🏜️ শিলাবতীর কান্না নাকি মাটির মহাকাব্য? বাংলার 'গণগনি' এক বিষাদমাখা সৌন্দর্যের হাতছানি

 

---

নিজস্ব প্রতিবেদন, মেদিনীপুর: শহরের ইট-কাঠ-পাথরের খাঁচায় যখন দম বন্ধ হয়ে আসে, যখন যান্ত্রিকতার কোলাহলে আমরা হারিয়ে ফেলি আমাদের শৈশব— তখন বারবার মনে পড়ে সেই লাল মাটির পথ। সেই মাটির বুক চিরে বয়ে যাওয়া শিলাবতী নদী, আর তার পাড়েই দাঁড়িয়ে থাকা এক অদ্ভুত বিষাদমাখা স্থাপত্য— গণগনি। একে কেউ বলেন 'বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন', আবার কেউ বলেন প্রকৃতির নিজ হাতে গড়া এক মহাকাব্য।

🍂 কেন এই নির্জনতা আমাদের টানে?

গণগনি কোনো সাজানো বাগান নয়, বরং হাজার হাজার বছরের রোদ, বৃষ্টি আর বাতাসের অবহেলার এক দীর্ঘ ইতিহাস। মাটির ক্ষয়ে তৈরি হওয়া সেই গভীর গিরিখাতগুলো দেখলে মনে হয়, ধরিত্রী বুঝি তার হৃদয়ের সব না বলা কথা এই লাল মাটির খাজে খাজে লিখে রেখেছেন।

• আলো-আঁধারির খেলা: যখন ভোরের প্রথম আলো এই লাল পাথরের গায়ে এসে পড়ে, কিংবা গোধূলির বিদায়বেলায় সূর্য যখন রক্তিম আভা ছড়িয়ে দেয়, তখন মনে হয় পৃথিবীটা বুঝি কোনো এক বিষণ্ণ শিল্পীর ক্যানভাস।

• শান্তির খোঁজে: শিলাবতী নদীর পাড়ে যখন হাওয়া বয়, সেই শব্দে অন্য কোনো জগত শোনা যায়। সেখানে নেই কোনো ট্র্যাফিকের হর্ন, নেই কোনো তাড়া— আছে শুধু নিজেকে খুঁজে পাওয়ার এক পরম মুহূর্ত।

---

📍 গন্তব্যের দিশা:

পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা স্টেশনে নেমে মাত্র ১৫-২০ মিনিটের পথ। হাওড়া বা শালিমার থেকে 'আরণ্যক' বা 'রূপসী বাংলা'য় চেপে যখন জানালা দিয়ে লাল মাটি দেখা শুরু হয়, তখনই শুরু হয়ে যায় হৃদয়ের স্পন্দন।

💡 আপনার জন্য কিছু সজল অনুরোধ:

১. প্রকৃতির এই নগ্ন সৌন্দর্যকে সম্মান করুন। যেখানে সেখানে আবর্জনা ফেলে এই পবিত্র ভূমিকে কলঙ্কিত করবেন না।

২. খাড়া গিরিখাতে নামার সময় নিজের শরীরের ভার যেমন সামলাবেন, ঠিক তেমনই প্রকৃতির এই সূক্ষ্ম কাজগুলোকেও আলতোভাবে ছুঁয়ে দেখবেন।

গণগনি শুধু ভ্রমণের জায়গা নয়, গণগনি হলো এক টুকরো শান্তি। যদি কোনোদিন মনে হয় নিজের সাথে নিজের কথা বলা হয়নি অনেকদিন, তবে একবার ঘুরে আসুন এই লাল মাটির বাঁকে। শিলাবতী নদীর জল আপনাকে বলে দেবে, বেঁচে থাকার নামই হলো বহমানতা।

#Gangani #GrandCanyonOfBengal #EmotionalTravel #BengaliHeritage #NatureSoul #ShilabatiRiver #গড়বেতা #গণগনি

---