" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory নেপালে ঐতিহাসিক বাম ঐক্য: গঠিত হচ্ছে ‘নেপালি কমিউনিস্ট পার্টি’ Historic Left Unity in Nepal: Major Communist Parties Merge to Form 'Nepali Communist Party' //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

নেপালে ঐতিহাসিক বাম ঐক্য: গঠিত হচ্ছে ‘নেপালি কমিউনিস্ট পার্টি’ Historic Left Unity in Nepal: Major Communist Parties Merge to Form 'Nepali Communist Party'

 


কাঠমান্ডু, ৫ নভেম্বর, ২০২৫:

দীর্ঘ ও জটিল ইতিহাসের পর নেপালের বামপন্থী দলগুলো ফের এক ছাতার তলায় আসার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‘নেপালি কমিউনিস্ট পার্টি’ নামে একটি একক দল গঠনের জন্য দেশের আটটি প্রধান বাম শক্তি সম্প্রতি ১৮-দফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির ফলে সিপিএন (মাওবাদী কেন্দ্র), সিপিএন (ইউনিফায়েড সোশ্যালিস্ট), নেপাল সোশ্যালিস্ট পার্টি, সিপিএন (সোশ্যালিস্ট), জন সমাজবাদী পার্টি, নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী-সোশ্যালিস্ট) এবং সিপিএন (সাম্যবাদী)-সহ আরও কয়েকটি বামপন্থী উপদল একীভূত হতে চলেছে।

চুক্তিতে নতুন দলের পথপ্রদর্শক নীতি হিসেবে মার্কসবাদ-লেনিনবাদকে গ্রহণ করা হয়েছে। এর রাজনৈতিক কর্মসূচি হবে ‘নেপালি বৈশিষ্ট্যযুক্ত বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র’ অর্জন করা। নেতারা জোর দিয়েছেন যে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের লক্ষ্য অর্জনের জন্য এবং দেশের গণতান্ত্রিক অর্জনগুলো রক্ষা করার জন্য বৃহত্তর কমিউনিস্ট আন্দোলনের এই ঐক্য একটি ঐতিহাসিক প্রয়োজন। নতুন দল অঙ্গীকার করেছে, ফেডারেল গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের অর্জন, জাতীয় সার্বভৌমত্ব, সুশাসন এবং সামাজিক ন্যায়বিচারকে তারা রক্ষা করবে। এই আন্দোলন শান্তিপূর্ণ উপায়ে, সংসদ, সরকার এবং প্রয়োজন অনুসারে রাজপথেও পরিচালিত হবে।

চুক্তি অনুসারে, ৫ নভেম্বর, একটি জাতীয় ঐক্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন দলটির নাম ঘোষণা, একটি অন্তর্বর্তীকালীন গঠনতন্ত্র এবং ইশতেহার গ্রহণ করা হবে এবং কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হবে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে একটি জাতীয় ঐক্য সম্মেলনের মাধ্যমে দলের কাঠামো চূড়ান্ত করা হবে। নতুন দলটি নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে পাঁচ-কোণা তারা (Five-pointed Star) ব্যবহার করতে সম্মত হয়েছে।

নেপালের কমিউনিস্ট আন্দোলনের ঐতিহাসিক পটভূমি

নেপালের কমিউনিস্ট আন্দোলনের ইতিহাস দেশের রাজনৈতিক বিবর্তনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। ১৯৪৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর, পুষ্প লাল শ্রেষ্ঠ-এর হাতে কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল (সিপিএন) প্রতিষ্ঠিত হয়, যাকে ‘নেপালি কমিউনিজমের জনক’ বলা হয়। দলটি প্রথম দিকে স্বৈরাচারী রানা শাসন, সামন্তবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। তবে, ১৯৬০-এর দশকে রাজা মহেন্দ্রের রাজকীয় অভ্যুত্থানের পর দলটি নিষিদ্ধ হয় এবং বিভিন্ন উপদলে বিভক্ত হয়ে মাটির নিচে কাজ করতে বাধ্য হয়।

পরবর্তী দশকগুলোতে কমিউনিস্ট আন্দোলন সশস্ত্র সংগ্রাম থেকে সংসদীয় রাজনীতি—বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বহু ভাগে বিভক্ত হয়েছে। ১৯৯৬ সালে শুরু হওয়া মাওবাদী বিদ্রোহ ছিল সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। সিপিএন (মাওবাদী)-এর নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই বিদ্রোহের লক্ষ্য ছিল রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে একটি জনগণের প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা, যা শেষ পর্যন্ত নেপালের রাজতন্ত্র বিলুপ্ত এবং ফেডারেল গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বাম ঐক্য প্রতিষ্ঠার সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টাটি ছিল ২০১৮ সালে। সেই সময় দেশের বৃহত্তম দুটি কমিউনিস্ট দল—সিপিএন (ইউনিফায়েড মার্কসিস্ট-লেনিনিস্ট) এবং সিপিএন (মাওবাদী কেন্দ্র) একীভূত হয়ে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (এনসিপি) গঠন করেছিল। রাজনৈতিকভাবে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ এটি সংসদে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতাসম্পন্ন একটি প্রভাবশালী বাম শক্তি তৈরি করেছিল। তবে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সেই ঐক্যও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বর্তমানের ১৮-দফা চুক্তি নেপালের বামপন্থী রাজনীতিতে সেই বারবার ফিরে আসা ঐক্যের প্রয়োজনীয়তাকেই নতুন করে তুলে ধরছে।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies