নয়াদিল্লি: অভিনয় জীবনের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এবার রাজনৈতিক জীবনের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলেন কিংবদন্তি অভিনেতা কমল হাসান। শুক্রবার (২৫ জুলাই, ২০২৫) রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন তিনি। এই শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে একজন জনপ্রিয় তারকা থেকে পুরোদস্তুর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে তার রূপান্তর প্রতিফলিত হলো। তার দল মক্কল নিধি মইয়ম (MNM)-এর ডিএমকে-এর সঙ্গে জোটের ফলেই এই রাজনৈতিক উত্তরণ সম্ভব হয়েছে, যা তাকে গত ১২ জুন, ২০২৫-এ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে সাহায্য করেছে।
কমল হাসানের হাতে লেখা একটি বিবরণে তার রাজনৈতিক দর্শন স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। তিনি সেখানে কেন্দ্রিকতা এবং তামিলনাড়ুর প্রতিনিধিত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তার এই পদক্ষেপ ১৯৬২ সালে রাজ্যসভায় যোগদানকারী সি.এন. আন্নাদুরাইয়ের রাজনৈতিক উত্থানের কথা মনে করিয়ে দেয়, যিনি পরে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। এটি ভারতীয় রাজনীতিতে একটি ঐতিহাসিক ধারাকে ইঙ্গিত করে, যেখানে উচ্চকক্ষ থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্ব বিকশিত হয়েছে।
জাতীয় ঐক্য এবং সাংবিধানিক মূল্যবোধের প্রতি তার অঙ্গীকারের বিষয়টি তার বিবৃতিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। 'জার্নাল অফ পলিটিক্যাল স্টাডিজ'-এর একটি ২০২১ সালের গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভারতীয় সংসদে আঞ্চলিক নেতারা প্রায়শই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার ওপর জোর দেন, যা নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের বিতর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
কমল হাসান ২০১৮ সালে তার দল মক্কল নিধি মইয়ম গঠন করার পর থেকে আঞ্চলিক রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ডিএমকে-এর সঙ্গে তার দলের কৌশলগত জোট তাকে জাতীয় রাজনীতির মূলস্রোতে নিয়ে এসেছে। এটি তার রাজনৈতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
শপথ গ্রহণের এই মুহূর্তটি ভারতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের মধ্যে ঘটেছে, যা ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫ থেকে শুরু হয়ে মে মাসের প্রথম দিক পর্যন্ত চলে। এই সময়ে অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে। এমন এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে কমল হাসানের মতো একজন তারকা ব্যক্তিত্ব, যিনি তামিল সিনেমায় সিজিআই (CGI) প্রযুক্তির মতো উদ্ভাবনের জন্য পরিচিত, তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
কমল হাসানের শপথ গ্রহণ উপলক্ষে জন ব্রিটাসের একটি পোস্টও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জন ব্রিটাস একজন অত্যন্ত সক্রিয় সংসদ সদস্য, যার ডিবেটে অংশগ্রহণের সংখ্যা ৮৮৯, যা জাতীয় গড় ৯০.৩-এর তুলনায় অনেক বেশি। তার এই স্বাগত বার্তাটি বিরোধী জোটের মধ্যে একটি সম্ভাব্য সহযোগিতামূলক এজেন্ডার ইঙ্গিত বহন করে।