দুর্গাপুর: সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং বিজ্ঞানের গবেষণায় সহায়তার বার্তা নিয়ে দুর্গাপুরে অনুষ্ঠিত হলো দ্বিতীয় বর্ষের রক্তদান, মরনোত্তর দেহদান ও চক্ষুদান শিবির। প্রয়াত শ্রী দিলীপ কুমার চৌধুরী এবং শ্রীমতী শুক্লা চৌধুরীর স্মতিতে এই শিবিরের আয়োজন করা হয়।
১২ অক্টোবর ২০২৩ (রবিবার), সকাল ১০টা থেকে আর.আর.এ ভল্ড, এ.বি.এল টাউনশিপ, দুর্গাপুর - ৫ এ এই মানবিক উদ্যোগের কেন্দ্র ছিল। এদিনের কার্যক্রমে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল, ভলান্টিয়ার ব্লাড ডোনার্স ফোরাম, দুর্গাপুর এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ, আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বোস বিজ্ঞান কেন্দ্র, দুর্গাপুরের সক্রিয় সহযোগিতা ছিল।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, এদিনের শিবিরে মোট ৩০ জন স্বেচ্ছায় রক্তদাতা রক্তদান করেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল মরনোত্তর দেহদান ও চক্ষুদানের অঙ্গীকার। প্রয়াত দিলীপ কুমার চৌধুরীর মরনোত্তর দেহদানের সিদ্ধান্তকে অনুসরণ করে, তাঁর পরিবার এবং আয়োজকরা এই বছর দ্বিতীয় বারের মতো এই শিবিরের আয়োজন করেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁদের বাবার সিদ্ধান্তের অনুপ্রেরণায় ইতিমধ্যেই প্রায় ৭০ জন মানুষ দেহদানের অঙ্গীকার করেছেন। এই দিনের অনুষ্ঠানেও নতুন করে ১০ জন ব্যক্তি মরনোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করেন।
প্রয়াত দিলীপ কুমার চৌধুরীর ছেলে সংবাদমাধ্যমকে জানান, তাঁর বাবা এ.বি.এল কারখানায় কাজ করতেন এবং ১৯৯৮ সালে স্বেচ্ছাবসর নেন। তিনি সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাবার সেই সমাজসেবার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতেই দ্বিতীয় বছর ধরে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি দুর্গাপুরবাসীর কাছে আহ্বান জানান, "দেহদান করুন, কারণ দেহ পুড়িয়ে বা কবর দিয়ে সমাজের কোনো কাজে লাগবে না। দেহদান হলো জীবনের সর্বশেষ দান। এটি বিজ্ঞানের কাজে, মেডিক্যাল সায়েন্সের গবেষণায় ব্যবহৃত হবে এবং নতুন ডাক্তার তৈরি হবে। সমাজের জন্য জীবনের শেষ দিনে কিছু দিয়ে যান।"
এছাড়াও, সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা হিসাবে, পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের উদ্যোগে এই দিন একটি সাহায্য বাক্স রাখা হয়, যেখানে ইচ্ছুক সকলে দুর্গতদের জন্য সাহায্য করতে পারেন।
অনুষ্ঠানে রক্তদান ও দেহদানের গুরুত্ব তুলে ধরে চিত্রশিল্পী সংগঠন ‘সৃষ্টি ডাইমেনশন’ তাদের শিল্পকর্মের মাধ্যমে বার্তা দেয়।