" " //psuftoum.com/4/5191039 Live Web Directory ১১ বছরের দুঃস্বপ্ন শেষে মুক্তি: ফাঁসির দড়ি থেকে ফিরে এলো তিনটি জীবন, ন্যায়বিচারের কণ্ঠস্বর আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় Lawyer Jayanta Narayan Chatterjee: A Voice for Justice, Securing Freedom After 11 Years of Ordeal //whairtoa.com/4/5181814
Type Here to Get Search Results !

১১ বছরের দুঃস্বপ্ন শেষে মুক্তি: ফাঁসির দড়ি থেকে ফিরে এলো তিনটি জীবন, ন্যায়বিচারের কণ্ঠস্বর আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় Lawyer Jayanta Narayan Chatterjee: A Voice for Justice, Securing Freedom After 11 Years of Ordeal

 


দুর্গাপুর, ১৮ জুলাই, ২০২৫: ১১টি দীর্ঘ, যন্ত্রণাময় বছর! প্রতিটি মুহূর্তে মৃত্যুর হিমশীতল স্পর্শকে অনুভব করে, নির্দোষ হয়েও ফাঁসির দড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তিনটি জীবন আজ মুক্তি পেলো। কলকাতা হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে আজ বেকসুর খালাস হলেন সুরজিৎ দেব, তাঁর বান্ধবী লিপিকা পোদ্দার এবং সঞ্জয় বিশ্বাস। এই রায় শুধু একটা বিচারিক সিদ্ধান্ত নয়, এটা অদম্য বিশ্বাস, অবিচল লড়াই আর মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যার নেপথ্যে ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রখ্যাত আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়


এক আকুতি থেকে শুরু এক আইনজীবীর কঠিন লড়াই

গল্পটা শুরু হয়েছিল কয়েকদিন আগে, যখন এক অল্পবয়সী মেয়ে আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে এলেন। তাঁর চোখে ছিল গভীর বেদনা আর এক অদম্য আকুতি। তিনি জানালেন, তাঁর বাবা মা'কে খুন করার দায়ে ফাঁসির সাজা পেয়েছেন। এই কথা শুনে বিস্মিত হন আইনজীবী চট্টোপাধ্যায়। মেয়েটি জানায়, সে গত এগারো বছর ধরে তার জ্যেঠুর কাছে থাকে এবং তার বাবার নির্দোষিতা প্রমাণ করার জন্য আকুল আবেদন জানায়। তার কথায় এক অদ্ভুত সততা ছিল, বাবার জীবন বাঁচানোর এক তীব্র আকাঙ্ক্ষা আইনজীবী অনুভব করেন। এর আগে আমেরিকান সেন্টার অ্যাটাক মামলায় তিনজন নিরপরাধ মানুষকে ফাঁসির সাজা থেকে মুক্ত করার অভিজ্ঞতা থাকলেও, এই ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জটা ছিল আরও বড়।

আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় তার টিমের আইনজীবীদের সাথে আলোচনা করেন এই কঠিন মামলা হাতে নেওয়া উচিত হবে কিনা। কিন্তু সেই মেয়েটির চোখে দেখা বিশ্বাস তাদের সবাইকে একসাথে লড়তে রাজি করায়। শুরু হয় এক অসম লড়াই। মামলার নথি গভীরভাবে পরীক্ষা করে দেখা যায়, পুলিশের তদন্তে অসংখ্য ফাঁক আর গাফিলতি রয়ে গেছে। অবশেষে, আইনজীবী চট্টোপাধ্যায় এবং তার জুনিয়ররা এই লড়াইতে নামার সিদ্ধান্ত নেন।


সেই ভয়ংকর দিন: এক বীভৎস আবিষ্কার

ঘটনাটি ছিল ২০১৪ সালের ২০শে মে-এর। বিকেলে শিয়ালদহ রেলওয়ে স্টেশনের পার্কিং লটে একটি দড়িতে বাঁধা লেপ, একটি বড় ট্রলি ব্যাগ আর একটি স্কুল ব্যাগ বেওয়ারিশ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। কর্তব্যরত জিআরপিএফ কর্মীরা স্টেশনের থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে যখন সেই লেপ, ট্রলি ব্যাগ আর স্কুল ব্যাগের মধ্যে একজন মহিলার খণ্ড-বিখণ্ড মৃতদেহ আবিষ্কার করে, তখন শিউরে ওঠে সবাই। তদন্তে জানা যায়, মৃতদেহটি জয়ন্তী দেব নামে এক মহিলার। আরও জানা যায়, তাঁর স্বামী সুরজিৎ দেবের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের বিবাদ ছিল, তাঁরা আলাদা থাকতেন। পুলিশ দ্রুত জয়ন্তী দেবের স্বামী সুরজিৎ দেব, একজন মহিলা (লিপিকা পোদ্দার) এবং একজন পুরুষকে (সঞ্জয় বিশ্বাস) গ্রেপ্তার করে। এরপর, শিয়ালদহ এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জজ, ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্ট এই তিনজনকেই ফাঁসির সাজা শোনায়।


