ওয়াশিংটন ডিসি:
মার্কিন সেনেটে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈশ্বিক শুল্ক (global tariffs) আরোপের জন্য ঘোষিত জাতীয় জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের লক্ষ্যে আনা একটি যুগান্তকারী প্রস্তাব এস.জে. রেজ. ৮৮ (S.J. Res. 88) ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে ৫১-৪৭ ভোটে পাশ হয়েছে। এই ফলাফল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে কংগ্রেসে একটি বিরল দ্বিদলীয় নিন্দার (bipartisan rebuke) নজির তৈরি করেছে।
বিরল দ্বিদলীয় প্রতিবাদ
এই দ্রুতগতির সিদ্ধান্তে চারজন প্রভাবশালী রিপাবলিকান সিনেটর ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়ে দলীয় নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানান। তাঁরা হলেন:
১. মিচ ম্যাককনেল (Mitch McConnell, কেনটাকি)
২. স্যুসান কলিন্স (Susan Collins, মেইন)
৩. লিসা মারকোস্কি (Lisa Murkowski, আলাস্কা)
৪. র্যান্ড পল (Rand Paul, কেনটাকি)
এই চার সিনেটর ডেমোক্র্যাট ককাসের সঙ্গে যোগ দিয়ে ট্রাম্পের বিশ্বজুড়ে শুল্ক আরোপের নীতির বিরুদ্ধে জিওপি-র (GOP) মধ্যে উল্লেখযোগ্য অসন্তোষের ইঙ্গিত দিয়েছেন। কানাডা এবং ব্রাজিলের উপর শুল্ক আটকানোর অনুরূপ ভোটের পরে এটি ছিল রিপাবলিকানদের মধ্যে ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে তৃতীয়বারের মতো বড় আকারের প্রতিরোধ।
প্রতীকী জয় ও বাধা
এস.জে. রেজ. ৮৮ মূলত ট্রাম্পের ‘লিবেরেশন ডে’ (Liberation Day) নামে ঘোষিত জরুরি অবস্থা বাতিলের জন্য আনা হয়েছে, যা ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের ওপর ১০% বেসিক শুল্ক এবং উচ্চ হার ভিত্তিক প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল।
তবে, এই প্রস্তাবটি আইন হিসেবে কার্যকর হতে হলে হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস (House of Representatives)-এর অনুমোদন এবং প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষর প্রয়োজন। যেহেতু হাউস এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বর্তমানে শুল্ক নীতির পক্ষে অবস্থান করছেন, তাই এর আইনে পরিণত হওয়া আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব। ফলে, সেনেটের এই ভোটকে বর্তমানে মূলত প্রতীকী জয় হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার ওপর তদারকি পুনঃপ্রতিষ্ঠা
সেনেটে এই প্রস্তাব পাশ হওয়া ট্রাম্পের নির্বাহী বাণিজ্য ক্ষমতার (executive trade powers) উপর কংগ্রেসের তদারকি (oversight) পুনঃপ্রতিষ্ঠার চলমান প্রচেষ্টার সংকেত দেয়। দ্য হিল (The Hill) এবং পিবিএস (PBS)-এর বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ট্রাম্পের এই আগ্রাসী শুল্ক কৌশল আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে চাপের মুখে ফেলেছে এবং মার্কিন ভোক্তাদের ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে।