চলতি বছরে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই বর্ষা ঢুকেছে উত্তরবঙ্গে। একটানা ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। অতিভারী বৃষ্টির জেরে ভাসছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি। বুধবার জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। যদিও হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস এই জেলাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে শুক্রবার থেকে। ভুটান পাহাড়ের বৃষ্টির জেরে কার্যত ভাসছে উত্তরবঙ্গ।
কোথাও লাল আবার কোথাও হলুদ সতর্কতা জারি রয়েছে। তিস্তা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ায় জলস্তর বাড়তে পারে আশঙ্কা রয়েছে। সেচ দপ্তর সুত্রে খবর, বুধবার সকালে তিস্তা ব্যারেজ থেকে ১৫৫৮ কিউমেক জল ছাড়া হয়েছে। সেই কারণে জলস্তর আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাত থেকে তিস্তা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। একই সঙ্গে সংরক্ষিত এলাকায় জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। ক্রমশই জটিল হচ্ছে উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক বিপর্যয়। উত্তরবঙ্গে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে তিস্তা।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রবল প্রভাব পড়েছে মালদহ এবং দুই দিনাজপুরেও। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী এই দুর্যোগ কাটার কোনও সম্ভাবনা নেই আগামী দুদিনেও।
সোমবার গভীর রাত থেকে মঙ্গলবার সারাদিন প্রবল বৃষ্টি হয়েছে শিলিগুড়ি শহর সংলগ্ন এলাকায়। যার ফলে একাধিক এলাকা প্লাবিত। অবিরাম বৃষ্টিতে শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশন এর বিভিন্ন এলাকা সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল ও মহকুমার গ্রামাঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। পাহাড়ে ভারী বৃষ্টির ফলে শহর শিলিগুড়ির মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া মহানন্দাতেও জলস্ফীতি অনেকটাই বেড়ে গেছে। পাশাপাশি শহর ও মহকুমার নদীগুলো ফুলে-ফেঁপে উঠতে শুরু করেছে। প্রবল বর্ষণে ফের সেবক পাহাড়ে ধ্বস নেমেছে। ধ্বস নেমেছে সেবক করোনেশন সেতু সংলগ্ন এলাকায়, কালিঝোরা, কার্শিয়াং এর পাগলাঝোড়াতে। ধ্বসে পাহাড়ি রাস্তা বিপদজনক হয়ে পড়েছে। অতি ভারী বর্ষণে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে বিমান পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে।
একাধিক বিমান বাতিল হয়ে যাওয়ায় বিমান যাত্রীরা সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। পাহাড় থেকে নেমে আসা বৃষ্টির জলের তীব্র স্রোতে নদীগুলি ভরে গিয়েছে। তিস্তা, কালিন্দি, জলঢাকা নদীগুলিতে জল বিস্তৃর্ণ এলাকা জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। তার মধ্যেই বুধবার থেকে জলপাইগুড়িতে ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাতের সতর্কতা রয়েছে। ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে। দার্জিলিং, কালিম্পং, উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের খবর, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং, দার্জিলিং জেলায় শুক্রবার থেকে বৃষ্টি আরো বৃদ্ধির সম্ভবান রয়েছে। সেই সঙ্গে পাহাড়ি এলাকায় ধস নামার সম্ভাবনাও রয়েছে।