১১ বছরের অসহ্য অপেক্ষা, আজ মুক্তি

এই কয়েকদিন আগেই কলকাতা হাইকোর্টে আপিলের শুনানি হয়। আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়, মূল অভিযুক্ত সুরজিৎ দেবের হয়ে মামলা লড়েন। আজ, মহামান্য বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শব্বার রশিদী-এর ডিভিশন বেঞ্চ তিন আসামি - সুরজিৎ দেব, তাঁর বান্ধবী লিপিকা পোদ্দার, এবং সঞ্জয় বিশ্বাসকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করেন। তাঁদের রায়ে বিচারকরা স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, তদন্তকারী পুলিশ কর্মীরা তাঁদের তদন্ত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতেই পারেননি। তাঁদের এই ত্রুটিপূর্ণ তদন্তের ভিত্তিতে এই তিনজন মানুষকে কোনোভাবেই দোষী বলা যায় না।

এই রায়ের পর আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, "আজকের তদন্তকারী দলগুলো কি সঠিক, নিরপেক্ষ তদন্ত করতে পারে না? স্ত্রী'র অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে স্বামীকেই ধরবে, আর স্বামীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে স্ত্রী'কেই! যেন সব সময় একটা 'কাট শর্ট মেথড' প্রয়োগ করা হয়।" তিনি আরও যোগ করেন, "একবার ভাবুন, সুরজিৎ দেবের যদি ফাঁসি হয়ে যেতো? পুলিশের এই অপদার্থতার জন্য তিনটি নির্দোষ জীবন শেষ হয়ে যেতো! কিন্তু আজ, মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের পুঙ্খানুপুঙ্খ নথি বিশ্লেষণেই এই তিনটি মানুষের প্রাণ বাঁচলো।" তিনি সমাজিক হেনস্থা ও অপমানের শিকার হওয়া এই পরিবারগুলোর কষ্টের কথাও তুলে ধরেন।

এগারোটা বছর! এই তিনটি মানুষ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর অপেক্ষা করেছেন, কোনো অপরাধ না করেই! অন্যের করা অপরাধের বোঝা তাঁরা এতদিন বয়ে বেড়িয়েছেন। কে ফিরিয়ে দেবে তাঁদের এই হারিয়ে যাওয়া এগারোটা বছর? কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তের যন্ত্রণা? এই প্রশ্নগুলোই যেন আজ বিচার ব্যবস্থার কাছে বড় হয়ে উঠেছে।

(সুরজিৎ দেবের বড় দাদা, যিনি প্রতিদিন হাইকোর্টে এসে মামলার রায়ের জন্য অপেক্ষা করতেন, আজ ভাইয়ের বেকসুর খালাস হওয়ার খবর শুনে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। তাঁর সেই আবেগঘন মুহূর্তে আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় ও তার দল তাঁকে সঙ্গে নিয়ে ছবি তুলেছেন।)



আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়: ন্যায়বিচারের অদম্য কণ্ঠস্বর


এই আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনায় প্রধান ভূমিকা পালনকারী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় (Jayanta Narayan Chatterjee), কলকাতা হাইকোর্টে ফৌজদারি মামলার একজন সুপরিচিত আইনজীবী। অনেকে হয়তো "Confession of Jayanta Narayan Chatterjee" (জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের স্বীকারোক্তি) শব্দটি ব্যবহার করছেন, তবে একজন আইনজীবী হিসেবে তিনি কোনো অপরাধের "স্বীকারোক্তি" দেননি। বরং, তিনি তার মক্কেলদের পক্ষে আদালতে শক্তিশালী সওয়াল করেছেন এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

এই মামলার প্রেক্ষাপটে, তিনি তার মক্কেলদের নির্দোষিতা প্রমাণ করতে পুলিশি তদন্তের ত্রুটিপূর্ণ দিকগুলো অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তুলে ধরেছেন। রায়ের পর সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া তার মন্তব্য তার পেশাদারিত্ব এবং মানবিকতারই প্রতিফলন: "আমার মক্কেল ১১ বছর ধরে অপরাধী হিসেবে সমাজের চোখে অপমান সহ্য করেছেন, জীবনের মূল্যবান সময় কেটে গেছে জেলে। আজ প্রশ্ন উঠছে, কে ফিরিয়ে দেবে তাঁর এই এগারোটি বছর?" এই উক্তিটি তার মক্কেলের প্রতি গভীর সহানুভূতি এবং বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা ও পুলিশি তদন্তের গাফিলতি নিয়ে তার হতাশা স্পষ্ট করে। এটি কোনো অপরাধমূলক স্বীকারোক্তি নয়, বরং একজন বিচক্ষণ আইনজীবীর তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ এবং পেশাদারী মন্তব্য।

সংক্ষেপে, জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় কোনো স্বীকারোক্তি দেননি। তিনি একজন আইনজীবী এবং তিনি তার মক্কেলদের পক্ষে সফলভাবে লড়াই করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তার এই জয় শুধু আইনি সাফল্য নয়, বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার এক বড় অনুপ্রেরণা।

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies