ব প্রশ্ন তুলেছে, পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগায় কীভাবে এত বড় একটি চক্র বছরের পর বছর ধরে সক্রিয় থাকতে পারল? তাদের মতে, পাচারকারীদের সুবিস্তৃত জাল এবং বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা বা ক্ষেত্রবিশেষে যোগসাজশের দিকেই ইঙ্গিত করে।

উদ্ধারকৃত তরুণীদের পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তাদের মনে যে ক্ষত তৈরি হলো, তা হয়তো কোনোদিনও শুকাবে না। এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, অন্ধকার পথের পাচারকারীরা সর্বদা দুর্বলতমদের খুঁজে বেড়ায়। রেলওয়ে পুলিশ (GRP) এবং রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনী (RPF) যৌথভাবে এই পাটচক্রের গভীরে প্রবেশ করতে তদন্ত চালাচ্ছে। সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা এবং প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপই পারে এই অমানবিক চক্রকে রুখে দিতে। নয়তো, আগামী দিনে আরও কত চন্দ্রিমা কররা এই অসহায়ত্বের সুযোগ নেবে, তা ভেবেই বুক কেঁপে ওঠে।

এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য, আপনি নিম্নলিখিত নিবন্ধগুলি দেখতে পারেন:

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies