পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে ফের এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের বিভীষিকার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার দুর্গাপুরে একই ধরনের নৃশংসতার শিকার হলেন এক মেডিক্যাল ছাত্রী। শুক্রবার রাতে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও আইকিউ সিটি হাসপাতালের ক্যাম্পাসের কাছে দ্বিতীয় বর্ষের এক এমবিবিএস ছাত্রী নৃশংসভাবে ধর্ষিত হয়েছেন।
ওডিশার জলেশ্বর এলাকার ওই ছাত্রী তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে নৈশভোজের জন্য বেরিয়েছিলেন। এই সময়েই তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে পাশবিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনার বিস্তারিত তথ্য
স্থানের বিবরণ: ঘটনাটি ঘটে দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে, যা আইকিউ সিটি হাসপাতালের কাছেই।
আক্রমণের ধরন: রাত প্রায় ১০টা নাগাদ ছাত্রীটিকে একটি নির্জন এলাকায় টেনে নিয়ে গিয়ে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা ধর্ষণ করে।
লুঠ ও মুক্তিপণ: ধর্ষণের পর তাঁর মোবাইল ফোনটিও ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং তা ফেরত দেওয়ার জন্য তাঁর পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
আহত ছাত্রী: ঘটনার পর নির্যাতিতা ছাত্রীটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।
পরিবার ও ছাত্র সমাজের ক্ষোভ
ছাত্রীর বাবা কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তার গাফিলতি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ঘটনা জানার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত সাড়া দিতে ব্যর্থ হয়। তিনি দ্রুত সুবিচারের দাবি জানিয়েছেন, যাতে শিক্ষাঙ্গনে এমন ঘটনা আর না ঘটে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই দুর্গাপুরের বিভিন্ন বামপন্থী দল এবং ছাত্র সংগঠনগুলি তীব্র বিক্ষোভ শুরু করেছে। আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটি তুলে ধরে অবিলম্বে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
আর জি কর কাণ্ডের ছায়া
মাত্র কয়েক মাস আগে কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে এক জুনিয়র ডাক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় হয়েছিল। সেই ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গের হাসপাতাল ও শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র ও চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছিল। দুর্গাপুরের এই ঘটনা সেই ভয়াবহ স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে এবং রাজ্যের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলিতে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিকে আরও জোরালো করেছে।
পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ক্যাম্পাসের কর্মী এবং নির্যাতিতার সঙ্গে থাকা বন্ধুটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটিগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার বা কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।