মাথাভাঙ্গার কেদারহাটে শোকের ছায়া; নিহত দয়ারামের পাশে বাম নেতৃত্ব
মাথাভাঙ্গা (কোচবিহার): গভীর শোক আর বেদনার এক আবহে আজ স্তব্ধ মাথাভাঙ্গার কেদারহাট গ্রাম। প্রকৃতির রুদ্ররোষে, বন্যার করাল গ্রাসে এই গ্রাম থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে এক নিরীহ প্রাণ – ৮৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ দয়ারাম বর্মনের জীবন। বন্যার জলের তোড়ে তাঁর অসহায় তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য এখনও এলাকার মানুষের চোখে জল আনে।
বাম নেতৃত্বের মানবিক স্পর্শ
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর আজ শোকাহত পরিবারটির পাশে দাঁড়ালেন সিপিআই(এম)-এর শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের রাজ্যস্তরে পরিচিত মুখ কমরেড মীনাক্ষী মূখার্জী, যিনি এই রাজ্যের যুব সমাজের প্রতিবাদের মুখ, আজ সশরীরে উপস্থিত হলেন দয়ারাম বর্মনের ভাঙা কুটিরে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা সম্পাদক কমরেড অনন্ত রায় ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বাড়িতে পা রাখতেই এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সম্মুখীন হলেন তাঁরা। শোকে পাথর দয়ারাম বর্মনের স্বজনেরা, চোখের জলও যেন শুকিয়ে গেছে তাঁদের। কমরেড মীনাক্ষী মূখার্জী গভীর সহানুভূতি নিয়ে কথা বললেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রী হিসাবে নয়, বরং একজন সহমর্মী মানুষ হিসাবে তিনি শোনেন তাঁদের অসহায়তার কথা, বন্যার কারণে ভিটেমাটির ক্ষয়ক্ষতির বর্ণনা।
"এ শুধু মৃত্যু নয়, গাফিলতির ফল"
কমরেড মূখার্জী বলেন, "এ শুধু এক মৃত্যু নয়, এ যেন আমাদের সমাজের প্রতি অবহেলা আর গাফিলতির ফল। কেন এই বৃদ্ধকে এভাবে অকালে চলে যেতে হলো? এর দায় কে নেবে? সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে এই ছেলেখেলা আর কতদিন চলবে?" তাঁর কণ্ঠে ছিল ক্ষোভের পাশাপাশি গভীর মানবিক আর্তি। তিনি দাবি করেন, যথাযথ সরকারি পদক্ষেপ থাকলে হয়তো এই মর্মান্তিক মৃত্যু এড়ানো যেত।
জেলা সম্পাদক কমরেড অনন্ত রায় পরিবারকে জানান, তাঁদের দল সবরকমভাবে এই অসহায় পরিবারটির পাশে থাকবে। সরকার এবং প্রশাসনের কাছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসনের জোরালো দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি দলীয় স্তরেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে।
নেতৃত্বের এই আগমন কেবল রাজনৈতিক সৌজন্যতা ছিল না, তা ছিল নিছক সহমর্মিতার এক উষ্ণ স্পর্শ। দয়ারাম বর্মনের পরিবারের কান্নার আওয়াজ যেন প্রকৃতির কাছে মানুষের অসহায়তারই করুণ আর্তি, যা রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহতার এক নীরব দলিল।