দুর্গাপুর, পশ্চিমবঙ্গ: আই কিউ সিটি মেডিক্যাল কলেজের নির্যাতিতা ডাক্তারি পড়ুয়ার সাথে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে চরম বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ, উগ্রপন্থী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত এবং বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সারেঙ্গীকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য সরকার নির্যাতিতার সাথে দেখা করার সুযোগ দিলেও, অভয়া মঞ্চ এবং পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও চিকিৎসক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, গতকাল ওড়িশার সাংসদ প্রতাপ সারেঙ্গী আই কিউ সিটি হাসপাতালে গিয়ে নির্যাতিতার সাথে দেখা করেন। কিন্তু এর বিপরীতে, নারী নিরাপত্তা ও চিকিৎসকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন যখন নির্যাতিতার পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন, তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের প্রবেশে বাধা দেয় বলে অভিযোগ।
সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগটি উঠেছে নির্যাতিতার বাবাকে ঘিরে। অভয়া মঞ্চের প্রতিনিধিদের দাবি, যখন তাঁরা নির্যাতিতার বাবার সাথে দেখা করে তাঁকে মানসিক সমর্থন জানাতে চেয়েছিলেন, তখন "বিজেপি ও আরএসএস-এর 'দুর্গা' মমতা ব্যানার্জির পুলিশ" সেই সাক্ষাতে বাধা দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে আরএসএস-এর মধ্যস্থতায় এক "সেটিং" চলছে, যার ফলস্বরূপ একজন বিতর্কিত নেতাকে প্রবেশাধিকার দেওয়া হলো, অথচ ন্যায্য বিচার ও সামাজিক সমর্থনের জন্য আসা প্রতিনিধিদের আটকে দেওয়া হলো।
প্রশ্ন উঠছে: এক গুরুতর অপরাধের শিকারের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে কি রাজনীতির স্বার্থ দেখা হচ্ছে? ন্যায়বিচারের দাবি যেখানে সবার আগে থাকা উচিত, সেখানে কেন একপক্ষের প্রবেশে বাধা এবং অন্যপক্ষের প্রতি নমনীয়তা? এই ঘটনায় রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের "সেটিং" তত্ত্ব নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। নির্যাতিতার পরিবার ও ন্যায়বিচার প্রত্যাশী সাধারণ মানুষ এখন শঙ্কিত: নায্য বিচারের আশা তবে কি আবারও বিশ বাঁও জলে?f